Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Jammu and Kashmir

ট্রাম্পের সফরের আগে কাশ্মীর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মার্কিন সেনেটররা

দুই ডেমোক্র্যাট ও দুই রিপাবলিকান সেনেটর পম্পেয়োকে এই চিঠি দিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত লিনজি গ্রাহাম।

কাশ্মীর ইস্যুতে অস্বস্তি বাড়ল ভারতের।—ফাইল চিত্র।

কাশ্মীর ইস্যুতে অস্বস্তি বাড়ল ভারতের।—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:২৮
Share: Save:

বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর ছ’মাস কাটতে চললও, এখনও গোটা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন কাশ্মীর উপত্যকা। বন্দিদশায় দিন কাটছে উপত্যকার প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রীর। তা নিয়ে এক বার ফের উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মার্কিন সেনেটররা। আগামী সপ্তাহে দু’দিনের ভারত সফরে আসছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়োকে চিঠি দিয়ে খোলাখুলি নিজেদের উদ্বেগের কথা জানালেন তাঁরা।

দুই ডেমোক্র্যাট ও দুই রিপাবলিকান সেনেটর পম্পেয়োকে এই চিঠি দিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত লিনজি গ্রাহাম। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘এখনও পর্যন্ত উপত্যকার অধিকাংশ জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছে ভারত সরকার। বিশ্বের আর কোনও গণতন্ত্রে এত দিন পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নজির নেই। এতে ৭০ লক্ষ মানুষের জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসা পরিবেষা, মার খাচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থাও।’’

দীর্ঘ ছ’মাস ধরে কাশ্মীরকে এ ভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখার ফলাফল মারাত্মক হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন মার্কিন সেনেটররা। তাঁরা বলেন, ‘‘বিশিষ্ট রাজনীতিক-সহ নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে শত শত কাশ্মীরিকে আটক করে রাখা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলাফল মারাত্মক হতে পারে।’’

আরও পড়ুন: ওয়েবসাইট-সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে হবে প্রার্থীর অপরাধের রেকর্ড: সুপ্রিম কোর্ট​

বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর রাজনৈতিক কারণে কাশ্মীরে ঠিক কতজনকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যোগাযোগের মাধ্যমগুলি কতটা সক্রিয়, স্বাধীন পর্যবেক্ষক, কূটনীতিক এবং বিদেশি সাংবাদিকরা আদৌ সব জায়গায় যেতে পারছেন কি না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ওই সেনেটররা।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে দেশের অন্দরেই সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। তার মধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তা নিয়ে সম্প্রতি ভারতের সমালোচনায় সরব হন মার্কিন বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের তদারকি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস। মোদী সরকারের নয়া আইন ভারতের ২০ কোটি মুসলিম নাগরিকের সার্বিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন কংগ্রেসের থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)-ও।

বিদেশ সচিবকে দেওয়া সেনেটরদের চিঠিতেও তা প্রতিফলিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত সরকার আরও এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে, যাতে একটি বিশেষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার খর্ব হতে পারে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরিত্রও খোয়াতে পারে ভারত। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সেই পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্যতম।’’ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হলে ঠিক কত জন মানুষ রাষ্ট্রহারা হতে পারেন এবং জাতীয় নাগিরক পঞ্জি (এনআরসি)চালু হলে কত মানুষ প্রভাবিত হবেন, সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও তৈরি করতে আ্জি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে।

আরও পড়ুন: বাদুড়িয়ায় ‘কলেজ’ খুলে প্রশিক্ষণ, প্রৌঢ়দের ‘বাংলা গ্যাং’ ত্রাস পূর্ব উপকূলের ট্রেনে ​

কাশ্মীরের পরিস্থিতি কতটা স্বাভাবিক, এই মুহূর্তে দ্বিতীয় দফায় উপত্যকায় এসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য-সহ একিট আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল। সে দিকে নজর রয়েছে মার্কিন সরকারেরও। সেই সঙ্গে সিএএ বিরোধী আন্দোলনেও নজর রাখছে তারা। সেই পরিস্থিতিতেই ভারতে আশছেন ট্রাম্প। তার মধ্যে এই চিঠিতে ভারতের অস্বস্তি বাড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jammu And Kashmir US Donald Trump Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE