সৌন্দর্যের কোনও সংজ্ঞা হয় না। এ কথা বিশ্বাস করা সত্ত্বেও অনেকেরই নিজের দেহের গঠন নিয়ে নানা ধরনের আপত্তি থাকে। শরীরের কোনও কোনও অংশে মেদ বেশি জমে অনেকেরই। তা নিয়ে অসুবিধা তৈরি হলে সেই অংশগুলির আলাদা ব্যায়াম হয়। নির্দিষ্ট অংশের মেদ ঝরানোকে ইংরেজি ভাষায় বলে ‘স্পট রিডাকশন’। অনেকেই মনে করেন, এতে কাজ হয় না। সামগ্রিক ভাবে মেদ না ঝরালে উপকার হয় না। তবে তা সঠিক নয়। বেছে বেছে শরীরের অংশের মেদ কমানো সম্ভব।
যেমন, কারও কারও বাহু মেদের ভারে ঝুলে থাকে। আর তা নিয়ে বিব্রত বোধ করেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই। হাতকাটা পোশাক পরার ক্ষেত্রে স্বচ্ছন্দ হতে পারেন না। তাই এখানে ৫টি ব্যায়াম দেওয়া হল, যা অনুশীলন করলে হাত দু’টি টোনড হতে পারে। জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, দরকার নেই প্রচুর সরঞ্জামের। বাড়িতেই সহজে অভ্যাস করা যায় এগুলি।
আরও পড়ুন:
১. পুশ-আপ: হাত, ছাতি, কাঁধের গঠনে সামঞ্জস্য আনার জন্য উপযুক্ত ব্যায়াম পুশ-আপ। পেশির শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরের উর্ধাঙ্গের মেদ ঝরানোয় কার্যকরী। কোনও সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। কেবল সমতলের সঙ্গে সমান্তরালে থেকে শরীরের ওঠানামা চালিয়ে যেতে হবে। শরীরের ওজনের ভারসাম্য থাকবে দুই হাতের উপর। ১০ থেকে ১২ বারের এক একটি সেট হিসেবে করা উচিত। পুশ-আপে একই সঙ্গে পেটের মেদও কমে।
পুশ-আপ ছবি: সংগৃহীত।
২. প্ল্যাঙ্ক: পুশ-আপের সঙ্গে প্ল্যাঙ্কের মিল থাকলেও ব্যায়ামটি কিন্তু আলাদা। প্ল্যাঙ্কে নিতম্বকে শরীরের অন্য অংশের তুলনায় একটু উপরের দিকে তুলতে হয়। পুশ-আপে শরীর ওঠানামা করে। কিন্তু প্ল্যাঙ্কে হাতের উপর ভর দিয়ে স্থির থাকতে হয়। আর পুশ-আপে হাতের তালুতে ভর থাকে। কিন্তু প্ল্যাঙ্কে হাতের কনুই থেকে আঙুলের ডগা পর্যন্ত মাটিতে ভর দিয়ে রাখতে হয়। পায়ের ভর থাকে পায়ের আঙুলের ডগায়। এটিও ১০ থেকে ১২ বারের সেটে তিন বার করুন। পেটের মেদ ঝরানোর জন্যেও প্ল্যাঙ্ক করা উচিত।
প্ল্যাঙ্ক ছবি: সংগৃহীত।
৩. হাত ঘোরানো: সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম বলে উপেক্ষা করা উচিত নয়। দু’পাশে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হাতের মেদ ঝরানো সম্ভব। হাত দু’টিকে দু’পাশে সোজা তুলে দিন। তার পর কাঁধের উচ্চতা থেকে নীচ পর্যন্ত গোল গোল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যায়ামটি করুন। ঘড়ির কাঁটার দিকে ৩০ বার ঘুরিয়ে, বিপরীত দিকে ৩০ বার ঘুরিয়ে নিন। এতে হাতের মাংসপেশি শক্ত হয় এবং ওই অংশে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়।
হাত ঘোরানো ছবি: সংগৃহীত।
৪. ভারোত্তোলন: ভারোত্তোলনে হাতের পেশি মজবুত হয় এবং মেদ ঝরে টোনড হয়ে যায় হাত দু’টি। জিমে যাওয়া দরকার নেই ভারোত্তোলনের জন্য। বাড়িতেই ডাম্বেল কিনে নিতে পারেন অথবা ভারী জলের বোতল দিয়েও অনুশীলন করা যায়। সোজাসুজি দাঁড়িয়ে হাত দু’টিকে কাঁধের কাছাকাছি নিয়ে আসতে হবে। ডাম্বেল হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে কনুই ভাঁজ করে উপরের দিকে তুলে আবার নীচে নামিয়ে দিতে হবে। ১২-১৫ বারের সেট ২-৩ বার করতে হবে।
ভারোত্তোলন ছবি: সংগৃহীত।
৫. ট্রাইসেপ ডিপস: এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন কেবল একটি চেয়ার অথবা বেঞ্চের। দেখবেন, যেন নড়াচড়া না করে সেটি। চেয়ার বা বেঞ্চের একদম ধারে বসতে হবে। নিতম্বের ঠিক পাশে হাত দু’টিকে রাখতে হবে। ধীরে ধীরে চেয়ার থেকে নিতম্বকে নীচের দিকে নামিয়ে দিতে হবে। হাতের ভরে ধীরে ধীরে নীচের দিকে নামতে হবে, আবার হাতের ভরেই বেঞ্চের সমান সমান উঠতে হবে। নিতম্ব যেন বেঞ্চ বা চেয়ারের সঙ্গে সংস্পর্শে থাকে। ১০ থেকে ১২ বারের সেট করতে পারেন। শুরুর দিকে বিরতি নিয়ে নিয়ে তিন বারে সেটটি সম্পূর্ণ করা যায়। পারদর্শী হয়ে উঠলে সেটের পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।
ট্রাইসেপ ডিপস ছবি: সংগৃহীত।