দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীপুজো, দীপাবলি, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো— পর পর উৎসব। আনন্দ-অনুষ্ঠান মানেই সাজগোজ। আর এতেই কি নিঃশব্দে চুলের ক্ষতি হচ্ছে?
কেশসজ্জা শিল্পীরা বলেন, উৎসবের আবহে যেমন জল-পুষ্টিকর খাবার বাদ পড়ে, তেমনই চুলের অযত্নও হয়। তার উপর কেশসজ্জা করতে গিয়ে সমস্যা বাড়ে।
অনুষ্ঠান-সাজগোজ দুই-ই থাকবে। তবে চুল বাঁচাতে হবে ক্ষতি হওয়া থেকে। না হলে, উৎসব মিটতেই গোছা গোছা চুল ঝরবে।
ভুল এবং সমাধান
১। পুজো-পার্বণে নানা রকম ব্রত, উপোস চলে। তা ছাড়া ঠাকুর দেখা, অতিথি আপ্যায়নের ফাঁকে জল খাওয়া কম হয়। খাওয়া-দাওয়ার ঠিকঠিকানাও থাকে না। তার প্রভাবই পড়ে চুলে।
আরও পড়ুন:
যে কোনও সময়েই নিয়ম করে জল খাওয়া দরকার। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় টাটকা রসালো ফল, শরবত, স্যুপ— রাখলে জলের অভাব মিটবে। খেতে পারেন ডিটক্স পানীয়ও।
২। রূপটান নিখুঁত হলেও কেশসজ্জার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কেশসজ্জা করতে গিয়ে এখন হেয়ার স্ট্রেটনার, কার্লার-সহ বৈদ্যুতিক যন্ত্র প্রায়ই ব্যবহার হয়। সুবিধা হল, এই যন্ত্র কিনে যে কেউ নিজেই ব্যবহার করতে পারেন। অতিরিক্ত তাপে চুল সোজা বা কোঁকড়া করার যন্ত্র চুলের প্রোটিন নষ্ট করে দেয়। ফলে চুল রুক্ষ হয়ে পড়ে, ডগা ফেটে যায়, গোড়া আলগা হয়ে ঝরতেও পারে।
চেষ্টা করা প্রয়োজন যন্ত্রের ব্যবহার যথা সম্ভব এড়িয়ে বিকল্প কোনও কেশসজ্জা করার। একান্তই তা ব্যবহার করতে হলে তাপ নিরোধক স্প্রে ব্যবহার করা জরুরি।
৩। উৎসব অনুষ্ঠান নাচগান, হইহুল্লোড়ের পর চুল ধোয়া খুব জরুরি। মাথার ত্বকে ঘাম, ধুলো-ময়লা জমলে চুল ঝরে যেতে পারে। তাই সারা দিন ঘোরাঘুরি হলে বা কেশসজ্জায় রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার হলে অবশ্যই শ্যাম্পু করা দরকার। শ্যাম্পু যেন সালফেটমুক্ত হয়।
৪। সারা দিন ঘোরাঘুরির পরে বা উৎসবে কাজের ধকল সামলে রাতে আর চুল আঁচড়ানোর কথা মনে থাকে না। মনে হয়, কত ক্ষণে বিছানায় গিয়ে শোয়া যায়। এটিও কিন্তু ক্ষতিকর। কেশচর্চা শিল্পীরা বলছেন, রাতে যেমন ত্বকের যত্ন জরুরি, তেমনই চুলের। জট ছাড়িয়ে ভাল করে চুল আঁচড়ে শোয়া দরকার।
৫। ঘন ঘন রং করা, সেটিং স্প্রের মতো রাসায়নিক কেশসজ্জায় ব্যবহারের প্রবণতাও সমস্যা তৈরি করে। রং করানো হলে বা স্থায়ী ভাবে চুলে সোজা করলে— চুলের সঠিক পরিচর্যা দরকার হয়। স্পা, তেল মাসাজ— চুল ভাল রাখে। চুল বেশি ঝরলে বা অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে গেলে পেশাদার কারও বা চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া দরকার।