এক বিদেশি পর্যটনের বিজ্ঞাপনে অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের পোশাক নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। বিজ্ঞাপনটি আবু ধাবির। তার নানা দৃশ্যে দীপিকাকে দেখা গিয়েছে স্বামী রণবীর সিংহের সঙ্গে আবু ধাবির দ্রষ্টব্য স্থানে ঘুরে বেড়াতে। তার মধ্যে কয়েকটি দৃশ্যে লাল রঙের একটি মাথা ঢাকা পোশাকও পরেছেন দীপিকা। যা দেখে ক্ষিপ্ত হয়েছেন তাঁর ভারতীয় ভক্তেরা।
দীপিকা যেটি পরেছেন সেটি আদপেই হিজাব নয়।
রাগের কারণ তাঁর পোশাক। যাকে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মহিলাদের হিজাবের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন প্রায় সকলেই। ইরানের হিজাব আন্দোলনের উল্লেখ করে তাঁদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, হিজাব না পরে কি ওই বিজ্ঞাপন করা যেত না। কেউ কেউ লিখেছেন, দীপিকা কি হিজাবেরও বিজ্ঞাপন করছেন? যেখানে মাথার চুল ঢেকে রাখার পোশাকবিধি এবং তার বাধ্যবাধকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন মুসলিম মহিলাদেরই একটা বড় অংশ, সেখানে দীপিকা কি হিজাবের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন? এ হেন বিতর্কের মুখে জানা গেল, দীপিকা যেটি পরেছেন সেটি আদপেই হিজাব নয়। তার নাম 'আবায়া'।
হিজাব পুরোদস্তুর কোনও পোশাক নয়। অন্য দিকে আবায়া একটি সম্পূর্ণ পোশাক।
হিজাব হল মাথা ঢাকার স্কার্ফের মতো একটি পরিধান। যা নানা রঙের হতে পারে। তাকে নানা ভাবে পরাও যেতে পারে। দীপিকাকে বিজ্ঞাপনে যে পোশাকটি পরে দেখা যাচ্ছে সেটি শুধু মাথা নয় সারা শরীর ঢেকে রেখেছে। ওই পোশাকে তাঁর মুখ, পায়ের পাতা আর হাতের তালু ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আর সেখানেই হিজাব আর আবায়ার মূলগত তফাত। হিজাব পুরোদস্তুর কোনও পোশাক নয়। অন্য দিকে আবায়া একটি সম্পূর্ণ পোশাক। যা মহিলাদের শরীরের গড়ন আড়াল করার জন্য পোশাকের উপর পরানো হয়।
ধর্মস্থানের নিয়ম অনুযায়ী দর্শনার্থীর শরীরের আদল স্পষ্ট বোঝা যায় এমন স্বচ্ছ কিংবা ফিটেড পোশাক পরা যায় না।
আবুধাবির একটি মসজিদ জ়ায়েদ গ্র্যান্ড মস্কে যেতে হলে দর্শনার্থী যে ধর্মেরই মহিলা হোন না কেন, তাঁকে ওই পোশাক পরতে হয়। একই ভাবে পুরুষ দর্শনার্থীদেরও পুরো পা ঢাকা পড়ে, এমন পোশাক পরতে হয়। এই ধর্মস্থানের নিয়ম অনুযায়ী মহিলা এবং পুরুষ কোনও দর্শনার্থীরই শরীরের আদল স্পষ্ট বোঝা যায়, এমন স্বচ্ছ কিংবা ফিটেড পোশাক পরা যায় না। দীপিকা সেই মসজিদে শুটিং করার সময়েই ওই আবায়া পরেছিলন। যা কোনও ভাবেই হিজাব নয়। বিতর্কের মুখে এমনই একটি বিবৃতি জারি করেছে আবু ধাবি পর্যটন কর্তৃপক্ষ। তবে তা দীপিকার হিজাব বিতর্কে শেষমেষ ইতি টানবে কি না, সে কথা সময়ই বলবে।