ত্বক এবং শরীর সুন্দর রাখার জন্য শুধু প্রসাধনী নয়, ইদানীং ব্যবহার হচ্ছে আরও অনেক কিছুরই। যেমন, মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে স্ক্যাল্প মাসাজার, মুখ টানটান রাখতে জ়েড রোলার। সেই তালিকায় রয়েছে ড্রাই ব্রাশও। দেখতে বেশ চওড়া একটি ব্রাশের মতো। কোনওটিতে লম্বা হাতল থাকে, কোনওটিতে থাকে না। এই ব্রাশ নিয়েই এখন চর্চা।
জিনিসটি কী, কোন কাজে লাগে?
ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য তৈরি এমন ব্রাশের চল নতুন নয়। তবে দিনে দিনে তার সম্পর্কে চর্চা বাড়ছে। তার ফলে অনেকে এই বিষয়ে কৌতূহলী হচ্ছেন। ব্রাশটি ব্যবহার করা হয় শুকনো শরীরে। তা দিয়ে আলতো করে সারা শরীরে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে মালিশ করতে হয়। একেই বলা হয় ড্রাই ব্রাশিং। ত্বকের চিকিৎসক বিদুষী জৈন জানাচ্ছেন, ড্রাই ব্রাশিং ত্বক সুন্দর এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। স্নানের আগে মিনিট ৫-১০ শরীরে ব্রাশ বুলিয়ে নেওয়ার অনেক উপকারিতা আছে। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে, সেলুলাইট কমাতে, মৃত কোষ সরাতে কার্যকর এটি।
উপকারিতা
১. আচমকা কেউ ওজনে ভারী হয়ে গেলে সেলুলাইটের সমস্যা দেখা যায়। এটি হল এক ধরনের ফ্যাট বা চর্বি। কারও হাঁটুতে, কারও কাঁধের সংযোগস্থলে কিছুটা স্ট্রেচ মার্কের মতো দাগ হয়। এই দাগ ত্বকের স্বাভাবিক মসৃণতা, সৌন্দর্য নষ্ট করে। নিয়মিত ব্রাশিং করলে এমন সমস্যা অনেকটাই কমানো যায়।
২. ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে এই পদ্ধতি। রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হলে কোষে কোষে সঠিক ভাবে অক্সিজেন পৌঁছোয়, যা ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
৩. স্ক্রাবার ব্যবহার করে মৃত কোষ সরিয়ে ফেলা যায়। তবে স্ক্রাবারের চেয়ে আরও ভাল ভাবে সেই কাজটি করতে সক্ষম এই ব্রাশ। ত্বকের ধরন স্পর্শকাতর হলে অনেক সময় প্রসাধনী বা স্ক্রাবার ব্যবহারে সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হতে পারে এতেই।
৪. মালিশের ফলে যেমন আরাম হয়, স্নায়ু শিথিল হয়ে যায়, ঠিক তেমন আরামই মেলে এতেও। আরও ভাল ফল পেতে শান্ত পরিবেশে বসে ব্রাশের ব্যবহার করতে পারেন।
৫. শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করতেও সাহায্য করে এই পদ্ধতি।
আরও পড়ুন:
সঠিক ব্যবহারবিধি
উপকারী বলে যে কোনও ব্রাশ দিয়েই ত্বকে ঘষাঘষি করা যাবে না। শরীরে ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট ড্রাই ব্রাশ পাওয়া যায়। এই ব্রাশগুলি নরম হয়, যাতে ঘষাঘষিতে ত্বকে আঁচড় না পড়ে।
প্রথমে ব্রাশ করা শুরু করতে হবে পায়ের পাতা থেকে। ব্রাশ ধীরে ধীরে পায়ের নীচে থেকে কোমর পর্যন্ত টানতে হবে। তবে উপর থেকে নীচে নামানো যাবে না। এই ভাবে বার কয়েক সেটি ব্যবহার করুন।
পায়ের পর তলপেট থেকে বুকে ব্রাশ টানুন। কোনও ভাবেই চাপ দেওয়া যাবে না। একই ভাবে হাতেও সেটি ব্যবহার করতে হবে। সব সময়ই ব্রাশ নীচ থেকে উপরের দিকেই উঠবে।
স্নানের আগে মিনিট ১০ ড্রাই ব্রাশিং করতে হবে। দিনে এক বার ব্যবহারই যথেষ্ট।
সতর্কতা
· নিয়মিত নয়, সপ্তাহে দু’বার এর ব্যবহার করলেই হবে।
· ত্বকে যদি কোনও ক্ষত থাকে বা চর্মরোগ হয়, তা হলে ব্রাশ করা ঠিক নয়।
· ব্রাশিংয়ের সময় বেশি চাপ দেওয়া যাবে না।