Advertisement
১৪ অক্টোবর ২০২৪
coronavirus

করোনা আবহে বেড়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভসঞ্চার, কী বলছেন চিকিৎসক?

করোনা আবহে গর্ভসঞ্চার নিয়ে সমীক্ষা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাতে উঠে এসেছে জরুরি তথ্য।

করোনা আবহে গর্ভসঞ্চারের পরিমাণ বেড়েছে সারা বিশ্বজুড়ে। ছবি:শাটারস্টক

করোনা আবহে গর্ভসঞ্চারের পরিমাণ বেড়েছে সারা বিশ্বজুড়ে। ছবি:শাটারস্টক

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:১৫
Share: Save:

করোনা যখন বেশ জাঁকিয়ে বসেছে, সাধারণ মানুষদের নিয়ে এক সমীক্ষা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। বিষয়, আনন্দ ও সামাজিকতার সব উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফল কীভাবে পড়তে পারে সমাজ ও ব্যক্তিজীবনে। তাতে উঠে এল নানা তথ্য। তার মধ্যে একটি হল গর্ভসঞ্চার সংক্রান্ত।

সেই সমীক্ষা বলছে, করোনা-পর্বে অবাঞ্ছিত মাতৃত্বের হার অসম্ভব বাড়বে। মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে জন্ম নেবে ১১ কোটি ৬০ লক্ষ শিশু। যার মধ্যে শুধু ভারতেই জন্মাবে দু-কোটির মতো। চিনে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ, নাইজিরিয়ায় ৬৪ লক্ষ, পাকিস্তানে ৫০ লক্ষ আর ইন্দোনেশিয়ায় ৪০ লক্ষ। আমেরিকাও ব্যতিক্রম নয়। সেখানে জন্মাবে ৩৩ লক্ষ শিশু।

‘জার্নাল অব সাইকোসোম্যাটিক অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি’ পত্রিকায় আবার অন্য রকমের এক গবেষণাপত্র ছাপা হয়। ইতালি-সহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে ১,৪৮২ জন নারী-পুরুষের উপরে সমীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেন, আর্থিক ও সামাজিক এই টালমাটালের সময় প্রায় ৮০ শতাংশ দম্পতি চাইছেন না এই মুহূর্তে সন্তান হোক।

আরও পড়ুন:‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠতে আর কত দিন, ভ্যাকসিনই বা কবে?

তা হলে কী দাঁড়াল ব্যাপারটা? ইউরোপ সন্তানধারণের বিপক্ষে আর বাকিরা পক্ষে? "না, ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। বেশির ভাগ মানুষই এই মুহূর্তে সন্তানধারণের বিপক্ষে। সেজন্য যে হারে গর্ভসঞ্চার হচ্ছে, গর্ভপাতের আবেদনও আসছে প্রায় সে হারেই। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, অধিকাংশ গর্ভসঞ্চারই অনাকাঙ্ক্ষিত," জানালেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ শঙ্করনাথ মিত্র।

তাহলে কেন এত গর্ভসঞ্চার

শঙ্করনাথ মিত্রর মত, এর কারণ অনেক। প্রথমত, লকডাউনের অবসরে বেশি ঘন ঘন কাছাকাছি এসেছেন অনেক দম্পতিই। তার মধ্যে আবার ওষুধের দোকান খোলা না-থাকায় বা বাইরে বেরনো যায়নি বলে গর্ভনিরোধক কিনতে পারেননি অনেকেই। অনলাইনেও পাওয়া যায়নি গর্ভনিরোধক। ফলে এমন ঘটেছে। কেউ কেউ আবার দুশ্চিন্তার হাত থেকে মুক্তি পেতেও শারীরিক সম্পর্কের মধ্যে আশ্রয় খুঁজেছেন।

আরও পড়ুন:ঘাড়ে-পিঠে-কোমরে সারাক্ষণ ব্যথা? যন্ত্রণা দূর করতে এই সব মানতেই হবে​

পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বিহারে। সে রাজ্যে তাঁদের কোয়রান্টিন পর্ব শেষ হওয়ার পর দেওয়া হয়েছে কন্ডোমের প্যাকেট।

লকডাউন পর্বে গর্ভনিরোধক পিল মেলেনি সবসময়। ফাইল ছবি।

কী হতে পারে এখন

যাঁরা বিপদ বুঝে গর্ভপাত করিয়ে নিচ্ছেন, তাঁদের সমস্যা নেই। কিন্তু যাঁরা করাবেন না, তাঁদের অনেক ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। কোভিড যে হারে বাড়ছে, কখন কে আক্রান্ত হয়ে পড়বেন, তার ঠিক নেই। সেই অবস্থায় সন্তানের জন্ম দেওয়া যথেষ্ট ঝুঁকির ব্যাপার। তার উপর আছে আর্থিক মন্দা। কত জনের চাকরি যাবে, ব্যবসা বন্ধ হবে, তার ঠিক নেই। সেই অবস্থায় সন্তানের জন্ম দেওয়া মানে শিশু ও প্রসূতির মৃত্যুর হার বাড়া। সংসারে অতিরিক্ত চাপ। অতিরিক্ত চাপ সমাজেরও, এমনই জানান চিকিৎসক।

আরও পড়ুন:স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি নেই মানেই কি করোনা, কী বলছেন চিকিৎসকরা

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE