চিনিতে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। ফাইল ছবি।
খাবারে চিনি ছাড়া খেতে পারেন না? প্রতিদিনের পাতে একটা মিষ্টি অবশ্যই চাই। জানেন কি এতেই বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। যে খাবারে বেশি চিনি, সেই খাবারেই পুষ্টি কম। টাইপ ২ ডায়াবিটিস থেকে অ্যাকনে, হৃদরোগ- সবের পিছনেই রয়েছে চিনি, এমনটা বললে ভুল হবে না। চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে প্রভাব পড়বে হৃদযন্ত্রে। সতর্ক করছেন চিকিসৎক থেকে পুষ্টিবিদ।
বেশি পরিমাণে চিনি খেলে শরীরের ইনসুলিন হরমোন তা গ্রহণ করতে পারে না। অতিরিক্ত ক্যালোরি ফ্যাট হিসেবে মজুত হয়। অতিরিক্ত ফ্যাটে মেটাবলিক ডিসফাংশন এবং শরীরে এর ফলে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স তৈরি হয়। অতিরিক্ত ওজনে বাড়ে হদরোগের সম্ভাবনা। চিনি বেশি পরিমাণে শরীরে গেলে হাই অ্যাবডমিনাল ফ্যাট তৈরি হয়। ক্ষতিকারক কোলেস্টরল উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে। যেগুলি রক্ত চলাচলে সমস্যা তৈরি করে । ব্লাড ভেসেলে রক্ত জমে । শরীরে রক্ত জমাটের সম্ভাবনা তৈরি করে । প্রভাব পড়ে হৃদযন্ত্রের কার্যকলাপে ।
ডায়েটে অতিরিক্ত চিনি থাকলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় । হাইপারটেনশনের প্রভাব পড়ে হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক কার্যকলাপে । আগের তুলনায় দ্রুত রক্ত পাম্প করা শুরু করে হৃদযন্ত্র । ব্লাড ভেসেলের ক্ষতি হয় । বাড়ে স্ট্রোকের সম্ভাবনা । এই প্রসঙ্গে চিকিসৎক দেবব্রত রায় বলেন, চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে । ডায়াবিটিসের সম্ভাবনাও বাড়ে । প্রভাব পড়ে হৃদযন্ত্রে। তাই করোনা বা অন্য সংক্রামক রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় । ডায়াবিটিস থাকলেই ইনসুলিন তৈরির পরিমাণ কমে যায়। করোনারি ব্লকেজের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে । হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও বাড়বে । হৃদপেশি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে । পাম্পিং ফাংশনে সমস্যা হয়ে হার্ট ফেলিওর পর্যন্ত হতে পারে ।
আরও পড়ুন: কলার চেয়েও বেশি পটাসিয়াম রয়েছে এ সব খাবারে, নিয়ন্ত্রণে থাকবে রক্তচাপও
বয়স, উচ্চতা ও ওজনের নিরিখে মেপে খেতে হবে খাবার। তবে চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবারে লাগাম টানতেই পরামর্শ দিয়েছেন দেবব্রত বাবু ।
আরও পড়ুন : করোনা আতঙ্কে গোপন করছেন প্রস্টেটের সমস্যা? বাড়বে বিপদ
চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কতটা ? এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, ‘চিনি বলতে যদি চোখে দেখা যায় সে রকম চিনি অর্থাৎ সকালে চায়ের সঙ্গে খাওয়া চিনিটা ধরি, সেক্ষেত্রে ক্ষতি তো হবেই । তবে তা পরিমাপ করে খাওয়ার একটা প্রবণতা মানুষের রয়েছে । কিন্তু যে চিনি চোখে দেখা যাচ্ছে না, অর্থাৎ কুকিজ, বিস্কুট, পেস্ট্রি জাতীয় খাবারে যে চিনি রয়েছে, তা আরও বেশি ক্ষতিকর । কিন্তু সুগার ৬৩ রকমের। তাই মল্টোজ, ডেক্সট্রোজ এই যে কোনও ধরনের সুগার শরীরের মধ্যে বেশি পরিমাণে গেলেই তা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক । ফলে হাইপারটেনশনের সম্ভাবনা। তাই অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়বেই । অন্য রোগেরও ঝুঁকি তৈরি হবে। তাই চিনি বর্জন করে ফাইবার জাতীয় খাবার আরও বেশি করে ডায়েটে রাখতে হবে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy