Advertisement
E-Paper

নিউমোনিয়া হানা দিতে পারে যখন তখন, কী ভাবে সামাল দেবেন অসুখ?

ভাইরাস বা ছত্রাকের প্রভাবেও এই অসুখ দানা বাঁধে শরীরে। তাই নিউমোনিয়ার নানা প্রকারভেদও রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:৪০
শরতে আবহাওয়া পরিবর্তন ও হিম পড়া শুরু হওয়ার সময়টাই নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ে। ছবি: আইস্টক।

শরতে আবহাওয়া পরিবর্তন ও হিম পড়া শুরু হওয়ার সময়টাই নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ে। ছবি: আইস্টক।

সারা দিন কাশি, ঠান্ডা লাগা, শ্বাসকষ্ট সঙ্গে ধুম জ্বর। সাধারণ চোখে ‘ভাইরাল ফিভার’ বলে দেগে দেওয়া যায় একে। তবে দিনের পর দিন সচেতনতার অভাব আর চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অনীহাকে কাজে লাগিয়ে যখন স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি আপনার শরীরে ছড়িয়ে দিচ্ছে তার শিকড়বাকড়, তত ক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে অনেক।

ফুসফুসের সংক্রমণের প্রভাবে যে সব অসুখের হানা আমাদের দেশে উত্তরোত্তর বাড়ছে, তাদের অন্যতম নিউমোনিয়া। এই অসুখে ফুসফুসে প্রদাহ তৈরি হয়, অনেক সময় জল জমতে পারে ফুসফুসে। স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি নামের ব্যাকটিরিয়া এই রোগের অন্যতম কারণ হলেও ভাইরাস বা ছত্রাকের প্রভাবেও এই অসুখ দানা বাঁধে শরীরে। তাই নিউমোনিয়ার নানা প্রকারভেদও রয়েছে।

‘‘মূলত ক্রনিক ঠান্ডা লাগা, বুকে শ্লেষ্মা জমে থাকার সূত্র ধরেই এই অসুখ ছড়ায় বলে বর্ষার পর হঠাৎই শরতের আবহাওয়া পরিবর্তন ও হিম পড়া শুরু হওয়ার সময়টাই এই অসুখের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। ঠান্ডা লাগলেই যে সকলের নিউমোনিয়া হবে তা নয়, তবে যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, মূলত, বয়স্ক ও শিশুরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।’’— জানালেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী।

আরও পড়ুন: সুস্থ সন্তান পেতে গর্ভসঞ্চারের সময় যে সব সাবধানতা নেবেনই

তাঁর মতে, নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ ধুম জ্বর। ওষুধে জ্বর নামলেও আবার ওষুধের প্রভাব কাটলেই হু হু করে বেড়ে যায় জ্বর। ১০৩-১০৪ ডিগ্রি উঠতে পারে জ্বর। এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ইত্যাদি তো থাকেই। অনেক সময় মাথা যন্ত্রণা, গা গোলানো, ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়াদাওয়ায় অনীহা এ সবও নিউমোনিয়ার জ্বর-শ্বাসকষ্টকে সঙ্গ দেয়। তবে নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীকে ছুঁলেই নিউমোনিয়ার জীবাণু শরীরে ছড়ায় না। তবে আক্রান্তের কাশি বা হাঁচি থেকে তা ছড়াতে পারে। এই ‘ড্রপলেট ইনফেকশন’ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করুন।

এই অসুখে ফুসফুসে প্রদাহ তৈরি হয়, অনেক সময় জল জমতে পারে ফুসফুসে।

তবে সাধারণ সর্দি-জ্বরের সঙ্গে এর বেশ কিছু তফাত থাকে। একটু লক্ষ্য রাখলেই তাই রোগ নির্ণয় সহজ। কেমন সে সব?

চিকিৎসকের মতে, প্রাথমিক ভাবে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি দিয়ে এই রোগ শুরু হলেও দেখা যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জ্বর, শ্বাসকষ্ট বাড়ছে, কশিরও দমক বাড়ছে। সাধারণত ভাইরাল ফিভার যে সব ওষুধে কমে, দ্রুত সাড়া মেলে, এই ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। বুকের ব্যথাও বাড়তে থাকে। শ্বাসকষ্টের প্রাবল্য বাড়তে থাকে। অনেক সময় জ্বরের ওষুধের কড়া ডোজে জ্বর নামলেও ফিরে ফিরে আসে তা। অবস্থা গুরুতর হলে কাশির সঙ্গে রক্তও উঠতে পারে।

এ সব লক্ষণ দেখা দিলেই দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। একমাত্র চিকিৎসকই বুঝতে পারেন কোনও ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কি না। তবু নিশ্চিত হতে কিছু পরীক্ষা করাতে হয়। এক্স-রে, সিটি স্ক্যানও করে দেখা হয় অনেক সময়।

শিশুদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ মনে নিউমোনিয়া প্রতিষেধক টিকা নেওয়ান।

অসুখের সময় সতর্কতা

আক্রান্ত রোগীকে ধূমপান থেকে দূরে রাখতেই হবে। সঙ্গে প্যাসিভ স্মোকিং থেকেও দূরে রাখতে হবে রোগীকে। দূরে রাখতে হবে যে কোনও দূষণ থেকেও। ধুপকাঠির ধোঁয়া, ধুনো, মশা মারার কয়েল রোগীর ঘর থেকে বাদ দিতে হবে এ সবও। জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন নিউমোনিয়া রোগীর জন্য খারাপ। তাই প্রচুর জল ও ফ্লুয়িড জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে রোগীকে। জ্বর কমানোর ওষুধ ঘন ঘন খাইয়ে জ্বর নামানোর চেষ্টা না করে বরং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন। রোগীকে ঠান্ডা আবহাওয়া থেকেও দূরে রাখতে হবে। অ্যাজমা থাকলে ইনহেলার সঙ্গে রাখুন। চিকিৎসকের নির্দেশ মতো ব্যবহারের বিধিনিষেধ মানতে হবে। হার্ট ও লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগী ও ডায়াবেটিকরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিউমোনিয়া প্রতিরোধক টিকা নিতে পারেন। সাধারণত দু’ সপ্তাহ সময়ে এই রোগের ধাক্কা অনেকটাই সামলে ওঠেন রোগী। তবে তার চেয়েও দেরি হলে অবশ্যই হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

আরও পড়ুন: রোদে পুড়েছে ত্বক? ট্যান সরান এ সব উপায়ে

নিউমোনিয়ার টিকা

নিউমোনিয়ার টিকা মূলত দুই রকম। বছরে এক বার যেমন নেওয়া যায়, তেমনই পাঁচ বছর অন্তরও নেওয়া যায় এই বুস্টার ডোজ। শিশুদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ মনে নিউমোনিয়া প্রতিষেধক টিকা দেওয়া যায়।

Pneumonia নিউমোনিয়া Fitness Tips Health Tips Cold and Cough
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy