সর্দিকাশি হোক বা পেট গরম— বিভিন্ন পাতার ওষধি গুণ কাজে লাগিয়ে টোটকা তৈরির চল বহুদিনের। যেমন পেটখারাপ হলে থানকুনি পাতার রস খাওয়া হয়। গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য পুদিনা পাতার শরবত আবার সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতার ব্যবহার বহু দিনের। আগে বাড়ি সংলগ্ন বড় উঠোন থাকত। সেখানেই নিজের মতো বেড়ে উঠত গাছগাছালি। থানকুনি পাতা কিংবা কুলেখাড়া কিনতে বাজারে ছুটতে হত না।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। ফ্ল্যাট বা ছোটখাটো বাড়িই আস্তানা। বাগানের জন্য জায়গা কই? তবে চাইলে ছাদে বা বারান্দায় টবেই লাগাতে পারেন এমন গাছগাছালি, যা প্রয়োজনে কাজে লাগবে।
আরও পড়ুন:
তুলসী: সর্দিকাশির ঘরোয়া টোটকা হিসাবে তুলসীপাতা এবং মধু খাওয়ার চল বহু পুরনো। তুলসীপাতার অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তুলসীপাতার আরও অনেক গুণ রয়েছে। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় শুধুমাত্র তুলসীপাতা ব্যবহারেই। উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় এই গাছ সহজেই বেড়ে ওঠে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে গাছটি যেন ঘণ্টা ছয়েক সূর্যালোক পায়।
পুদিনা: ডিটক্স পানীয় হোক বা স্যালাড— স্বাস্থ্যকর যে কোনও খাবারেই পুদিনা পাতা ব্যবহার করা হয়। শরবত থেকে কবাবের চাটনি— সবেতেই পুদিনার প্রয়োজন। ত্বক কিংবা চুলের নানাবিধ সমস্যা নিরাময় করে পুদিনা। পুদিনা পাতা বাজার থেকে কিনে এনে শিকড়-সহ গোড়া কাঁচি দিয়ে কেটে রাখুন। এর পর এগুলো এক বেলা জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। সন্ধেবেলা পুঁতে দিন টবে। অথবা বোতলের জলেও রাখতে পারেন। দিন। প্রথম দিকে খুব বেশি রোদে না রেখে, বোতলগুলি ছায়ায় রাখতে হবে। শিকড়সমেত পুদিনা আড়াআড়ি ভাবে লাগান। কয়েকদিনের মধ্যেই গাছ বাড়তে থাকবে। দিনের কিছুটা সময় সূর্যালোকেও রাখতে হবে। তবে পুদিনা গাছ খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে। তাই নিয়ম করে ডালপালা ছাঁটতে হবে।
কারিপাতা: কারিপাতা ভিটামিন এ, বি, সি এবং ডি-র মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। পাশাপাশি ক্যালশিয়াম, আয়রন এবং ফসফরাসের মতো কিছু খনিজ পদার্থও এতে রয়েছে। সেই সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে কারিপাতায়। ফাইবার ও প্রোটিনেও ভরপুর এটি। সকালে খালিপেটে অল্প কারিপাতা চিবিয়ে খেলে হজমের সমস্যা দূর হতে পারে অনেকের। কারিপাতায় অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিডায়াবিটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারিপাতা গাছের প্রয়োজন পর্যাপ্ত সূর্যালোক। দিনে অন্তত ৬ ঘণ্টা রোদের সংস্পর্শে থাকলে কারিপাতা গাছ দ্রুত বাড়বে। টবের মাটি শুকিয়ে গেলে জল দিতে হবে। মাঝেমধ্যে একটি ছেঁটে দিলে গাছটি লম্বায় না বেড়ে বহরে বাড়বে।