শীতের সময়ে গুড় ছাড়া বাঙালির হেঁশেল যেন পূর্ণ হয় না। তা সে পাউরুটি বা রুটি দিয়ে খান, অথবা পায়েসে মেশান, কিংবা নাড়ু-পাটিসাপ্টা বানান, গুড়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। একই সঙ্গে শীতকালেই গুড় ব্যবহার করা সবচেয়ে কঠিন। তার কারণ, কম তাপমাত্রায় চটজলদি জমাট বেঁধে যায়। তার পর সেই গুড় গলানোর জন্য কসরত চলতে থাকে। পাথরের মতো শক্ত দলা থেকে ভেঙে ভেঙে গুঁড়ো বার করতে গিয়ে গুড় খাওয়ার মজাই নষ্ট হয়ে যায়।
কিন্তু গুড় সংরক্ষণ করার সঠিক নিয়ম জানলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বাড়িতে যাতে গুড় সর্ব ক্ষণ নরম, আঠালো রূপ ধারণ করে থাকে, তার জন্য সহজ কয়েকটি পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
গুড় সংরক্ষণ করার নিয়ম। ছবি: সংগৃহীত।
১. বায়ুনিরোধী পাত্রে সংরক্ষণ: শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্যা এড়াতে গুড় হাওয়ার সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হবে। তাই বায়ুনিরোধী পাত্রে রাখতে হবে গুড়, যাতে হাওয়ার সংস্পর্শে এসে দ্রুত আর্দ্রতা হারিয়ে শুকিয়ে জমে না যায়।
২. পাউরুটির ব্যবহার: গুড় রাখার পাত্রের মাঝে টাটকা একটি পাউরুটির টুকরো রেখে দিন। পাত্রের ভিতরে ধীরে ধীরে আর্দ্রতা বাড়িয়ে তুলবে পাউরুটি। এর ফলে দীর্ঘ দিন নরম এবং আর্দ্র থাকতে পারে গুড়। তবে ২-৩ দিন অন্তর পাউরুটির টুকরোটি বদলে ফেললে ভাল।
৩. তাপ থেকে দূরে: অনেকেই ভুলবশত জানলার ধারে বা গ্যাস অভেনের কাছে গুড়ের শিশি রেখে দেন। এর ফলে খুব দ্রুত তাপের সংস্পর্শে চলে আসে গুড়। ক্রমাগত ঠান্ডা-গরমের ওঠানামায় গুড়ের মধ্যে শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়। বাসনের আলমারির তাকের পিছন দিকে রাখা উচিত গুড়ের শিশি, যেখানে তাপমাত্রার হেরফের খুব বেশি হয় না। এর ফলেই আর্দ্রতা হারানোর প্রবণতা কমে যায়।
৪. নরম কাপড়ের ব্যবহার: শীতের শুষ্ক আবহাওয়া থেকে গুড়কে রক্ষা করতে বহু কাল ধরে নরম মসলিনের কাপড়ের চল রয়েছে। কাপড়ে জড়িয়ে রাখলে শুষ্কতা দ্রুত হ্রাস পায় না। কাপড়ে মুড়িয়ে একটি বায়ুনিরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করতে পারেন।