Advertisement
E-Paper

রোগমুক্তির জন্য যোগ করছেন? শরীরের ক্ষতি হচ্ছে না তো?

যদি ভাবেন, শরীরকে ব্যায়াম দিয়ে কমিয়ে ফেলবেন বাড়তি মেদ, শ্বাসকষ্ট বা সুগার লেভেল, তা হলে আপনি ডাহা ফেল।

মনীষা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ১৭:৩৯
যোগাসন করুন, তবে নিয়ম জেনে। নিয়ম মেনে।

যোগাসন করুন, তবে নিয়ম জেনে। নিয়ম মেনে।

পাড়ায় একটা জিম খুলেছে, দিব্য খুশি হয়ে চলে গেলেন সেখানে। ভর্তি হয়েই ওয়েট লিফটিং, নিদেনপক্ষে বার তিরিশেক সিট আপ। বাড়ি ফিরে তীব্র ব্যাথা। তবু কে কার কথা শোনে! ফের পরের দিন ব্যাথার উপরেই ব্যায়ামের হুজ্জুতি— যদি ভাবেন, এ ভাবেই শরীরকে ব্যায়াম দিয়ে কমিয়ে ফেলবেন বাড়তি মেদ, শ্বাসকষ্ট বা সুগার লেভেল, তা হলে আপনি ডাহা ফেল।

ব্যায়াম করলেই শরীর ভাল থাকে, এমন সরলীকরণের ফাঁদে পা দিলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ যোগা থেরাপির মতে, পেশিসন্ধি ও অস্থিসন্ধির চোটের ক্ষেত্রে বেশি সতর্কতা মেনে চলতে হয়। এমন অনেক ধরনের চোট আছে যা সারতে সময় লাগে অনেক বেশি। কোনওটা বা আজীবনের। মাসখানেকেরও বেশি৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, যোগব্যায়ামের অভ্যাস ভাল, কিন্তু তা সঠিক উপায়ে না করলে আঘাত লাগার ভয় বাড়ে। এতে নষ্ট হতে পারে শরীরের ভারসাম্য। এমনকী, তেমন আঘাত লাগলে হাড়ে বড়সড় সমস্যা হওয়াও অস্বাভাবিক নয়৷

আরও পড়ুন: আজ জাতীয় নিজস্বী দিবস! নিজস্বী নিয়ে এসব তথ্য জানতেন?

অস্থি বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, মানব শরীরে দু’রকমের পেশিগুচ্ছ আছে। অ্যাগোনিস্ট আর অ্যান্টিগোনিস্ট। শরীরের যে কোনও প্রত্যঙ্গকে ভাঁজ করতে এই দু’রকমের পেশির ভূমিকা অসীম। তাই এদের শক্তি, স্বতঃস্ফূর্ততার মাধ্যমে ভারসাম্য রক্ষা হয় শরীরে। না জেনে ব্যায়াম করলে কোনও একটি অংশ অধিক শক্তিশালী হয়ে গিয়ে সমস্যা তৈরি করে অপরটির ক্ষেত্রে। এমনকী, প্রত্যেক রোগীর ক্ষেত্রে হাঁটার নিয়ম ও পরিমাণও আলাদা। না জেনে হাঁটাও খুব একটা কাজের কথা নয়।

এই রাজ্যেও পালিত হল যোগ দিবস। আইএনএস নেতাজি সুভাষে চলছে প্রাণায়াম। ছবি: নিজস্ব।

তা হলে উপায়?

অমিতাভ বাবুর মতে—

ব্যায়াম করুন, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। অনেকেই তেমন ভাবে চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁদের ক্ষেত্রে সাহায্য নিতে হবে ভাল যোগগুরু বা ট্রেনারের। জিম যে খুব দরকারি তা কিন্তু নয়। বরং, জিমে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তা হঠাৎ ছেড়ে দেওয়ার পরিস্থিতি এলে শরীরে তার প্রভাব পড়ে। বাড়িতেই করতে পারেন যোগাভ্যাস, একান্তই জিমে গেলে দেখে নিন সেখানে ভাল ট্রেনার আছেন কি না।

সম্প্রতি যোগ চর্চায় আমরা খুব গুরুত্ব দিই প্রাণায়াম বা মেডিটেশনে। কিন্তু আদ‌ৌ কি তা সব সমস্যার মেড ইজি সলিউশন?

যোগাসন ট্রেনার সুকোমল সেন কিন্তু অন্য কথা জানাচ্ছেন। তাঁর মতে, একেবারেই তা নয়। বরং, চিকিৎসকের পরামর্শ না মেনে প্রাণায়াম বা মেডিটেশনে তৈরি হতে পারে বিপদ। প্রাণায়মের সঙ্গে স্নায়ুর প্রবল যোগ। ভুল প্রাণায়ামে স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হাতাশা বা ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এমন হলে আগে যোগাযোগ করুন চিকিৎসকের সঙ্গে। খানিক সুস্থ হয়ে তার পর আসুন মেডিটেশনের পথে। তাতেই ফল মিলবে। নইলে নয়।

এ ছাড়া নজর রাখতে হবে কসরতের সময় পোশাকের উপরও। খুব আঁটো, আবার খুব ঢিলেঢালা কোনও পোশাকই কিন্তু ‘আদর্শ’ নয়। মাথায় রাখুন আরামদায়ক কিন্তু উপযুক্ত পোশাক বেছে নেওয়ার বিষয়টিও।

সুতরাং প্রবল উৎসাহে যোগাভ্যাস করুন, তাতে ক্ষতি নেই, কেবল নিজের শরীরের জন্য কতটুকু দরকার, আর ঠিক কী কী দরকার, খেয়াল রাখুন সেদিকে।

আরও পড়ুন: মোদীর যোগবার্তায় যোগ দিলেন না রাজ্যের পুলিশ কর্তারা

yoga fitness international yoga day যোগব্যায়াম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy