কেবল কি প্রেমের সম্পর্কই মূল্যবান? এ দিকে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন না তো? সে-ও তো আর এক প্রকার প্রেমই বটে, ভালবাসা। প্রেমের মানুষ থাকলেও বন্ধুরা পাশে থাকে, প্রেমের মানুষ ছেড়ে গেলেও বন্ধুরাই হাত ধরে। আর সে বন্ধুত্বই যেন ক্রমশ দূরে দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু হাল ছেড়ে দেবেন না। একটু চেষ্টা করলেই আবার বন্ধুর সান্নিধ্য পেতে পারেন। বন্ধুকে কেবল কয়েকটা সহজ প্রশ্ন করতে হবে। অভিমান, রাগ অথবা দুঃখের কুয়াশা কেটে গিয়ে আবার আলো ফুটতে পারে।
তুমি কি ব্যস্ত, না কি আমি কোনও অন্যায় করেছি?
আগে যোগাযোগ হত ঘন ঘন। এখন কুশল বিনিময়টুকুও হয় না। বন্ধু যেন দূরে সরে গিয়েছে। এক দিন মুখোমুখি হয়ে বা মেসেজ করে অথবা ফোন করে এই প্রশ্নটি করুন। যোগাযোগ কমে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই মনে প্রশ্ন জাগবে, আপনার কোনও ভুলে দূরত্ব তৈরি হয়নি তো? বন্ধুর মেজাজ বুঝে সেটা জেনে নেওয়া ভাল। সে ক্ষেত্রে ক্ষত সারাতে সময় কম লাগবে।
এখন কী চলছে তোমার জীবনে?
প্রতি মুহূর্তে জীবন পাল্টে যেতে পারে। আর সেখানে ধরা যাক, কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস অথবা কয়েক বছরের ব্যবধান। অনেকখানি সময় পেরিয়ে গিয়েছে মাঝে। আপনি ঠিক যতটা জানতেন, তার পর থেকে তো বন্ধুর জীবন থমকে যায়নি। অনেকখানি বদলে গিয়েছে। সেগুলি জানার চেষ্টা করুন। তাঁর জীবনের প্রতি মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করুন।
আমাদের বন্ধুত্ব এত বছরে কী ভাবে বদলে গেল মনে হয়?
এই প্রশ্নটি করলেই বোঝা যাবে, আপনি আর আগের মতো নিজেকে বন্ধুর ঘনিষ্ঠ মনে করছেন না। হয়তো না-বলা কথাগুলি এই প্রশ্নের মাধ্যমেই উত্থাপিত হবে। হতেই পারে, বন্ধুর উত্তরে আপনি আঘাত পেলেন, কিন্তু সত্যের মুখোমুখি হওয়া দরকার।
তুমি কি জানো যে, আমার তোমার কথা মনে পড়ে?
এই প্রশ্নটি অথবা এই প্রশ্নের মোড়কে স্বীকারোক্তি পুরো মেজাজটাই বদলে দিতে পারে। বিরক্তি বা রাগের আবহাওয়াকে মুহূর্তে পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এই একটি প্রশ্নের ফলে সহমর্মিতার সঙ্গে কথোপকথন শুরু হতে পারে।
বন্ধুকে কয়েকটি প্রশ্ন করলে ধীরে ধীরে বরফ গলতে পারে।
আমরা কি মাসে একটি করে দিন ঠিক করতে পারি দেখা করার জন্য?
‘‘এক দিন দেখা করা যাক’’ বলা মানে ততটা গুরুত্ব না দেওয়া। যদি আপনি তারিখ স্থির করে, জায়গা স্থির করে বন্ধুকে আমন্ত্রণ করেন, তা হলে মনে হবে, আপনি সম্পর্ক ঠিক করার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন। তার থেকেই কাছাকাছি আসতে পারেন আপনার বন্ধু।
বন্ধুরা কী ভাবে পাশে দাঁড়ালে খুশি হও তুমি?
এটা জেনে নেওয়া দরকার, সম্পর্ক ঠিক করার জন্য কী ভাবে পদক্ষেপ করবেন আপনি? কোন ভাবে এগোলে বন্ধু রেগে যাবেন না, বা বৃথা যাবে না প্রচেষ্টা। নিজে বোঝার চেষ্টা করে ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই, বরং জেনে নিয়ে সে ভাবে বন্ধুর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।
এমন কি কিছু আছে, যা তুমি আমায় বলতে চেয়েছিলে, কিন্তু পারনি?
অভিমান জমতে জমতে দূরত্ব তৈরি হয়েছে? অথবা রাগ হওয়ার কারণেই কি বিচ্ছেদ? যে কোনও বন্ধু নয়, ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে, সে ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই দু’জন দু’জনকে অনেক কিছু বলতে চেয়েও পারেননি। সব অনুভূতি চেপে রেখে দিন কাটিয়ে গিয়েছেন। হয়তো সে সব বলে দিলে অনেক আগেই অভিমানের পাহাড় ভেঙে যেতে পারত। দোনামনা না করে এই প্রশ্নটি করে সব জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি বন্ধু মুখ না-ও খোলেন, তা-ও তিনি জানবেন, আপনি তাঁর মনের ভার কমানোর চেষ্টা করছেন।