Advertisement
E-Paper

সবার প্রিয় সাজার চেষ্টা বৃথা! অনন্যা জানালেন, আশঙ্কা কাটিয়ে কী ভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন?

দৈনন্দিন জীবনে অনন্যার মতো অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। কর্মক্ষেত্রে বা সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে অনেকেই উল্টো দিকের মতামতকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে ফেলেন। আশপাশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করেন নিজের।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ১৯:২২

ছবি : সংগৃহীত।

সবার কাছে ভাল থাকতে কে না চায়! কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে সেই চাওয়া মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বলিউড অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডের সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে। ওই স্বভাবের জন্য তাঁকে কী সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি সে কথা জানিয়েছেন তিনি। অনন্যা বলেছেন, ‘‘এক সময় আমি সর্বদা ভাবতাম, কে, কী ভাবছে? কে, কী বলল? আমি যা বললাম, সেটা ঠিক হল কি না? অন্য কিছু বললে কি ভাল হত? এখন আর এ সব ভাবি না। বুঝেছি, সবাইকে খুশি করার চেষ্টা বৃথা। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এখন মাথা ঘামাই না আর।’’

দৈনন্দিন জীবনে অনন্যার মতো অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। কর্মক্ষেত্রে বা সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে অনেকেই উল্টো দিকের মতামতকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে ফেলেন। আশপাশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করেন নিজের। তাঁরা কী বললেন, তাঁরা কী ভাবে বিচার করলেন, সে ব্যাপারে ভাবতে গিয়ে আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। অনন্যা জানিয়েছেন, তাঁর ওই একই সমস্যা হত। নিজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অনন্যা বলেছেন, ‘‘হয়তো আমি কোনও পার্টিতে গেলাম। সেখানে পাঁচজন লোকের সঙ্গে কথা বলতে না বলতেই আমার মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে শুরু করত। আমি নিজের মাথাতেই আওড়ে যেতাম, ওদের কি আমাকে ভাল লাগল? আমি কি কিছু ভুল বলে ফেললাম? ফলে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই আমি ওই সব অকারণ চিন্তাভাবনা করে নিজের মাথা খারাপ করে ফেলতাম। এখন আর এ সবে পাত্তা দিই না। মানুষ হিসাবে আমি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এখন। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চাপ নিই না।’’

ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

অনন্যার মতো সমস্যা কাটিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার জন্য কী করা উচিত? এক সাক্ষাৎকারে মনোবিদ মুসকান মারওয়া বলছেন, ‘‘অনন্যার যে প্রবণতা, তাকে বলা হয় পিপল প্লিজ়িং। যা আমরা অল্পবিস্তর অনেকেই করে থাকি। একটা সীমা পর্যন্ত সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টা বাড়বাড়ির পর্যায়ে গেলে তা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ক্ষতি করতে পারে আত্মবিশ্বাসেরও।’’ মনোবিদ জানাচ্ছেন, ৫টি বিষয়ে খেয়াল রাখলে অনন্যার মতো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া সম্ভব।

১। কেন এমন হচ্ছে?

কারণ খুঁজে পেলে সমাধান করতেও বেশি সময় লাগার কথা নয়। তাই আগে জানুন, কেন এমন মনে হয়? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সমালোচনা, একা হয়ে যাওয়ার ভয়, প্রত্যাখ্যানের আশঙ্কা থেকে এমন হতে পারে। আবার যাঁরা এমন পরিবেশে বড় হয়েছেন, যেখানে মানুষের কাছে ভাল সাজার বিনিময়ে পুরস্কৃত হতে দেখেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে। সময় নিয়ে ভাবুন, কখন কোনও অপ্রিয় কাজেও হ্যাঁ বলতে বাধ্য হয়েছেন। সেটা করার সময়ে কেমন মনে হয়েছিল? ওই বোধটুকুই আগে হওয়া জরুরি।

—ফাইল চিত্র।

২। না বলতে শিখুন

অন্যেরা খারাপ ভাবতে পারে ভেবে ‘পিপল প্লিজ়ার’রা না বলতে ভয় পান। কিন্তু না বলা জরুরি। বিশেষ করে তা যদি নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি হয়, তা হলে তো বটেই। যখন দেখবেন, মুখ বুজে থাকলে আপনার আত্মসম্মান নষ্ট হবে, তখন না বলাটাই দরকার। শুরু করতে পারেন ছোটখাটো বিষয় দিয়ে। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অনুরোধে না বলতে শুরু করুন। খুব প্রয়োজন না হলে নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে যাবেন না।

৩। ধারণা পাল্টান

অন্যেরা কী বলল, তার উপর আপনার মূল্য নির্ভর করে না। যাঁরা মানুষকে খুশি করে চলতে ভালবাসেন, তাঁরা আকছার সেটাই ভাবেন। নিজের গুণের বিষয়ে অন্যের প্রশংসার উপরে ভরসা করার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। অন্যের উপর ভরসা না করে নিজের প্রতি যত্নবান হোন। ব্যক্তিগত লক্ষ্য স্থির করুন। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে নিজেকেই বাহবা দিন। নিজেকে বলুন, ‘‘আমার অনুভূতি এবং আমার প্রয়োজনের গুরুত্ব আছে। তা অন্য কারও ভাবনার উপরে নির্ভর করে না।’’

—ফাইল চিত্র।

৪। অপরাধবোধ ছাড়ুন

নিজের যত্ন নিন। অন্যের পছন্দ-অপছন্দ, চাহিদার উপরে নির্ভর করে নিজের ভাল থাকা নষ্ট করবেন না। যত বেশি নিজের যত্ন নেবেন, ততই আত্মবিশ্বাসেও বদল লক্ষ করবেন। পরিবর্তন আসবে সামাজিক মেলামেশার ধরনেও। প্রতিদিন কিছুটা সময় নিজের জন্য আলাদা করে রাখুন। ওই সময়টুকু কোনও অপরাধবোধ ছাড়া শুধু নিজের সঙ্গে কাটান।

৫। খুঁতকে আপন করে নিন

দোষেগুণেই মানুষ। যাঁরা সকলের কাছে প্রিয় হতে চান, তাঁদের মধ্যে সব কিছু নিখুঁত করারও একটা বাসনা লক্ষ করা যায়। ওই নিখুঁত হওয়ার চাপ আদতে ক্ষতিই করে। তাই মনোবিদের পরামর্শ নিজের খুঁতগুলোকে মেনে নিন। তাতে উদ্বেগ কমবে তো বটেই, নিজের কাছে নিজের অবাস্তব প্রত্যাশার চাপও লঘু হবে।

Workplace Tips People Pleasing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy