চাঁদিফাটা রোদ্দুর। শরীর ঘেমেনেয়ে একাকার। পেটে জ্বলছে খিদের আগুন। ভাবছেন, রাস্তার খারাপ খাবার খাবেন না বরং উপকারী কিছু দিয়ে পেট ভরাতে বেছে নিলেন রাস্তার ধারে কাটা ফল। অথবা ফ্রুট জুস। কিন্তু জানেন কি, এতে আসলে অসুখকেই আমন্ত্রণ জানালেন আপনি। এই ভুলের জেরে মৃত্যুও হতে পারে, বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
তৃষ্ণা, খিদে, গরম সমস্ত কার্যকারণের উপস্থিতি সত্ত্বেও রাস্তার ধারে কাটা ফলে শিলমোহর দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। আমাশা, টাইফয়েড, ডায়েরিয়া-সহ নানা রোগের আঁতুড়ঘর হিসেবে এই কাটা ফলকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা।
জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্স চালু হয় ২০১১ সালে। বলা হয় এই ধরনের হকারদের লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে। আইন মেনে বিক্রি করতে হবে ফল। কাচে ঢাকা বাক্সে ফল রাখতে হবে। মশামাছি, ধুলোবালি থেকে রক্ষা করতে হবে এই বাক্সকে।
আরও পড়ুন: গরমে ত্বক বাঁচাবে এই সিরাম, চড়া দামে না কিনে বানিয়ে ফেলুন বাড়িতে
কিন্তু আইন মানছে কে? ২০১৭ সাল থেকে কলকাতা পুরসভা বারবার অভিযান চালিয়েও বন্ধ করতে পারেনি খোলা জায়গায় কাটা ফল বিক্রি। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, ধর্মতলা, শিয়ালদহ, শ্যামবাজার চত্বরে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে কাটা ফল। অপরিচ্ছন্ন হাতে, অপরিস্কার জলে ধুয়ে আপনাকে যে বস্তুটি পরিবেশন করা হচ্ছে তা আপনার প্রাণ নিয়ে নেবে না এমন গ্যারান্টি চিকিৎসকরাও দিতে পারবেন না।
কাটা ফলের দোকান বাছার সময় তা আদৌ স্বাস্থ্যকর কি না খেয়াল রাখুন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ উদয়শঙ্কর রায় জানাচ্ছেন, ‘‘কাটা ফল থেকে শরীরে অনায়াসে ঢুকে পড়ছে ব্যাসিলাস, সালমোনেল্লা, স্টেফাইলোকক্কাস, সিউডোমোনাসের মতো ব্যাকটিরিয়া। এর কারণে নানা রকম পেটের রোগ হতে পারে। রাস্তায় তৈরি করা জুসে ব্যবহৃত অপরিষ্কার জল থেকে ছড়ায় হেপাটাইটিসের মতো প্রাণঘাতী রোগের জীবাণু।’’
আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসের হাত থেকে বাঁচান সন্তানকে, এই সব নিয়মে নিজেও থাকুন সুস্থ
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কাজেই নিজের শরীরে কথা ভেবে বিরত থাকুন রাস্তার দোকান থেকে আঢাকা ফল বা জুস খাওয়া থেকে। তা হলে উপায়?
ফল খেতে হলে বাড়ি থেকে এয়ারটাইট টিফিন কৌটোয় ফল নিয়ে বার হন। রাস্তা থেকে গোটা ফল কিনে পরিস্কার জলে ধুয়ে খান। কাটা ফলের দোকান বাছার আগে সচেতন হোন। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন দোকান থেকেই কিনুন তা। পারলে সামনে দাঁড়িয়ে ফল কাটিয়ে খান।