সতর্ক থাকুন ডায়াবিটিসে। ছবি: শাটারস্টক।
ভালমন্দ খাইয়ে ও ঘরে আটকে রেখে যত মেদ জমাবেন বাচ্চার শরীরে, তত সর্বনাশ হবে তার৷ মা নিজে যদি মোটাসোটা হন, আরও বিপদ৷ গর্ভসঞ্চারের সময় ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি থাকলে জেস্টেশনাল ডায়াবিটিসের আশঙ্কা বেড়ে যায়৷ প্রসবের পর তা সেরে গেলেও পরে আবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ মায়ের জেস্টেশনাল ডায়াবিটিস থাকলে সন্তান বেশি ওজন নিয়ে জন্মাতে পারে৷ আবার খুব বেশি বা কম ওজনের বাচ্চার পরবর্তী কালে ডায়াবিটিস হতে পারে৷ আশঙ্কা আরও বাড়ে কম ওজনের বাচ্চাকে খুব তাড়াতাড়ি খাইয়েদাইয়ে মোটা করলে৷ কাজেই বুঝতেই পারছেন, সন্তানের ডায়াবিটিস হওয়া ঠেকাতে বাবা-মায়ের ভূমিকা বিরাট৷
মায়ের দায়িত্ব
সেমি–তে উচ্চতা মেপে তা থেকে ১০০ বিয়োগ করলে যে সংখ্যা পাবেন, সেটাই আপনার আদর্শ ওজন৷ গর্ভধারণের আগে সঠিক খাবার খেয়ে ও ব্যায়াম করে ওজন তার কাছাকাছি নিয়ে আসুন৷ গর্ভাবস্থাতেও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো হালকা ব্যায়াম করবেন৷ গর্ভাবস্থায় খাবারের পরিমাণ নয়, তার গুণগত মানের দিকে নজর দিন৷ থার্ড ট্রাইমেস্টারে গিয়ে তবে ২৫০–৩০০ ক্যালোরির মতো বেশি খেতে হবে৷
গর্ভাবস্থায় ধূমপান, মদ্যপান, অতিরিক্ত চা–কফি–কোলা না খেলে এবং ডাক্তারের কথা মেনে চললে খুব কম ওজনের বাচ্চা হওয়ার চান্স কম৷ এ ছাড়া নবজাতককে যত দিন পারেন স্রেফ বুকের দুধ খাওয়ান৷ প্রথম ৬ মাস তো বটেই। কৌটোর দুধের এমনিই নানা অসুবিধে আছে, তার উপর বাচ্চার ওজনও বাড়ে দ্রুত৷ বাড়ে ভবিষ্যতে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা৷ খেয়াল রাখুন, বাচ্চা বড় হওয়ার পর যেন ভুল খাবারে তার আসক্তি না জন্মায়৷ আবার বেশি মদ খেলে ওজন বাড়ে, কোলেস্টেরলও পাল্লা দিয়ে বাড়ে৷ ডায়াবিটিসের চিকিৎসায় ওজন ও কোলেস্টেরল কম রাখার ভূমিকা বিরাট৷ দেখা গিয়েছে সুগারের পাশাপাশি কোলেস্টেরল কমাতে পারলে চিকিৎসার কার্যকারিতা প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়ে যায়৷ ওজন কমাতে পারলে তো কথাই নেই৷ মদের নেশা থাকলে যা করে ওঠা খুব কঠিন৷
আরও পড়ুন: বারো মাস দাঁতে শিরশিরানি? এ সব মানলে সমাধান মিলবে সহজেই
ডায়েট মেনে থালা সাজান।
ধূমপান ও ডায়াবিটিস হল তেল আর জলের মতো৷ একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে না৷ কাজেই ডায়াবিটিসের কুফল এড়িয়ে বাঁচতে চাইলে ধূমপান ত্যাগ করতেই হবে৷ যত তাড়াতাড়ি তা করতে পারবেন, তত মঙ্গল৷
শুয়ে–বসে থাকার অভ্যাস হলে স্বাভাবিক যা ওজন হওয়ার কথা, তাকে ২০ দিয়ে, হালকা কাজকর্ম করলে ২৫ দিয়ে আর দৌড়ঝাঁপ করে কাজ করলে ৩০ দিয়ে গুণ করে যে সংখ্যা আসবে, তত ক্যালোরির খাবার খেয়ে ডায়াবিটিস ঠেকিয়ে রাখুন৷
কিছু নিয়ম
নিয়ম মানলে ৫০ শতাংশ মানুষের ডায়াবিটিস হয় না, আর বাকি ৫০ শতাংশের মধ্যে যাঁদের এ রোগের প্রবণতা আছে, তাঁদের হয় বছর ১৫ পরে৷ দেরিতে ডায়াবিটিস হওয়ার অর্থ, দেরিতে জটিলতা হওয়া৷ অর্থাৎ অনেক বেশি দিন ভাল থাকা৷ কখন কী করলে ডায়াবিটিস ঠেকানো যায় তা দেখে নিন৷
আরও পড়ুন: মেদ জমছে কিন্তু জিমে যাওয়ার সময় নেই? ফ্যাট তাড়ান এ সব উপায়ে
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সন্তানের সাইকেল চালানোর অভ্যাসে উৎসাহ দিন।
দুপুরে ১৫–২০ মিনিটের জন্য একটু গড়িয়ে নেওয়া ভাল, কাজকর্মের উৎসাহ বাড়ে৷ শরীর ভাল থাকে৷ কিন্তু দু’–এক ঘণ্ঢা ধরে টানা ঘুমোলে উল্টো বিপত্তি হয়৷ সাইকেল বিক্রি করে দিয়ে স্কুটার কিনবেন না৷ বরং উল্টোটা করুন৷ সাইক্লিংয়ে যতটুকু ব্যায়াম হবে, তাতে অনেক উপকার পাবেন৷ বাজার–হাট করুন হেঁটে৷ সকালে বা বিকেলে কম করে আধঘণ্টা টানা হাঁটার চেষ্টা করুন৷ সারা মাসে ৫০০ মিলি–র বেশি তেল খাবেন না৷ সারা দিনে নুন খাবেন চায়ের চামচের এক চামচেরও কম৷ ওজন বেশি হলে, তা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ব্যায়াম করার পাশাপাশি, দিনে যত ক্যালোরি খাওয়া উচিত তার চেয়ে ৫০০ ক্যালোরি কম খান৷ পেট ভরাতে লো–ক্যালোরির ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন শাকসব্জি–ফল খান বেশি৷ সকাল–দুপুর ও রাতের খাওয়ার মাঝে আরও দু’বার হালকা খাবার খান৷ ফল, স্যালাড, ক্লিয়ার স্যুপ জাতীয়৷
(ছবি: শাটারস্টক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy