Advertisement
E-Paper

সুস্থ সন্তান চান? সহবাসের আগে মেনে চলুন এ সব, নিষেধই বা কী কী?

সুস্থ সন্তান পেতে গেলে কী কী করবেন, কী কী কাজে থাকবে নিষেধাজ্ঞা— রইল সে সবের হদিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৪৪
কিছু বাধা-নিষেধ মানলে সুস্থ সন্তান পাওয়ার পতে এগিয়ে তাকবেন কয়েক ধাপ। ছবি: আইস্টক।

কিছু বাধা-নিষেধ মানলে সুস্থ সন্তান পাওয়ার পতে এগিয়ে তাকবেন কয়েক ধাপ। ছবি: আইস্টক।

কেরিয়ার, চাকরি, প্রোমোশন সামলে আজকাল বিয়ের বয়স মেয়েরাও অনায়াসে টেনে নিয়েছে ৩০-এর কোঠায়। ফলে বিয়ের পর পরিবার পরিকল্পনায় স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা দেরি হয়। আর এই দেরির হাত ধরেই আসে অনেক রকমের জটিলতা। আজকাল এই সব জট কাটাতেই ‘প্রি প্রেগন্যান্সি কাউন্সেলিং’ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ মার্থা হাজরার মতে, ‘‘আজকাল গর্ভস্থ শিশুর জেনেটিক অসুখ প্রতিরোধে বিশেষ ইঞ্জেকশন বেরিয়েছে, যা প্রসূতিকে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও প্রি প্রেগন্যান্সি কাউন্সেলিংয়ের হাত ধরে পরিবার পরিকল্পনা করলে প্রথম থেকেই কিছু জরুরি বিষয়ে সচেতন হওয়া যায়। সেটাও উপরি পাওনা। বয়স বেড়ে যাওয়ায় যে সব জটিলতা আসতে পারে, পরিকল্পনায় সে সব অনেকটাই এড়ানো যায়।’’

প্রথম থেকেই কিছু রোগ সম্পর্কে ও গর্ভধারণ করতে গেলে সে সব কোনও সমস্যা তৈরি করবে কি না, সে সব জেনে রাখলে প্রাথমিক বিপদ অনেকটা কাটানো যায়। জেনে রাখা ভাল, সুস্থ সন্তান পেতে গেলে কী কী করবেন, কী কী কাজে থাকবে নিষেধাজ্ঞা— রইল সে সবের হদিশ।

আরও পড়ুন: শীতেও চাই ন্যুড ঠোঁট? হতেই পারে, যদি যত্ন হয় এ ভাবে…

এইচআইভি ও থ্যালাসিমিয়ার পরীক্ষা অবশ্যপালনীয়।

কী করবেন

থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং: বিয়ের আগেই রক্ত পরীক্ষা করানোর কথা নানা ভাবেই প্রচারিত। অবশ্যই বিয়ের সময় এই পরীক্ষা করান। এইচআইভি-র সঙ্গে থ্যালাসিমিয়ার জন্যও এই পরীক্ষা খুব প্রয়োজনীয়। একান্তই তা করিয়ে উঠতে না পারলেও সন্তানের ভাবনা ভাবার আগে অবশ্যই এই পরীক্ষা করান। এক জন রোগের কেরিয়ার হলে সমস্যা নেই৷ কিন্তু দু’জনই কেরিয়ার হলে সন্তানের মধ্যেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। তাই কাউন্সিলিংয়ে যাওয়ার আগেই সেরে রাখুন এই কাজটি।

পিসিওডি: এটি মূলত লাইফস্টাইল ডিজিজ। বেশির ভাগ মেয়ের ক্ষেত্রেই খাওয়াদাওয়ার অনিয়মে রাশ টানলে, বাইরের ভাজাভুজি কম খেলে, একটি নির্দিষ্ট ও স্বাস্থ্যকর ডায়েট মানলে এই অসুখ পালায়। কিন্তু বাড়াবাড়ি রকমের সমস্যায় তা থেকে প্রস্রাবে সংক্রমণ চলে আসতে পারে। গর্ভধারণেও সমস্যা হতে পারে, তাই মেদ ঝরিয়ে নিজেরকে ঝরঝরে করে রাখার পাশাপাশি এই অসুখ থাকলে একটু নিয়ম মেনে চলুন। বাড়াবাড়ি আকারে রোগ হানা দিলে অবস্যই চিকিসকের পরামর্শ নিন।

ফার্টাইল পিরিয়ড মিথ: পিরিয়ড শুরু এক সপ্তাহ আগে ও শেষ হওয়ার পর ১০ দিন হল ফার্টাইল পিরিয়ড। এমনিতে ফার্টাইল পিরিয়ডে নিয়মিত শারীরিক সুস্থ সম্পর্কের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে আধুনিক চিকিসাবিজ্ঞানে বলা হয় ‘আদর্শ ফার্টাইল পিরিয়ড’ বলে সে অর্থে কিছু হয় না। সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময়কে এমন ধরা হলেও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী এই নিয়ম কিছুটা বদলায়। অনেকেরই পিরিয়ড অনিয়মিত হয়। তেমনটা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। রক্তের সিরাম এলএইচ মেপে বা আলট্রাসাউন্ড করে চিকিৎসক জানাতে পারবেন কখন ডিম্বাণু বেরবে৷ সেই বুঝে সহবাস করার দরকার পড়বে।

অ্যানিমিয়ার চিকিৎসা: হবু মায়ের অ্যানিমিয়া থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বাজারচলতি আয়রন ক্যাপসুল না খাওয়াই বাঞ্ছনীয়। রক্তাল্পতা নানা কারণে হতে পারে। রক্তের কোনও সমস্যা থেকেও এই অসুখ হানা দেয় অনেক ক্ষেত্রে। কাজেই আন্দাজে না এগিয়ে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই রক্তাল্পতার সঙ্গে লড়াই করুন। এতে অস্ত্রোপচারের সময় সমস্যা হবে না।

চিকেন পক্সের স্ক্রিনিং: ভেরিসেলা বা চিকেন পক্সের স্ক্রিনিং করান৷ রোগের প্রতিরোধ কম থাকলে প্রতিষেধক দেওয়ার পর তবেই আসবে গর্ভধারণের প্রশ্ন। না হলে গর্ভপাত, সময়ের আগে প্রসব ও সন্তানের জন্মগত ত্রুটি থাকার শঙ্কা থাকে। তবে অধিকাংশ মহিলারই এই রোগের বিরুদ্ধে জোরদার প্রতিরোধ থাকে।

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এই সব ব্যথায় ভয় কতটা? কী ভাবে মিলবে প্রতিকার?

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কী করব না

জিরো জাঙ্ক: আধুনিক গবেষণা জানান দিয়েছে, অতিরিক্ত পরিমাণে জাঙ্ক ফুড শুক্রাণু ও ডিম্বাণুরও ক্ষতি করে। তাই ওভারির কার্যকারিতা বাড়াতে ও মেদবাহুল্য কমিয়ে শুক্রাণুকেও সক্রিয় করে তুলতে জাঙ্ক ফুডকে বাদ দিন খাবারের পাত থেকে। যে কোনও রকম ঠান্ডা পানীয়কেও বিদায় দিতে হবে।

মদ-সিগারেট: জাঙ্ক ফুডের মতোই মদ–সিগারেট খেলে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি। কাজেই নেশা ছাড়ার চেষ্টা করুন। শুধু ধূমপান নয়, সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে অতিরিক্ত টেনশনও। এমনকি কোনও ওষুধ নিয়মিত খেলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জেনে রাখুন সেই ওষুধের প্রভাবে ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর কোনও ক্ষতি হতে পারে কি না।

যৌন রোগ: স্বামী বা স্ত্রী, জিনঘটিত কারণে কারও কোনও রকম যৌন অসুখ থাকলে অবশ্যই গর্ভধারণের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ক্রোমোজোমাল স্টাডি করে তবে এগোন। এই পরাক্ষায় অনীহা কোনও কাজের কথা নয়।

অন্য অসুখ: উচ্চমাত্রায় ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি এ সব গর্ভসঞ্চারের পথে বাধা দেয়। তাই প্রয়োজনীয় ওষুধ, ডায়েট ও শরীরচর্চার মাধ্যমে অসুখ ও মেদ সব কিছুকেই নিয়ন্ত্রণে রাখুন। হাইপারটেনশনের রোগী হলে অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিয়ে মন শান্ত রাখুন। অসুখ অবহেলা একেবারেই নয়।

Pregnancy Pregnant Care Health Tips Fitness Tips Child Care
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy