রিভার্স অসমোসিস (আরও) পদ্ধতিকে জল পরিশোধনের প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে সেরা বলা হয়। বিশেষ করে জলের অণু থেকে লবণ এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্য এই পদ্ধতি খুব কার্যকর। কিন্তু ‘আরও পিউরিফায়ার’ সকলের বাড়িতে থাকে না। কিন্তু নিজের সাধ্যের মধ্যেও একাধিক উপায় জল পরিশুদ্ধ করতে পারেন আপনি। জেনে নিন কৌশল।
১. জল ফোটানো
সবচেয়ে পুরনো এবং ভরসাযোগ্য পদ্ধতি। এতে জীবাণু, ভাইরাস ও পরজীবী ধ্বংস হয়। অন্তত ৫–১০ মিনিট ধরে টগবগ করে জল ফুটিয়ে নিলেই হবে। তার পর ঠান্ডা করে পরিষ্কার ও ঢাকনাযুক্ত পাত্রে সংরক্ষণ করুন। নীচে থিতিয়ে পড়া সেডিমেন্ট ছেঁকে জল পান করতে পারেন। যদিও এই পদ্ধতিতে রাসায়নিক বা ভারী ধাতু জল থেকে অপসৃত হয় না।
নিজের সাধ্যের মধ্যেও একাধিক উপায় জল পরিশুদ্ধ করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
২. সেরামিক বা চারকোল দিয়ে জল পরিশোধন
সেরামিক ফিল্টারের ছোট-ছোট রন্ধ্র জীবাণু ও দুষণ আটকাতে সাহায্য করে। এগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও কম খরচেই রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়। আর চারকোল ফিল্টার ক্লোরিন, কীটনাশক বা অস্বস্তিকর গন্ধ দূর করতে কার্যকর। তবে ভাইরাস এবং ভারী ধাতু পুরোপুরি শোধন করতে পারে না। তাই অন্যান্য পদ্ধতিগুলিও পাশাপাশি প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
৩. সোলার ডিজ়ইনফেকশন
সূর্যালোকের অতিবেগনি রশ্মি এবং তাপ একসঙ্গে ব্যবহার করে জল পরিশুদ্ধ করা হয়। এই পদ্ধতি সহজ ও সাশ্রয়ী। স্বচ্ছ প্লাস্টিক বা কাচের বোতলে জল ভরে সরাসরি সূর্যালোকে ৬ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। যদি আকাশ মেঘলা থাকে, তা হলে ২ দিন রাখুন। অতিবেগনি রশ্মি জীবাণুকে নিষ্ক্রিয় করে এবং জলকে পরিশুদ্ধ করে। যে সব এলাকায় অন্য কোনও উপায়ে জল পরিশোধন সম্ভব নয়, সে সব এলাকায় সূর্যালোকই ভরসা। তবে জল যদি পরিষ্কার না হয়, তা হলে হয়তো এই পদ্ধতি যথেষ্ট নয়।
৪. ক্লোরিনেশন
ক্লোরিন ব্যবহার করে জলের জীবাণু ধ্বংস করার পদ্ধতি বেশ প্রচলিত। প্রতি লিটার জলে ২–৪ ফোঁটা গন্ধহীন ব্লিচ মিশিয়ে দিন। নাড়িয়ে দিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। তার পর পান করতে পারেন। কিন্তু যদি দেখেন, জলে অতিরিক্ত ক্লোরিনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, তা হলে আরও খানিক ক্ষণ হাওয়ায় রেখে দেওয়া উচিত। জীবাণু ও ভাইরাস দূর করার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হলেও, ভারী ধাতু দূর করতে অক্ষম।
৫. বাষ্পীকরণ (ডিস্টিলেশন)
এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে প্রায় সব ধরনের দূষণ, ভাইরাস, ভারী ধাতু, লবণ থেকে মুক্ত, স্বচ্ছ জল পাওয়া সম্ভব। জল ফুটিয়ে তার বাষ্প সংগ্রহ করে আলাদা পাত্রে ঠান্ডা করলে সেটি আবার জলের ফোঁটা হয়ে ফিরে আসে, আর সেই ধাপেই দূষিত পদার্থগুলি দূর হয়। এটি সবচেয়ে বিশুদ্ধ জল দেয়, কিন্তু সময়সাপেক্ষ ও খরচ বেশি।