খাওয়ার ওষুধ হিসেবে নয়। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেও নয়। এ বার শরীরের যে কোনও জায়গায় লাগিয়ে নিলেই হবে। তাতেই ত্বকের মাধ্যমে দ্রুত ভিটামিন ঢুকে যাবে শরীরে। শুনতে অবাক লাগছে তো? এমন জিনিস বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এর নাম 'ভিটামিন প্যাচ'।
কী এই ভিটামিন প্যাচ?
পলিমার ম্যাট্রিক্স, যাতে ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান পুড়ে দেওয়া হয়, তাতে জেলের মতো উপাদান থাকে, যার মধ্যেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন দেওয়া থাকে। সেটি হাতে, পেটে বা শরীরের যে কোনও জায়গায় লাগিয়ে নিলে তার থেকে ভিটামিন ও খনিজ ত্বকের রন্ধ্রের মধ্যে দিয়ে সরাসরি শরীরে ঢুকে রক্তে গিয়ে মিশে যাবে। ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ার বদলে এখন এই প্যাচের মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করছেন অনেকে।
কাদের সুবিধা?
১) দেশের ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এর তথ্য বলছে, খুব দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত কারও যদি খাওয়ার ওষুধ গিলতে সমস্যা হয়, তা হলে ভিটামিন প্যাচ ব্যবহার করা যেতে পারে।
২) খাদ্যনালিতে সংক্রমণ বা লিভারের অসুখে যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা যদি ভিটামিন প্যাচ লাগিয়ে রাখেন, তা হলে দিনভর অল্প অল্প করে ভিটামিন ঢুকবে শরীরে। প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি হবে না।
৩) অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগলে এই ভিটামিন প্যাচ কার্যকরী হতে পারে। সে ক্ষেত্রেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরে ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজের সরবরাহ অব্যাহত রাখা যাবে।
অসুবিধা কী?
ভিটামিন প্যাচের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। অনেকেই বলেন, খাওয়ার ওষুধের মতো কার্যকরী নয় ভিটামিন প্যাচ। কারণ, সব রকম ভিটামিন প্যাচের মাধ্যমে শরীরে যাওয়া সম্ভব নয়। ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি১২ ত্বকের মাধ্যমে শরীরে দ্রুত ঢুকতে পারবে। কিন্তু যে সব ভিটামিনের অণুর আকার বড়, যেমন ভিটামিন এ, ই, কে এবং সি, সেগুলি প্যাচের মাধ্যমে অত তাড়াতাড়ি শরীরে ঢুকতে পারবে না।
অসুবিধা আরও কিছু আছে। যেমন, প্যাচ দীর্ঘ ক্ষণ লাগানো থাকলে তা থেকে ত্বকে চুলকানি বা অ্যালার্জি হতে পারে। এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, ভিটামিন ট্যাবলেটের নির্দিষ্ট ডোজ় থাকে। কিন্তু প্যাচ লাগালে কী পরিমাণে ভিটামিন শরীরে ঢুকবে, তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। এক দিনে বেশি ডোজ়ে ভিটামিন শরীরে গেলে তার নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কেবল প্যাচ কিনে লাগিয়ে নিলে কিন্তু উল্টো ফল হতে পারে।