হাসপাতাল থেকে এক রোগিণীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখালেন পরিজনেরা। প্রতিবাদে পথ অবরোধও হল। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুরের বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত রবিবার কিডনির সমস্যা ও মানসিক কিছু সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শ্যামনগর চার নম্বর বিবেকানন্দ গড়ের বাসিন্দা বাণী শর্মাকে। বাণীদেবী পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁর স্বামী মানিক শর্মা অন্ধ। তিনি গান গেয়ে ভিক্ষে করেন। ওই রোগিণীর দায়িত্বে থাকা নার্সরা জানিয়েছেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকেই বাণীদেবী অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাথরুমে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। বহু চেষ্টা করে প্রায় চার ঘণ্টা পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সন্ধ্যায় মানিকবাবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেও গিয়েছিলেন।
বাণীদেবীর পরিজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বুধবার সকালে হাসপাতালে খাবার দিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, মঙ্গলবার রাত ২টো থেকে খোঁজ মিলছে না বাণীদেবীর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগী কল্যাণ সমিতিকে বিষয়টি জানান। পুলিশেও নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে। বি এন বসু মহকুমা হাসপাতাল গোটা ব্যারাকপুর মহকুমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। অন্যান্য রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, ভিজিটিং আওয়ারেও নিরাপত্তারক্ষীরা নিয়মের কড়াকড়ি দেখিয়ে তাঁদের ঢুকতে দিতে চান না। অথচ এক জন রোগিণী গভীর রাতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেলেন আর রক্ষীরা কিছু জানতে পারলেন না?
বাণীদেবীর এক প্রতিবেশী শম্ভু হালদার বলেন, “ওই মহিলা দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। রাতদুপুরে হাসপাতাল থেকে এক রোগিণী বেরিয়ে গেলেন আর কর্তৃপক্ষ কিছু জানতে পারলেন না, তা কেমন করে হয়? হাসপাতাল থেকে কেন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ঘটনাটি জানানো হল না?”
কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই এই ঘটনা, এমন অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বি টি রোড অবরোধও করেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “কী ভাবে এমন ঘটল, তা হাসপাতাল সুপারকে খতিয়ে দেখতে বলেছি। তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে। পুলিশকেও বলেছি অবিলম্বে ওই রোগিণীকে খুঁজে বার করতে।” হাসপাতালের সুপার মৃদুল বসু বলেন, “তদন্ত চলছে। হাসপাতালের তরফ থেকেও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে।” ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান সি সুধাকর বলেন, “ওই রোগিণীর পরিবার প্রথমে নিখোঁজের অভিযোগ ও পরে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছে। তার ভিত্তিতে এক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালককে আটক করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy