প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনের প্রেসিডেন্ট চি শিনফিং। —ফাইল চিত্র
দু’দিনের বেসরকারি ভারত সফরে আসছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ১১ ও ১২ অক্টোবর শুক্র ও শনিবার তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বেসরকারি বৈঠক (ইনফরমাল সামিট) হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। বেসরকারি সফর বলে চিনফিংয়ের সফরসঙ্গী থাকবেন সেখানকার কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো সদস্যরাও।
এই নিয়ে দ্বিতীয় বার বেসরকারি বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। এর আগে ২০১৮ সালে চিনের ইউহানে মোদী-শিনফিংয়ের একই রকম বৈঠক হয়েছিল। বেসরকারি সফর বলে কোনও চুক্তি বা মৌ স্বাক্ষর হবে না। যৌথ কোনও বিবৃতি বা সাংবাদিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনাও খুবই কম। তবে দ্বিপাক্ষিক, এশিয়ার আঞ্চলিক এবং বিশ্বের নানা বিষয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনা হবে বলে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে চিনফিংয়ের সফরের বিষয়ে জানিয়ে ভারতে চিনের রাষ্ট্রদূত সান ওয়েডং বলেছেন, ‘‘১১ ও ১২ অক্টোবর চিনের প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চেন্নাইয়ে বৈঠক করবেন। আশা করি দু’জনের বন্ধুত্ব ও কৌশলগত আলোচনা ভারত-চিন সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।”
বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাইয়ের মালাপ্পুরমে দু’জনের এই বৈঠক হবে। প্রতিনিধি স্তরের পাশাপাশি একান্তে কথা বলবেন মোদী-চিনফিং। দু’দেশের মধ্যে যে সব বিষয়ে মতবিরোধ ও দ্বন্দ্ব রয়েছে, সেগুলি মেটানোর চেষ্টা করা হবে। নির্দিষ্ট কোনও অ্যাজেন্ডা না থাকলেও উঠতে পারে সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসে অর্থ জোগান ও মদত দেওয়ার মতো বিষয়।
আরও পডু়ন: ‘আমাদের চুপ করানো যাবে না’, দেশদ্রোহিতার মামলার প্রতিবাদে এ বার চিঠি নাসিরুদ্দিনদের
মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করা হোক, কিংবা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যের প্রশ্ন— চিন বরাবরই বিরোধিতা করে এসেছে। আন্তর্জাতিক অধিকাংশ ইস্যুতে দিল্লির বিপক্ষে এবং ইসলামাবাদের পক্ষে দাঁড়ানোই বেজিংয়ের দস্তুর হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের ‘সব পরিবেশের বন্ধু’ বলেও পরিচিত চিন। ভারত-চিন সীমান্ত ইস্যুতেও রয়েছে দু’দেশের মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহ। তার উপর গত ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পরেও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে ভারতের। স্বাভাবিকভাবেই দিল্লি-বেজিং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও তার আঁচ লেগেছে।
এই মুহূর্তে চিন সফরে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর সফলকালেই চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানাল, দ্বিপাক্ষিক স্তরে আলোচনা করে ভারত ও পাকিস্তানের উচিত কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা।দুই শীর্ষনেতার বৈঠকের আগে যা নিঃসন্দেহে নয়াদিল্লিকে স্বস্তিতে রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার প্রভাব বেশি প্রকট ভারতে, বললেন নয়া আইএমএফ প্রধান
এই পরিস্থিতিতেই ভারত সফরে আসছেন চিনফিং। সূত্রের খবর, বেজিংয়ের এই ইসলামাবাদ-প্রীতি কমাতে চেষ্টার কসুর করবেন না মোদী। মালাপ্পুরম বৈঠকে ইন্দো-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর চেষ্টা চলবে। ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার পক্ষেও কথা হওয়ার সম্ভাবনা দুই নেতার মধ্যে। তবে দু’পক্ষের আলোচনায় শিনফিংয়ের উপর পাকিস্তানের প্রভাব ফ্যাক্টর হবে কিনা, সেটাই ভাবাচ্ছে মোদী শিবিরকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy