উপযুক্ত নথিপত্র না পাওয়ায় ভাষাশহিদ কমলা ভট্টাচার্য স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ এ বার অন্তত হচ্ছে না। আজ এ কথা জানিয়েছেন আসাম সার্কেলের পোস্টাল সুপার ঋজু গঙ্গোপাধ্যায়।
গত বছর ১৬-১৭ সেপ্টেম্বর শিলচরে আয়োজিত হয়েছিল জেলা পর্যায়ের ডাকটিকিট প্রদর্শনী। সেই উপলক্ষে বঙ্গ ভবন ও বরাক ব্লাড ব্যাঙ্কের ‘বিশেষ কভার’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। তখনই ১৯৬১-র ভাষা আন্দোলনে প্রাণ বিলিয়ে দেওয়া কমলা ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে ডাকটিকিট প্রকাশের দাবি করেছিল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। পরে একই দাবিতে ঋজুবাবুর হাতে স্মারকপত্র দিয়েছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক সংস্থা, ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতি ও শহিদ কমলা মূর্তি স্থাপন কমিটি। তাঁদের দাবি, বিশ্বের প্রথম মহিলা ভাষাশহিদ কমলা ভট্টাচার্যই।
আগামী ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি শিলচরে আর একটি ডাকটিকিট প্রদর্শনী হতে চলেছে। এটি হবে রাজ্য পর্যায়ে। তার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতেই আজ শিলচরে এসেছেন ঋজুবাবু। তিনি জানান, এ বারের প্রদর্শনীতে ছ’টি বিশেষ কভারের উন্মোচন হবে। সব ক’টি বরাক উপত্যকার আবেগের সঙ্গে জড়িত।
আর কমলা ভট্টাচার্য স্মারক ডাকটিকিট? ডাক-কর্তা জানান, তিনিও মনেপ্রাণে চাইছিলেন মহিলা ভাষাশহিদ স্মরণে কিছু করতে। কিন্তু গত বছর যাঁরা এই দাবি জানিয়েছিলেন, তাঁদের কেউ উপযুক্ত নথিপত্র জমা করতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘ডাকটিকিটের জন্য রাজ্য গেজেট বা জেলা গেজেটে তাঁর মৃত্যুর উল্লেখ থাকলেই হল। না পেলে স্থানীয় ইতিহাস পর্ষদ বা এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের শংসাপত্র পেলেও কাজটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু কেউই তেমন কিছু দিতে পারল না।’’ তবে ঋজুবাবু স্বীকার করেন, এ পর্যন্ত তিনি এই দাবির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেননি। কাগজপত্র পেয়ে গেলে তার অনুমোদনে যে তেমন সমস্যা নেই, তাও জানান তিনি।
এ দিকে, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য এবং সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী ডাক বিভাগের কাঁধেই দায় চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিভাগীয় তরফে প্রথমে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তাতে ফর্ম পূরণ করে পাঠানোর কথা বলা হলেও কোনও ফর্ম জুড়ে দেওয়া হয়নি। পরে তাঁরা ফর্মের কথা লিখলে ফের আগের মতোই আরেকটি চিঠি আসে।’’ তখন বরাক বঙ্গের পক্ষ থেকে স্থানীয় ডাককর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফর্ম সংগ্রহ করা হয়। তাতে কমলা ভট্টাচার্যের পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট, পুলিশ রিপোর্ট, সরকারি ঘোষণাপত্র ইত্যাদি অনেক কিছু জমা করতে বলা হয়েছে। তৈমুরবাবু বলেন, এই সব পাওয়া সহজ কথা নয়। ১৯৬১ সালের ময়না তদন্তের রিপোর্ট মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাওয়া যাবে কিনা, তিনি এখনও সংশয়ে রয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে কথাবার্তা চলছে মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে। সরকারি ঘোষণাপত্র পাওয়া একেবারেই অসম্ভব।’’ তবে পুলিশ রিপোর্ট দ্রুত হাতে পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।
তৈমুর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই।’’ কাগজপত্রের ব্যাপারে ডাকবিভাগকে নমনীয়তা দেখানোর আর্জি জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy