ভিডিয়ো কনফারেন্সে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেরা জানিয়ে দেন, ১৪ এপ্রিলের পরেও লকডাউন চলবে আরও দু’সপ্তাহ। নবীন পট্টনায়ক ওড়িশায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এবং অমরেন্দ্র সিংহ পঞ্জাবে ১ মে পর্যন্ত লকডাউন চলার কথা ঘোষণা করে রেখেছেন আগে থেকেই।
লকডাউনের মেয়াদ দু’সপ্তাহ বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হোক— বেশির ভাগ মুখ্যমন্ত্রীই আজ এই পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাতে সহমত পোষণ করেন। তবে লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসতে কী ভাবে মানুষের জীবনযাত্রা ধাপে ধাপে সচল করে তোলা যায়, সে দিকে এ বার নজর দিতে চাইছেন মোদী ও রাজ্য সরকারগুলি। শুধু লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোই নয়, তার থেকে বেরোনোর দিশা তথা ‘এগজ়িট প্ল্যান’ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘জান হ্যায় তো জহান হ্যায়’ নীতি থেকে এগিয়ে সরকারের এখন লক্ষ্য, ‘জান ভি, জহান ভি’। অর্থাৎ জীবনরক্ষার পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের দিকটিও গুরুত্ব পেয়েছে এ দিনের চার ঘণ্টার বৈঠকে।
এই সংক্রান্ত পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মোদী। প্রস্তাব এসেছে, গোটা দেশকে লাল, কমলা ও সবুজ তিন ভাগে ভাগ করে এগোনো হোক। কোভিড-১৯ রোগী বেশি রয়েছে, এমন এলাকা লাল। সেখানে সব কাজকর্ম বন্ধ। অর্থাৎ পুরো লকডাউন। কম সংখ্যক রোগী মিলেছে, এমন এলাকাকে কমলা চিহ্নিত করে কৃষিকাজের মতো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। এক-দু’সপ্তাহে এক জনও আক্রান্ত না-হলে, সেই এলাকাকে সবুজ ধরে নিয়ে, ছোট-মাঝারি শিল্পগুলিকে কাজ শুরু করতে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, সংক্রমণের তীব্রতা বুঝে ধাপে ধাপে নির্মাণ ও অন্য শিল্পের কাজ শুরু করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর জবাবি বক্তব্যে জানান।
কৃষিকাজ এবং নদী সংক্রান্ত বাণিজ্য, মাছ চাষ যাতে স্বাভাবিক করা যায়, সে দিকেও নজর দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানাচ্ছে, কৃষকদের পণ্য বিপণন সহজ করতে মান্ডিকেই তাঁদের দরজায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছে কেন্দ্র। এ জন্য সংশ্লিষ্ট আইনের দ্রুত সংস্কার করা হবে।
বৈঠকে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করে মোদী জানান, নোভেল করোনাভাইরাস রোধে যে সব পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার ফলাফল বুঝতে আরও তিন-চার সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তিনিও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন চালু রাখার ব্যাপারে রাজ্যগুলির সঙ্গে সহমত। মোদীর তরফে এখনও সরকারি ঘোষণা না-হলেও রাজ্যে-রাজ্যে মেয়াদবৃদ্ধির কথা জানিয়ে দেন মমতা ও অন্য মুখ্যমন্ত্রীরাই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল ‘লকডাউনের মেয়াদ দু’সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য’ প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় টুইটও করেন। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনেক উন্নত দেশের থেকে আজ ভারতের অবস্থা ভাল। কারণ, আমরা আগে থেকেই লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন তা তুলে নিলে, যেটুকু লাভ হয়েছিল, সব জলে যাবে।’’ পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়নস্বামী বৈঠকের পর জানান, “সিংহভাগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই আরও দু’সপ্তাহ লকডাউন চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও তা-ই চাইছেন।’’
বৈঠকে সড়ক, রেল বা বিমানে বিদেশ, ভিন্ রাজ্যের যাত্রী আসা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে সব রাজ্যই।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy