Advertisement
E-Paper

সাবধান হলেই ক্ষীণদৃষ্টির সম্ভাবনা এড়ানো যায়

কিন্তু কী ভাবে? অপটোমেট্রিস্ট শুভাশিস চৌধুরী-র সঙ্গে কথা বললেন রুমি গঙ্গোপাধ্যায়প্র: ডায়বেটিস থেকে চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেল। এমনটা আজকাল প্রায়ই শুনি। এ দিকে ঘরে ঘরে ডায়বেটিস... উ: ডায়বেটিস ধরা পড়লেই প্রথম থেকে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। রক্তে সুগারের মাত্রা যেন না বাড়ে।

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০০:০৩

প্র: ডায়বেটিস থেকে চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেল। এমনটা আজকাল প্রায়ই শুনি। এ দিকে ঘরে ঘরে ডায়বেটিস...

উ: ডায়বেটিস ধরা পড়লেই প্রথম থেকে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। রক্তে সুগারের মাত্রা যেন না বাড়ে।

প্র: ডায়বেটিস থেকে যে এই ক্ষীণদৃষ্টি, এটা কি কোনও ভাবে আটকানো যায় না?

উ: দীর্ঘ দিন রক্তে সুগারের মাত্রা খুব বেশি থাকলে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টিশক্তি আবছা হতে হতে এক সময় ক্ষীণ হয়ে আসে।

প্র: তখন চশমা, লেন্স কিছুতেই কাজ হবে না?

উ: না।

প্র: তখন আর দেখতে পাব না?

উ: এমনিতে পাবেন না। তবে ক্ষীণদৃষ্টির চিকিৎসায় এখন কিছু অত্যাধুনিক ডিভাইস এসেছে। লো ভিশন এড। যা দিয়ে স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পাবেন।

প্র: কী রকম?

উ: ধরুন কিছু ডিভাইস আছে যা কাছের জিনিস বা কোনও ছোট লেখাকে খুব বড় করে দেখায়। ফলে ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন কেউ সেটি দেখতে পান। পাশাপাশি দূরের জিনিসকেও বড় করে দেখায়। ফলে সেগুলোও দেখা যায়। কিছু বিশেষ ধরনের চশমাও রয়েছে, যা দৃষ্টিশক্তিকে স্বাভাবিক করে দেয়। অর্থাৎ এই জিনিসগুলোর মাধ্যমে আবার দেখতে পাবেন।

প্র: চোখে যন্ত্রপাতি পরে থাকতে হবে? অস্বস্তি লাগবে তো?

উ: সে রকম ভারী কিছু তো নয়। হয়তো চশমার ওপর ছোট্ট একটা যন্ত্র লাগিয়ে দেওয়া হল। যা দিয়ে আপনি দূরের জিনিস দেখতে পারবেন, আবার কাছের ছোট লেখাও দেখতে পারবেন। একেবারে কিছু দেখতে না পাওয়ার থেকে এটা তখন অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হবে।

প্র: কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যাবে আগের মতো?

উ: হ্যাঁ। পুরোপুরি। পেপার পড়তে পারবেন, দূরের লোককে চিনতে পারবেন। চেক সই করতে পারবে। ছোট লেখা পড়তে পারবে। কম্পিউটারে কাজ করতে পারবেন।


প্র: যাঁরা জন্ম থেকেই চোখে দেখতে পান না, তাঁদের ক্ষেত্রে লো ভিশন এড কাজ করবে?

উ: না। দুই চোখে আবছা দেখলে তবেই লো ভিশন এড কাজ করে। কেউ যদি একটা চোখে আবছা দেখেন, অন্য চোখে স্বাভাবিক দেখেন, তবে কিন্তু লো ভিশন এড লাগবে না।

প্র: ক্ষীণদৃষ্টিকে আটকানোর কোনও উপায় নেই?

উ: প্রথম অবস্থায় থাকলে কিছু ভিটামিন জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা হয়। তাতে খানিকটা কাজ হয়। নইলে আস্তে আস্তে দৃষ্টিশক্তি কমে আসতে থাকে। অপারেশন, ওষুধ বা চশমা দিয়ে এর কোনও প্রতিকার হয় না। তাই শুধু ডায়বেটিস নয়, চোখের সমস্যা থাকলেই প্রথম থেকে সাবধান হবেন।

প্র: কী ধরনের সমস্যা?

উ: ছোট থেকে অনেকেরই মায়োপিয়া থাকে। মানে দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধে হয়। এ সব ক্ষেত্রে চোখের পাওয়ার ক্রমাগত বাড়তে বাড়তে একটা সময় ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা চলে আসতে পারে। গ্লুকোমার চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে ক্ষীণদৃষ্টি হতে পারে। রাতকানার মতো কিছু অসুখেও ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা তৈরি হয়। রেটিনা ডিটাচমেন্টের অপারেশনের পরও অনেকে ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যায় ভোগেন। বয়সের কারণেও এমনটা হতে পারে। তা ছাড়া ডায়বেটিসের কথা তো আগেই বললাম।

প্র: ক্ষীণদৃষ্টির দিকে এগোচ্ছি, বুঝব কী করে?

উ: চোখে আবছা দেখবেন। টিভি দেখতে বা বই পড়তে, বা পেপারের ছোট লেখা পড়তে অসুবিধে হবে। এমনকী রান্নাবান্না, বা সাধারণ দোকানহাট করার জন্য চলাফেরা করতেও অসুবিধে হবে। কাছের জিনিসও আবছা দেখবেন। মোট কথা স্বাভাবিক জীবনযাপনে অসুবিধে হবে। এ রকম হলে বুঝতে হবে ব্যাপারটা ক্ষীণদৃষ্টি।

প্র: কোন বয়স থেকে সাবধান হতে হবে?

উ: যে কোনও বয়সে যে কারওরই হতে পারে।

প্র: যে কোনও বয়স মানে বাচ্চাদেরও হয়।

উ: হ্যা। কার কখন হবে, আগে থেকে বলা যায় না।

প্র: বাচ্চাদের চোখের সমস্যা কী করে বুঝব?

উ: বাচ্চারা চোখ কুঁচকে ব্ল্যাক বোর্ড দেখলে, বা পড়ার সময় ঘাড় নিচু করে রাখলে চোখের সমস্যার কথা ভাবতে হবে। সমস্যা থাকুক না থাকুক, ছয় মাস অন্তর অন্তর বাচ্চাদের চোখ দেখিয়ে নেওয়া দরকার।

প্র: ক্ষীণদৃষ্টি এড়াতে কী করব?

উ: ছোট থেকে মায়োপিয়া থাকলে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত আলোতে পড়াশুনো করবেন। দিনের বেলায় সূর্যের আলো, রাতে সিক্সটি পাওয়ারের বালবের আলো। দীর্ঘ ক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করতে হলে আধঘণ্টা অন্তর অন্তর চোখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দেবেন। তাতে চোখের ওপর চাপ কম পড়বে। একটানা কম্পিউটারে কাজ করতে গিয়ে মাথা যন্ত্রণা হতে থাকলে অ্যান্টিগ্লেয়ার চশমা পরে নেবেন। টিভি অন্তত ১০ ফুট দূর থেকে দেখবেন। একটানা টিভি দেখবেন না। শুয়ে শুয়ে মোটেই পড়বেন না। পড়ার সময় বইয়ের সঙ্গে ১২ ইঞ্চি দূরত্ব যেন বজায় থাকে। চোখে আঘাত লাগলে সতর্ক হবেন।

প্র: এসব মানা সত্ত্বেও দৃষ্টি ক্ষীণ হতে পারে?

উ: চোখে আঘাত লাগলে বা ভারী কিছু তুললে রেটিনা ছিঁড়ে যেতে পারে। যার থেকে পরবর্তীতে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসতে পারে।

যোগাযোগ- ৯৮৩০০৪৬৩৩২

shubhashis chowdhury rumi gangopadhyay eye sight sugar diabetes health patrika anandabazar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy