E-Paper

রুমালে মুখ ঢেকেও গেয়েছেন মঞ্চে

যাতে সরকার তাঁকে শনাক্ত করতে না পারে। তিনি সন্জীদা খাতুন। পরিচয়ে প্রধানত সঙ্গীতশিল্পী হলেও তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, গবেষক, শিক্ষক, সংগঠক এবং আরও অনেক কিছু। বাংলাদেশের নানা দুঃসময়ে মানবতার আলো জ্বালিয়ে রেখেছিল তাঁর সংগঠন ‘ছায়ানট’। তানভীর নভেদ্

তানভীর নভেদ্

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৫ ০৮:৩৯
মনস্বিনী: সন্জীদা খাতুন। তাঁর জীবন যেন মানবতার এক অনন্ত রোশনাই।

মনস্বিনী: সন্জীদা খাতুন। তাঁর জীবন যেন মানবতার এক অনন্ত রোশনাই।

বড়দের রাখঢাক নেই; ছোটরা ডাকে আড়ালে-আবডালে। কী বলে? না, পেঁচী! ডাকনাম? বাড়ির বড় সবাই অবজ্ঞাভরে হাঁকে মিনা। ছোটদের সমীহ মিনুতে। ভাইবোনের ভিড়ে সবচেয়ে কেলেকিষ্টি। রঙে না মিলুক, নিশ্চয়ই কোনও মিল ছিল পেঁচার সঙ্গে। সাধে কি আর অমন নাম মেলে!

মিনা, মিনু যে যা-ই ডাকুক, পোশাকি নাম সন্‌জীদা। যার একাধিক অর্থ— রাশভারী, শান্ত, সমঝদার। আম্মুর থেকে যোগ, খাতুন। মানে লেডি। সে নামই যে পরিণাম হয়ে উঠবে, কে তা জানে! যারা দূরের তারা দেখে সন্‌জীদা রাশভারী। যারা বিরোধী তারা ধরে নেয় সন্‌জীদা সহজ লক্ষ্য, নির্বিরোধী, শান্ত। যারা কাছের তারা জানে সন্‌জীদা সমঝদার, হুটহাট কিছু করে-বসায় নেই। মিনুর আজীবনের বৈশিষ্ট্য আপাত গুরুগম্ভীর, ধীরস্থির, বিচক্ষণ এবং আদর্শে অনড়, পরম মানবিক, প্রতিবাদে তেজিয়ান।

মোতাহার-সাজেদার এগারো ছেলেমেয়ে। বড় থেকে ছোটর ফারাক কুড়ি বছরের। মনোযোগ-আদরযত্নে ভাগাভাগি-টানাটানি। আব্বু বরাবরই জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভাবুক। কোরান দাবা শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির একনিষ্ঠ সাধক। বাড়ির বাইরে মুখোমুখি হয়ে গেলে অচেনা মানুষের প্রতি সবিনয় সৌজন্যে নিজের ছেলেমেয়েকেও সালাম দিয়ে বসেন। আলাভোলা যে মানুষ পাজামা পরতে গিয়ে লুঙ্গি ছাড়তে ভোলেন, এক পায়ে স্যান্ডেল তো অন্য পায়ে জুতো পরে ঘুরে বেড়ান, তাঁর দোষ ধরবার জো কী!

দিনরাত্রি বাড়িতে ছেলেপুলের কিচিমিচি আর চিল-চিক্কুর। তায় আম্মুর লেঠো শাসন আর কড়া চোখরাঙানিতে কাকপক্ষীও ১১৩ নম্বর সেগুন বাগানে বসতে সাহস পায় না। উদাসীন আব্বু, শশব্যস্ত আম্মু, ভাইবোনের ক্যাঁওম্যাও। ভাগে-যোগে মিনুর কপালে জুটলে জোটে মনোযোগের ভগ্নাবশেষ। সেই ভাঙা যত্নআত্তি জোড়া দিয়ে দিয়ে, খেয়ালের আড়ালে তৈরি হয় স্বাবলম্বী-জেদী-নীতিবাদী সঙ্কটে অবিচল এক সত্তা।

আদব-কায়দা আর পর্দায় নজরুলের বন্ধু ‘মতিহার’ পরিবার রক্ষণশীল। ওই ঘেরাটোপেও নিরন্তর চলে বিবেক, মনুষ্যত্ব আর সাম্যের উদার চর্চা। তৈরি হয় সততার টনটনে জ্ঞান, সকল মন আর কাজে অন্তর্লীন ভালবাসা-মাখামাখি চেতনা। বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা কাজী মোতাহার হোসেন। গোঁড়ামি ঝেঁটিয়ে, সংস্কার ভেঙে শুরু থেকেই বাড়িতে তৈরি করেছেন মানবতা, সঙ্গীতশিক্ষা আর বাঙালির আপন সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশ। বড়দি শিখতেন, বাজাতেন। গাইতেন অন্য দিদিরাও। নাচ-অভিনয় আবৃত্তি খেলা, বাদ যেত না কিছুই। মিনুর খেলা আর কবিতার শখ, গানের সঙ্গে সখ্য সেই পাঁচ বছর থেকেই। আব্বু গাইতেন ‘মম যৌবননিকুঞ্জে গাহে পাখি’, বড়দি ‘তৃষ্ণার জল এসো এসো হে’। সে-ই মিনুর রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে পরিচয়। তবে আব্বুকে বলেকয়েও প্রথম-প্রথম মিনু পেয়েছেন শুধু শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আর নজরুলের গানের তালিম। আবেগী-অভিমানী মিনু দু’হাত ভরে তা-ই নিয়েছেন।

একটু বড় হতেই শিশুদের সংগঠন মুকুল ফৌজে ভিড়ে গেলেন মিনু। সংস্কৃতিপ্রেমের সঙ্গে পাকা হতে থাকে শৃঙ্খলাবোধ, সংগ্রামী মনোবল। ব্রতচারীতে খুঁজে পান কায়মনে বাঙালি থেকে বিশ্বমানব হয়ে ওঠার দিশা। দিনে দিনে সব অর্জন ছাপিয়ে জেগে ওঠে দেশ ও দশের প্রতি দরদ-ভালবাসা, প্রখর সংবেদন।

বাহান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি রুখতে পুলিশের গুলি। রাজপথে প্রাণ ঝরেছে। প্রতিবাদে চঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মিনু। জড়িয়ে পড়েন ভাষা আন্দোলনে। চড়তে থাকে আপন সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে পথ চলার, পথ দেখানোর আকাঙ্ক্ষা। ঘটল জীবনাদর্শের বীজবপন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসানের মধুর বাগ্মিতায় হৃদয়ের গভীরে নবরূপে ঠাঁই নেন রবীন্দ্রনাথ। জীবনের পাথেয় হয়ে ওঠে রবীন্দ্রদর্শন। কাছ থেকে রবীন্দ্রনাথকে উপলব্ধি করতে ছুটে যান শান্তিনিকেতনে। বাংলার সাহিত্যতীর্থ ছুঁতে ছুঁতে সেঁচে নেন প্রকৃতি-সঙ্গীতামৃত। মনন ঋদ্ধ করে অনুপমদের সঙ্গসুধা। মিনুর শাশ্বত জীবন যার পূর্ণাঙ্গ প্রতিস্ফুরণ।

মানুষ হিসেবে আরও বোধন নিয়ে ঘরে ফিরেই মাঠে নামার তাড়া। ওয়াহিদুলের হাত ধরাধরি করে শুরু হয় সান্নিধ্যের সকল মনে দেশ-জাতি-বাংলা-মনুষ্যত্বকে ভালবাসার বীজ বোনা; নিজভূমে কোণঠাসা বাঙালিকে জাগানো; স্বাধিকার অর্জনের অভিযাত্রা। অথচ তখন তাঁকে আঁকড়ে ধরছে সরকারি কলেজে শিক্ষকতা, সাহিত্যচর্চা, বেতারে গান-নাটক করে নিরাপদ সুখের জীবন কাটানোর সুযোগ। কিন্তু না, ব্যক্তিসুখ নয়, মিনুর ধর্ম হয়ে উঠল মানুষের কাছে যাওয়া, মানুষের জাগরণ, মানুষের মঙ্গল।

পরাধীন দেশে ব্যক্তিগণ্ডি পেরিয়ে সমষ্টিকে জড়ানোর প্রথম সুযোগ, রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ। বিচারপতি মাহবুব মুর্শেদ, শিক্ষাবিদ গোবিন্দচন্দ্র দেব, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে নিয়ে কিছু সমমনা বাঙালি সমবেত হলেন। পাকিস্তানি রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঢাকায় হয় রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন। সার্থক আয়োজনে মিনুরা তৃপ্ত হয়ে বসে থাকেননি। নারী জাগরণের অগ্রদূত কবি সুফিয়া কামাল, সমাজসেবক মোখলেসুর রহমান সিধু ও শামসুন্নাহার রহমান রোজ, সাংবাদিক আহমেদুর রহমান, শিল্পী ইমদাদ হোসেন এবং সচেতন বাঙালি হোসনে আরা মাক্কি, সাইদুল হাসান, ফরিদা হাসান, মিজানুর রহমান ছানা ও সাইফউদ্দীন আহমেদ মানিককে নিয়ে সমগ্র বাঙালির সাংস্কৃতিক উজ্জীবনের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয় ‘ছায়ানট’। ওই জোটের সামনে সাংবাদিক ওয়াহিদুল হক, পিছনের অন্তরালে সরকারি চাকুরে সন্‌জীদা।

যে বাংলা থেকে চুটকি গানের ফরমায়েশ শুনে মর্মাহত হয়ে ফিরে যান বড়ে গোলাম ‌আলী, সেই তল্লাটে রুচির পরিবর্তন আর মননের উজ্জীবন ঘটাতে একষট্টি-বাষট্টিতে একে একে বড় পরিসরে পুরনো বাংলা গানের আসর, ঘরোয়া শ্রোতার আসর, ঋতুরাজ বসন্ত নিয়ে প্রকৃতির কোলে উৎসবের আয়োজন করে চলে ‘ছায়ানট’। এক ছাতার তলে একত্র হতে থাকে আপন সংস্কৃতিতে প্রেমাসক্তরা। সার্থকতা মিললেও অনুভব জাগে, চেনামুখের ফিরে ফিরে পরিবেশনে হয়তো মুখ ফেরাবে মানুষ। দুঃসাহসিক ‘ছায়ানট’, চাঁদা দিয়ে খুলে বসে সঙ্গীত বিদ্যায়তন। কেবল মুষ্টিমেয় সুদক্ষ গাইয়ে-বাজিয়ে নয়, শিল্পসত্তা জাগিয়ে নতুন নতুন শিল্পী তৈরির পাঠশালা।

দিনে দিনে ভিড় বাড়ে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, রবীন্দ্র-নজরুলের গান, তবলা, সেতার, বেহালা, বাঁশি, সরোদ। মানুষ টানার অফুরান রসদ। চোখ টেনেছে সরকারের। শুরু হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা। ‘ছায়ানট’ হিন্দু কবির গানের চর্চা করে বলে প্রচার চলে। রবীন্দ্রনাথ না হয় অমুসলিম, কিন্তু হিন্দুও তো নন! একেশ্বরবাদী, ব্রহ্মে বিশ্বাসী। তবে নজরুল? আসলে এর মানে ‘ছায়ানট’ তার লক্ষ্যে সফল হয়েছে। ওরা তটস্থ, বাঙালি জাগছে। তাই বাংলা একাডেমির বারান্দা থেকে ইংলিশ প্রিপারেটরি স্কুল। সেখান থেকে আজিমপুর কিন্ডারগার্টেন। শেষতক লেক সার্কাস গার্লস হাই স্কুল। ছুটির দিনের সঙ্গীতবিদ্যায়তন বলে লেখাপড়ার নিয়মিত স্কুলগুলোতেই সুবিধে। কিন্তু যত সুবিধেই হোক, সরকার তো পিছু ছাড়ে না, ‘ছায়ানট’কে থিতু হতে দেয় না। স্কুল ম্যানেজমেন্টকে হাত করে বা ভয় দেখিয়ে কেবল তাড়িয়ে বেড়ায়।

কিন্তু চাপানো সংস্কৃতিতে দমবন্ধ বাঙালি জনস্রোতকে রোখে কে! ‘ছায়ানট’ অর্থসামর্থ্যে দীন কিন্তু মনোবলে ঋদ্ধ। অবিচল। বিপদে কৌশলীও। কলেজশিক্ষক মিনু নীরবে কাজ করে চলেন, কোনও খাতায় নাম ওঠে না। মঞ্চে না উঠে আড়াল থেকে, এমনকি, মুখে রুমাল চেপেও গান গেয়ে দেন।

পাঁচ-সাত বছরেই ‘ছায়ানট’-এর ব্যাপ্তি, ২০-২৫ জন থেকে হাজারের কাছে গাইয়ে; বিস্তৃতি, গণমানুষের গানের চর্চা, সংস্কৃতির দুই প্রাণপুরুষ রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের জন্মতিথি ও প্রয়াণবার্ষিকী অনুষ্ঠান, শরতের উৎসব, বর্ষামঙ্গল, বর্ষবরণ, দাঙ্গা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপন্ন জনপদের সেবায়-ত্রাণে ছুটে যাওয়া। শাসকেরা নেয় নয়া কৌশল। রমনা উদ্যানের বর্ষববরণ নাকি সূর্যবন্দনার আয়োজন! সেই জন্যই কি বছরের নতুন সূর্যোদয়ের পহেলা বৈশাখে পঞ্চবটীর একটি বটমূলের উদ্দেশে জনতার ঢল থেমেছে?

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আশ্রিত সময়েও ছায়ানট উদ্যমী। সন্‌জীদা, ওয়াহিদুল, হাসান ইমাম মিলে গড়ে তুললেন মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থা। যুদ্ধে যেতে অক্ষম শিল্পীদের জড়ো করে শিবির ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধাদের মনে আগুন জ্বালিয়ে রাখা, সর্বস্ব খুইয়ে মনমরা শরণার্থীদের চাঙ্গা করা। ন’মাসেই বীর বাঙালি আদায় করেছে মুক্ত স্বদেশ। ‘ছায়ানট’ পেয়েছে নিজ সংস্কৃতির মুক্ত সৌরভ।

আপন ঠিকানায় থিতু বাঙালি। কিন্তু স্থির থাকতে দেবে কি স্বাধীনতা আর বাঙালিয়ানায় অবিশ্বাসীরা! শুরু হয় দূরদর্শী সন্‌জীদাদের মানুষকে জাগ্রত রাখার অধ্যায়। ‘ছায়ানট’ ব্যস্ত হয় মূলধারার সংস্কৃতি সাধনা আর প্রসারে। ব্রত, অনুকরণ খোলসভেদী কায়মনে বাঙালি হও। সঙ্গীতবিদ্যায়তনের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে লোকসঙ্গীত, নৃত্যকলা এবং ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও বাংলা গানের ধারার পাঠ। সাগ্রহে সমবেত হয় হাজার পাঁচেক সংস্কৃতিপিয়াসী। বিস্ময় জাগায় ‘ছায়ানট’-এর মানুষের কাছে পৌঁছনোর অনুষ্ঠানসংখ্যাও। শুদ্ধসঙ্গীত, দেশঘরের গান, নৃত্যকলা, রবীন্দ্ররচনা, নজরুলরচনা নিয়ে উৎসব এবং ভাষা-শহিদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বর্ষবরণ ও ঋতু উৎসব-সহ বছরে প্রায় পঞ্চাশটি আয়োজন। একই আদর্শ ও ধারা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে ‘ছায়ানট’-এর মানুষজন গড়ে তোলেন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষৎ। একে একে সন্‌জীদার কাজে যুক্ত হয় বাচিকশিল্প চর্চা প্রতিষ্ঠান ‘কণ্ঠশীলন’, গুরুসদয় দত্তের আদর্শানুসারী ব্রতচারী।

বাঙালিয়ানায় অবিশ্বাসীরা ২০০১ সালে বোমা হামলা চালায় রমনার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে। মেরেছে দশ জনকে। সবাই দর্শক। শিশুরা অক্ষত। মারতে পারেনি ‘ছায়ানট’-এর দুর্দম বিশ্বাসকে, হাজারো শিশুর ভালবাসাকে। থমকে যায়নি ভোরের স্নিগ্ধ সুরবাণীর আয়োজন। উপদ্রব একটাই। বাংলার পঞ্চকবি, গণজাগরণের গান এবং লোকগীতিকবিদের রচনার উপস্থাপনকে অবিশ্বাসীরা বলে বিদেশি সংস্কৃতি। তাদের ভাষায় সবই নাকি হিন্দু কবি, রবীন্দ্রনাথের রচনা।

‘ছায়ানট’ দমেনি। তবে প্রাণঘাতী আক্রমণ আর মিথ্যাচার সন্‌জীদাদের চোখ খুলে দিয়েছে, খুঁজে পেয়েছে ফাঁকটা। শুরু হল শিশুদের জন্য সংস্কৃতি-সমন্বিত সাধারণ শিক্ষার কার্যক্রম ‘নালন্দা’। লক্ষ্য, প্রথাগত শিক্ষা ছাড়াও শিশুদের সার্বিক মানসিক বিকাশসাধন, সুকুমারবোধের উত্তরণ।

সকল কাজেই সন্‌জীদা সকলের অশেষ প্রেরণা, অতল আস্থা। দ্রোহ-প্রতিবাদে নির্ভয়, মনুষ্যত্ব-মূল্যবোধ-নীতির প্রশ্নে আপসহীন, সমতা-একতায় বিশ্বাসী, আমিত্বের স্বার্থ ভেঙে গোষ্ঠীবাদী, শিল্প-সাহিত্য, সঙ্গীত-সংস্কৃতির নির্যাসাকীর্ণ গুণিন তাঁর সকল সঞ্চয় অনিঃশেষে বিলিয়ে গেছেন সকলের মঙ্গলে। জীবনসায়াহ্নেও থেকেছেন নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার আদর্শ কক্ষপথে। নশ্বর দেহখানি দান করে গেছেন মানুষের কল্যাণে।

পেঁচী-মিনা-মিনু-সন্জীদা নামের কেলেকিষ্টি মেয়েটি মানবতার এক অনন্ত রোশনাই। শয়নে-স্বপনে সকল কর্মে ফিরে ফিরে সে দ্যুতি জাগিয়ে রাখে বাঙালিকে।

[পরিচয়সূত্র, লেখক: সন্জীদা খাতুনের পুত্র পার্থ তানভীর নভেদ্। সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, মোতাহার: সন্জীদার পিতা, সাজেদা: সন্জীদার মাতা, ওয়াহিদুল: ১৯৫৫ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সন্জীদার জীবনসঙ্গী]

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Singer

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy