নিরামিষে ঘরোয়া খাবারের বাইরে অন্য রকম কিছু খাওয়ার বা খাওয়ানোর ইচ্ছে হলে প্রথমে পনিরের কথাই মনে পড়ে। কিন্তু পনিরের রান্না মানেই তাতে অবাঙালি ছোঁয়া। ভাতের পাশে সাজিয়ে দিলে কোথাও যেন তাল কাটে।
আসলে বাঙালির রোজের পাতে থেকেও এখনও ততটা বাঙালি হতে পারেনি পনির। ছানার ডালনায় যে বাঙালিয়ানা আছে, মটর পনির, পালং পনির, বাটার পনির কিংবা চিলি পনিরে তা কোথায়! তবে এই গরমে আপনি পনিরকে বাঙালি বানাতে পারেন। পনির দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন এমন একটি রান্না, যাতে গরমে পেট ঠান্ডা করা কাঁচা আম আছে, বাঙালির প্রিয় পোস্তবাটা আছে, আছে সর্ষেবাটা, সর্ষের তেল আর কাঁচালঙ্কাও!
অদ্ভুত ব্যাপার হল, শুধু এই ক’টি মশলা দিয়েই রান্নাটি হয়ে যাবে। পনিরের অন্য রান্নার মতো গুঁড়ো মশলা বা পেঁয়াজ-রসুন-আদার দরকার পড়বে না। দরকার হবে না পনিরকে ভাজারও। আর তাই গরমের জন্য আদর্শ এই রান্না।
গরমে আর যা-ই হোক, হাতের কাছে কাঁচা আমের কমতি নেই। নিরামিষে একটু মুখরোচক খাওয়ার ইচ্ছে হলে আম আর পানির দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন কাঁচা আম দিয়ে পনির ভাপা। কাঁচা আম গরমে যেমন পেট ঠান্ডা রাখবে, তেমনই অল্প সময়ে অল্প মশলায় রান্না করা এই খাবার স্বাদেও বদল আনবে।

ছবি: কুকিং মামা।
উপকরণ:
৫০০ গ্রাম পনির
২ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
১ টেবিল চামচ সাদা সর্ষে
১/২ টেবিল চামচ কালো সর্ষে
দেড় টেবিল চামচ পোস্ত
৭-৮ টি কাঁচা লঙ্কা
১টি কাঁচা আম
স্বাদমতো নুন
আধ চা চামচ চিনি

ছবি: কুকিং মামা।
প্রণালী:
পানির বড় বড় চৌকো টুকরোয় কেটে নিন।
সর্ষে এবং পোস্ত ভিজিয়ে রাখুন মিনিট ২০। তার পরে মিক্সিতে দু’রকম সর্ষের দানা, পোস্ত, ৪-৫ টি কাঁচালঙ্কা এবং সামান্য নুন এবং অল্প জল দিয়ে মিহি ভাবে বেটে নিন। মিশ্রণটি একটি পাত্রে ঢেলে রাখুন।
এ বার ওই মিক্সিতেই কাঁচা আম টুকরো করে কেটে দিয়ে দিন। অল্প জল দিয়ে ভাল ভাবে বেটে নিন। এটিও একটি পাত্রে ঢেলে নিন।
একটি স্টিলের টিফিনবাক্সে বা তাপরোধক পাত্রে পনিরের টুকরোগুলো দিয়ে তার মধ্যে মেশান সর্ষে-পোস্ত বাটা, কাঁচা আম বাটা, এক টেবিল চামচ সর্ষের তেল, প্রয়োজনমতো নুন এবং চিনি। পনিরের সঙ্গে মশলাটি ভাল ভাবে মাখিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন পনিরের টুকরোগুলো যেন ভেঙে না যায়। এ বার উপরে বাকি সর্ষের তেল এবং বাকিকাঁচা লঙ্কা চিরে ছড়িয়ে দিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করুন।
কড়াইয়ে বা অন্য উঁচু প্যানে কিছুটা জল দিয়ে স্টিলের পাত্রটি তার মধ্যে বসিয়ে দিন। (পাত্রটি যেন অর্ধেক জলে ডুবে থাকে)। এর পরে কড়াই বা প্যানের মুখ ঢেকে প্রথমে জল ফুটিয়ে নিন। তার পরে আঁচ কমিয়ে মিনিট দশেক ভাপিয়ে নিন।
এই রান্না ভাতের সঙ্গেও খাওয়া যায়, আবার পরোটা বা রুটির সঙ্গেও খাওয়া যায়।