‘লেচে ফ্রিতা’ কী জানেন? স্পেনের এই খাবার বানানো হয় দুধ ভেজে! চাইলে বাড়িতে বানাতে পারেন আপনিও

লেচে ফ্রিতা। শব্দটি স্পেনের। যার ইংরেজি মানে হল ‘ফ্রায়েড মিল্ক’ বা ‘ভাজা দু’ধ! কিন্তু দুধ তো তরল, তাকে ভাজা হবে কী করে? স্পেনের উত্তরাঞ্চলের মানুষজন সেই পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় ম্যাজিকের মতো তরল দুধকে ‘কঠিন’ বানাতে পেরেছিলেন তাঁরা, যা প্রকৃত অর্থে কঠিন না হলেও তরলও নয়। বরং বেশ নরম। মুখে দিলে গলে অথচ গরম তেলে ভাজার সময় গলে যায় না!

সেই তুলতুলে নরম ভাজা দুধ বা লেচে ফ্রিতা স্পেনের জনপ্রিয় মিষ্টি। যার স্বাদ স্পেনের সীমা পেরিয়ে মুগ্ধ করেছে বিশ্বের মিষ্টিপ্রেমীদের। স্পেনের সেই মিষ্টি বানানোর পদ্ধতি শিখে নিয়ে বাড়িতে বানাতে পারবেন আপনিও।

কী ভাবে বানাবেন?

লেচে ফ্রিতা বানানোর পদ্ধতিটি বিশেষ জটিল নয়। তবে ওই মিষ্টি বানাতে ধৈর্য দরকার। কারণ লেচে ফ্রিতা এক বারে বানানো সম্ভব নয়। এই মিষ্টি বানানোর ফাঁকে বিরতি নিতে হবে। তবে ওই বিরতির সময়টুকু বাদ দিলে রান্না এবং প্রস্তুতির সময় মিলিয়ে লাগবে বড়জোর ৪৫ মিনিট।

উপকরণ:

১ লিটার দুধ

আধ কাপ চিনি

আধ কাপ কর্নফ্লাওয়ার

১ টেবিল চামচ ভ্যানিলা এসেন্স

২ গাঁট মাপের ২টি দারচিনির টুকরো

একটি লেবুর খোসা কোরানো (শুধু সবুজ অংশটুকু, সাদা অংশ যেন কোনও ভাবেই না যায় খেয়াল রাখবেন)

১ টেবিল চামচ মাখন

ভাজার জন্য সাদা তেল বা অলিভ অয়েল

আধ কাপ গুঁড়ো চিনি

১ চা চামচ দারচিনির গুঁড়ো

৩টি ডিম

ডিম ছাড়া বানাতে চাইলে:

আধ কাপ ময়দা

২ টেবিল চামচ চিনি

সামান্য জল

ব্রেডক্রাম্ব

প্রণালী:

এক লিটার দুধ থেকে আধ কাপ দুধ সরিয়ে রেখে বাকিটা একটি প্যানে ঢেলে আঁচে বসান। তার মধ্যে দিন লেবুর খোসা কোরানো, গোটা দারচিনি। দুধ ফুটে গেলে আঁচ মাঝারি করে আরও মিনিট দশেক রেখে দিন।

এই পর্বে দু’টি কাজ সেরে রাখতে হবে। এক, আগে সরিয়ে রাখা আধ কাপ দুধে আধ কাপ কর্নফ্লাওয়ার এবং ভ্যানিলা এসেন্স ভাল ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন, যাতে কর্নফ্লাওয়ার দলা পাকিয়ে না যায়। দুই, একটি আয়তাকার বা চৌকো কাচের পাত্রের ভিতরে ভাল ভাবে মাখন মাখিয়ে রেখে দিন।

দশ মিনিট পরে দুধের মধ্যে দিয়ে দিন আধ কাপ চিনি। ভাল ভাবে নেড়ে আরও মিনিট ৫-৭ মাঝারি আঁচে ফুটিয়ে দুধ থেকে গোটা দারচিনির টুকরো তুলে নিন। সম্ভব হলে লেবুর খোসা কোরানোগুলিও তুলে নিন। এর পরে ওর মধ্যে দিয়ে দিন কর্নফ্লাওয়ারের মিশ্রণটি।

ওই মিশ্রণ দেওয়ামাত্রই একটি হাতা বা হুইস্কের সাহায্যে দুধ ভাল ভাবে নাড়াচাড়া করে যেতে হবে। তা না হলে মিশ্রণটি দলা পাকিয়ে যেতে পারে। প্রায় মিনিট ১৫ নাড়াচাড়া করার পরে মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে সেটি মাখন লাগিয়ে রাখা কাচের পাত্রে ঢেলে দিন। হাতার সাহায্যে উপরের অংশটি সমান করে দিয়ে কিছুটা ঠান্ডা করে ফ্রিজে ঢোকান। রেখে দিন ২-৩ ঘণ্টা।

ফ্রিজ থেকে দুধ বার করলে দেখবেন সেটি জমাট বেঁধে পুডিংয়ের মতো আকার নিয়েছে। ধারালো ছুরি দিয়ে তা থেকে মাঝারি মাপের চৌকো আকৃতির টুকরো কেটে নিন। এ বার ওই টুকরোগুলি ভাজার প্রস্তুতি শুরু করুন।

যদি ডিমের গোলায় ডুবিয়ে ভাজেন তবে প্যানে পরিমাণমতো তেল গরম করে টুকরোগুলিকে ডিমের গোলায় ডুবিয়ে দু’পাশ ভাল ভাবে ভেজে তুলুন। যদি ডিমের গোলা দিতে না চান, তবে একটি পাত্রে আধ কাপ ময়দা, ২ টেবিল চামচ চিনি এবং জল মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। জমাট বাঁধা দুধের টুকরোগুলোকে ময়দার গোলায় ডুবিয়ে ব্রেডক্রাম্বে মাখিয়ে তেলে একই ভাবে ভেজে তুলুন।

চিনির গুঁড়ো এবং দারচিনির গুঁড়ো মেশানো মিশ্রণটিতে ভাজা দুধের টুকরোগুলো ফেলে মাখিয়ে নিয়ে তুলে ফেলুন।