Advertisement
E-Paper

সাত ‘ভাইয়ের’ তৃতীয়টিও নিষ্প্রাণ! শরীরে জীবনের খোঁজ পেলেন না জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, ‘চম্পা’ই দায়ী?

আমাদের সৌরজগতের বাইরেও কি প্রাণ আছে? যদি থেকে থাকে, তা হলে তা পৃথিবী থেকে কত দূরে? এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই ‘চম্পা এবং তাঁর সাত ভাইয়ের’ হদিস পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৫৯
পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে ‘ট্র্যাপিস্ট-১’ নামে একটি বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সাতটি পাথুরে গ্রহ।

পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে ‘ট্র্যাপিস্ট-১’ নামে একটি বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সাতটি পাথুরে গ্রহ। ছবি: সংগৃহীত।

‘চম্পা’র সাত ভাইয়ের কারও না কারও শরীরে প্রাণের সন্ধান মিলবে বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কিন্তু দীর্ঘ গবেষণার পর তাঁরা জানতে পারেন, প্রথম দুই ভাই মৃতই! এ বার তৃতীয় ভাইয়ের শরীরেও মিলল না প্রাণের অস্তিত্ব!

আমাদের সৌরজগতের বাইরেও কি প্রাণ আছে? যদি থেকে থাকে, তা হলে তা পৃথিবী থেকে কত দূরে? এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই ২০১৭ সালে আমাদের মতো একটি সৌরমণ্ডলের হদিস পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানতে পেরেছেন, পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ (আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, সেই দূরত্ব) দূরে একটি বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সাতটি পাথুরে গ্রহ।

প্রাথমিক ভাবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, জীবনের সন্ধান পাওয়ার জন্য এর থেকে ভাল সম্ভাবনা অতীতে পাওয়া যায়নি। তাঁরা নক্ষত্রটির নাম রেখেছিলেন ‘ট্র্যাপিস্ট-১’। তাকে প্রদক্ষিণ করে ঘুরতে থাকা সাতটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে পৃথিবী এবং মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের মিল আছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দাবি করেছিলেন, নক্ষত্রটির একেবারে কাছে থাকা গ্রহ দু’টি পৃথিবীর সময়ানুযায়ী ১.৫ থেকে ২.৪ দিনের মধ্যে এক বার সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ করে। সূর্য থেকে পৃথিবী যে পরিমাণ বিকিরণ পায়, বামন নক্ষত্রটি থেকে তার দুই থেকে চার গুণ বিকিরণ পায় গ্রহগুলি। বিজ্ঞানীদের অনুমান, তৃতীয় গ্রহটি নক্ষত্রটিকে চার থেকে ৭৩ দিনে প্রদক্ষিণ করে। অর্থাৎ, গ্রহটির তাপমাত্রা হতে পারে ৪০০ কেলভিনের কাছাকাছি, যে তাপমাত্রায় জল এবং জীবন থাকার সম্ভাবনা প্রবল।

কিন্তু আগেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম দু’টি গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নেই। এ বার তৃতীয় গ্রহতেও মিলল না জল বা কার্বণ-ডাই-অক্সাইড! ‘ট্রান্সমিশন স্পেকট্রোস্কপি’ পদ্ধতি কাজে লাগিয়েই এ কথা জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এই পদ্ধতিতে গ্রহগুলি নক্ষত্র থেকে যে আলো পায়, তা-ই পরীক্ষা করা হয়। যদি বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন বা কার্বণ-ডাই-অক্সাইডের মতো কোনও গ্যাস থেকে থাকে, তা হলে তার কোনও না কোনও ছাপ নক্ষত্র থেকে গ্রহে এসে পড়া আলোয় পাওয়া যাবে। কিন্তু এই তৃতীয় গ্রহটিতেও সে রকম কোনও ছাপ মেলেনি বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের অনুমান, হয় ওই গ্রহে কোনও বায়ুমণ্ডলই নেই। অথবা তা এতটাই পাতলা যে, কোনও গ্যাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। আবার এ-ও হতে পারে, গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে গ্যাস রয়েছে, যা জেমস্ ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ চিহ্নিতই করতে পারেনি।

তৃতীয় গ্রহে বায়ুমণ্ডল না থাকার জন্য ‘ট্র্যাপিস্ট-১’ নক্ষত্রটির চরিত্রকেও দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই নক্ষত্রটি আকারে ছোট এবং ঠান্ডা হলেও স্থিতিশীল চরিত্রের নয়। এর থেকে যে তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ ঘটে, সম্ভবত তাতেই তৃতীয় গ্রহটির বায়ুমণ্ডল ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

‘চম্পা’র সাত ভাইয়েরা একে একে নিরাশ করলেও, ‘হাতের নাগালের’ই একটি নক্ষত্রমণ্ডল নিয়ে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। নাম ‘আলফা সেনটওরি’, যা আমাদের নক্ষত্রমণ্ডল থেকে ৪.৩৭ আলোকবর্ষ দূরে। এতে তিন নক্ষত্র রয়েছে— আলফা সেনটওরি এ, আলফা সেনটওরি বি এবং প্রক্সিমা সেনটওরি। এর মধ্যে ‘আলফা সেনটওরি এ’ নক্ষত্রটিকে প্রদক্ষিণ করে চলা একটি গ্রহে প্রাণের অঙ্কুর থাকতে পারে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ওই গ্রহটির নাম— ‘আলফা সেনটওরি এবি’। বিজ্ঞানীদের অনুমান, সেখানে জল থাকলেও থাকতে পারে। তবে সবটাই এখন গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে।

exoplanet TRAPPIST James Webb
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy