হিমবাহ, জঙ্গল, ভূকম্পন জলবায়ু পরিবর্তন— এ সবের উপরে এ বার আরও ভাল ভাবে নজরদারি চালানো যাবে। কারণ, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাডার অ্যান্টেনা তার কক্ষপথে স্থাপন করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো এবং আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। এই অ্যান্টেনা ৩৩ ফুট দীর্ঘ। ইসরো এবং নাসা যৌথ ভাবে সিন্থেটিক অ্যাপারচার মিশন (নিসার) শুরু করেন। সেই অভিযানের অধীনে এই অ্যান্টেনা স্থাপন করা হল। পৃথিবীর ৪৬০ মাইল দূরে থেকে নজর রাখবে এই রাডার অ্যান্টেনা।
নাসা এবং ইসরোর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিসার উপগ্রহের এই অ্যান্টেনা মেঘের চাদর ভেদ করে পৃথিবী পৃষ্ঠের উচ্চমানের ছবি তুলতে সক্ষম। দিন এবং রাত— সব সময়েই কাজ করতে পারে। আধুনিক এই প্রযুক্তির কারণে সুবিধা হবে বিজ্ঞানী, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের। বিপর্যয় যে আসতে পারে, আগাম জানতে পারবেন তারা। সেই মতো সজাগ হওয়া যাবে। নিসার উপগ্রহটি পরিচালনা করবে নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) এবং ইসরো।
আরও পড়ুন:
অন্য উপগ্রহের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আবহাওয়া। অনেক সময়ই তারা কাজ করতে পারে না। কিন্তু নিসার উপগ্রহ সব আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে। হিমবাহ, জঙ্গল, ভূকম্পন, কৃষিজমির উপরে দিন-রাত যে কোনও আবহাওয়ায় নজর রাখবে সে। তাদের সামান্য পরিবর্তন জানান দেবে পৃথিবীকে। নাসা জানিয়েছে, এর ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসার আগে প্রস্তুত হতে পারবে।
নরথ্রপ গ্রুম্যান সংস্থা এই অ্যান্টেনা তৈরি করেছে। পৃথিবীর উপরে ছাতার মতো বিস্তারলাভ করবে এটি। প্রতি মিনিটে ৪.৫ বার আবর্তন করবে। মহাশূন্য যেমন এই অ্যান্টেনা কাজ করতে সক্ষম, তেমন উৎক্ষেপণের সময়ে অত্যধিক চাপও সহ্য করতে পারে। এই উপগ্রহের ক্যামেরার লেন্স অত্যন্ত শক্তিশালী। ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তনের ত্রৈমাত্রিক ছবিও তৈরি করতে পারে। পৃথিবীর কোথাও খুব ধীরে ধীরে ভূমিক্ষয় বা হিমবাহের গলন হলে তা-ও নিসারের লেন্সে ধরা পড়বে। এই নিসারের তথ্য পেতে পারবেন বিজ্ঞানী, বিভিন্ন দেশের সরকার থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ফসলের চক্রও ধরতে পারে এই উপগ্রহ। এর ফলে পৃথিবীর মানুষের খাদ্যসুরক্ষাও নিশ্চিত হবে।