Advertisement
E-Paper

ব্ল্যাক হোল নিয়ে আইনস্টাইনের ধারণা ভুল হতে পারে! নতুন গবেষণায় দাবি একদল বিজ্ঞানীর

জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার ধ্রুপদী তত্ত্ব বলে, ব্ল্যাক হোলের চেহারা বলতে বোঝায় খাবারের সেই থালা, যার কানাটার নাম ‘ইভেন্ট হরাইজ়ন’। সেই চৌহদ্দির মধ্যে একবার গিয়ে পড়লে আর রেহাই নেই।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:০০
ব্ল্যাক হোল।

ব্ল্যাক হোল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

এক শতাব্দি আগে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে প্রবাদপ্রতিম বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন যে ধারণা দিয়েছিলেন, সাম্প্রতিক গবেষণায় তা অক্ষরে অক্ষরে মেলে। নিখুঁত পরীক্ষানিরীক্ষার পর তার প্রমাণও মিলেছে। তবে তাঁর কিছু ধারণা ভুলও হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন একদল গবেষক।

জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার ধ্রুপদী তত্ত্ব বলে, ব্ল্যাক হোলের চেহারা বলতে বোঝায় খাবারের সেই থালা, যার কানাটার নাম ‘ইভেন্ট হরাইজ়ন’। সেই চৌহদ্দির মধ্যে একবার গিয়ে পড়লে আর রেহাই নেই। তখন কেবলই পতন! অত্যন্ত জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে আশপাশের গ্যাসের মেঘ, নক্ষত্রদের গিলে খায় সে। বেরিয়ে আসতে পারে না এমনকি আলোও। স্থান-কালও দুমড়ে মিলিয়ে যায় সেখানে!

আদতে ব্ল্যাক হোল হল মহাকাশের এমন অঞ্চল যেখানে বিশাল পরিমাণ ভর একটি ক্ষুদ্র আয়তনে জড়ো থাকে। তার মহাকর্ষীয় টান থেকে আলোও পার পায় না। ব্ল্যাক হোলকে সরাসরি দেখা সম্ভব নয়। তবে ব্ল্যাক হোল যখন কোনও নক্ষত্রের সঙ্গী হয়, তখন সঙ্গী নক্ষত্র থেকে প্রবল আকর্ষণ টেনে নিতে থাকে টুকরো-টুকরো অংশ। সেই সব অংশগুলি প্রবল মাধ্যাকর্ষণের টানে বলয়াকারে ঘুরতে ঘুরতে তৈরি করে ‘অ্যাক্রিশন ডিস্ক’। সেই সব পদার্থনির্গত এক্স রশ্মি মহাকাশ দূরবীনে ধরা পড়ে এবং বিজ্ঞানীরা সেখান থেকেই ‘ব্ল্যাক হোলের’ আভাস পান।

অর্থাৎ, এমনি ব্ল্যাক হোল দেখা যায় না। যা দেখা যায়, তা হল চারপাশে থাকা গ্যাস আর প্লাজ়মা। তা দিয়ে তৈরি আলোর রিং। আর তার মাঝখানে থাকা কালো গাঢ় অংশ, অর্থাৎ ছায়া। সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বে আইনস্টাইন জানিয়েছিলেন, এই ছায়া অংশের আকার-আয়তন দেখেই ব্ল্যাক হোলের আয়তন বোঝা সম্ভব। এ সমস্ত কিছুই নির্ভর করে অভিকর্ষ বলের উপর।

আইনস্টাইনের এই মতামত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ফ্র্যাঙ্কফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুসিয়ানো রেজ়জোল্লা। একেবারে পৃথিবীর মাপের সুবিশাল টেলিস্কোপ (ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ) দিয়ে খচাখচ দু’টি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের ছবি তোলা হয়েছে সম্প্রতি। ফ্র্যাঙ্কফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজ়জোল্লা এবং তাঁর দল সেই ছবি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন। তার ভিত্তিতেই তাঁদের দাবি, আইনস্টাইনের অনুমান ভুল হলেও হতে পারে। এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালে।

রেজ়জোল্লারা দুই ব্ল্যাক হোলের কয়েকটি ছবির ‘থ্রিডি সিমিউলেশন’ করিয়েছেন। তাতে যা ফল এসেছে, তা আইনস্টাইনের অনুমানের সঙ্গে এখন প্রায় মিলে গিয়েছে। ব্ল্যাক হোল অন্য বিজ্ঞানীরা যে তত্ত্ব প্রকাশ করেছেন, তার চেয়ে আইনস্টাইনের তত্ত্বই এগিয়ে। কিন্তু ভবিষ্যতে তা না-ও হতে পারে বলে মত রেজ়জোল্লার। তাঁদের দাবি, এখন ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ যে ছবি তোলে, তা দিয়ে পার্থক্য সহজে বোঝা যায় না। কিন্তু ভবিষ্যতে ছবি ‘রেজ়োলিউশন’ বাড়লে এই পার্থক্য আরও স্পষ্ট হবে। তুলনা করে বলা যাবে, কার তত্ত্ব সঠিক।

Albert Einstein black hole Interstellar Space
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy