Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
nasa

NASA-Asteroid: গ্রহাণুর পিঠে আছড়ে পড়ে আত্মঘাতী হবে! রওনা হল নাসার মহাকাশযান

পৃথিবীর খুব কাছেপিঠে এসে পড়া কোনও গ্রহাণুর বুকে এই প্রথম আছড়ে ফেলা হবে কোনও মহাকাশযানকে।

গ্রহাণুর বুকে আছড়ে পড়ার লক্ষ্যে রওনা হল নাসার মহাকাশযান। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

গ্রহাণুর বুকে আছড়ে পড়ার লক্ষ্যে রওনা হল নাসার মহাকাশযান। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ১৫:২৪
Share: Save:

ভয়ঙ্কর গতিবেগে ছুটে গিয়ে গ্রহাণু (‘অ্যাস্টারয়েড’)-র বুকে আছড়ে পড়ে আত্মঘাতী হবে নাসার মহাকাশযান। এই প্রথম।

সেই লক্ষ্যেই মহাকাশযানটি রওনা হল ভারতীয় সময় বুধবার বেলা বারোটার কিছু পরে। ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যান্ডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস থেকে স্পেস-এক্সের ফ্যালকন রকেটে চেপে আত্মঘাতী হওয়ার জন্য পাড়ি জমাল মহাকাশে।

পৃথিবীর খুব কাছেপিঠে এসে পড়া কোনও গ্রহাণুর বুকে এই প্রথম আছড়ে ফেলা হবে কোনও মহাকাশযানকে। সেই প্রচণ্ড অভিঘাতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা কোনও গ্রহাণুর গতিপথ কতটা বদলানো সম্ভব হতে পারে, তা বুঝতে।

যাতে আগামী দিনে কোনও গ্রহাণু পৃথিবীর কাছেপিঠে এসে পড়লে এই নীলাভ গ্রহ থেকে তার সম্ভাব্য হামলা থেকে বাঁচানো যায়। বাঁচানো যায় সভ্যতাকে।

ছয় মাইল বা ১০ কিলোমিটার ব্যাসের একটি গ্রহাণুই পৃথিবীতে আছড়ে পড়ায় ডাইনোসররা লোপ পেয়েছিল সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে।

নাসার এই অভিযানের নাম- ‘ডাবল অ্যাস্টারয়েড রিডাইরেকশান টেস্ট’ মিশন। সংক্ষেপে, ‘ডার্ট’।

নাসা এই অভিযানে যে গ্রহাণুটিকে নিশানা করেছে, তার নাম ‘ডিডিমস’। লাল গ্রহ মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে রয়েছে গ্রহাণুদের যে ‘সাম্রাজ্য’, সেই গ্রহাণুপুঞ্জ (বা, অ্যাস্টারয়েড বেল্ট) কিন্তু এর মুলুক নয়। এই গ্রহাণুটি রয়েছে পৃথিবীর অনেক কাছে। পৃথিবী থেকে তিন কোটি মাইল বা পাঁচ কোটি কিলোমিটারের মধ্যে। এই মুলুকে আরও বহু ছোট, বড়, মাঝারি আকারের গ্রহাণু রয়েছে। এদের বলা হয়, ‘নিয়ার-আর্থ অবজেক্টস (এনইও)’।

তবে আড়াই হাজার ফুট বা ৭৮০ মিটার ব্যাসের এই গ্রহাণুটি একা নয়, থাকে জোড়ায়। তার সঙ্গে রয়েছে তুলনায় কিছুটা ক্ষুদ্র আকারের আরও একটি গ্রহাণু। তার নাম- ‘ডাইমরফস’। আকারে তুলনায় তার চেয়ে অনেকটাই ছোট বলে ডিডিমসের ‘ছোট চাঁদ (মুনলেট)’ বলা হয় ডাইমরফস-কে। আকারে বড় ডিডিমসের অভিকর্ষ বল তুলনায় বেশি। তাই তার টানে ‘চাঁদ’-এর মতোই ডিডিমস-কে প্রদক্ষিণ করে ডাইমরফস। যদিও আদতে তারা দু’টিই গ্রহাণু। আবার দু'টি গ্রহাণুই প্রদক্ষিণ করে সূর্যকে তাদের নিজ নিজ কক্ষপথে। নাসার অভিযানের নাম ‘ডাবল অ্যাস্টারয়েড’ রাখা হয়েছে সেই কারণেই।

নাসার অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর থমাস জুরবুচেন বলেছেন, ‘‘মহাকাশযানটি গিয়ে আছড়ে পড়বে ডিডিমসের ‘চাঁদ’- ডাইমরফস-এর উপর। ঘণ্টায় ১৫ হাজার মাইল বা ২৪ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে। আগামী বছর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবরের মধ্যে ডাইমরফস-এর উপর আছড়ে পড়ার কথা মহাকাশযানটির। ডিডিমস-কে প্রদক্ষিণের পথে সেই সময়েই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসবে ডাইমরফস। নীলাভ গ্রহ থেকে তখন ডাইমরফস-এর দূরত্ব থাকবে ৬৮ লক্ষ মাইল বা ১ কোটি ১০ লক্ষ কিলোমিটার।’’

নাসা স্পষ্টই জানিয়েছে, যে গ্রহাণুটিকে এ বার নিশানা করা হয়েছে সেটি কোনও দিনই পৃথিবীর ভয়ের কারণ হবে না। কোনও দিনই হামলে পড়বে না পৃথিবীর উপর। তবে এদের মতোই এমন অন্তত হাজার দশেক নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট রয়েছে, যাদের ব্যাস ৪৬০ ফুট বা তারও বেশি। তারা আছড়ে পড়লে গড়ে একটি পরমাণু বোমার শক্তিতে বিস্ফোরণ হতে পারে। গুঁড়িয়ে যেতে পারে বিশাল কোনও শহর বা ছোট কোনও দেশ। আগামী ১০০ বছরের মধ্যে তেমন আশঙ্কা না থাকলেও এদের অন্তত ৪০ শতাংশ একদিন না একদিন পৃথিবীর ভয়ের কারণ হয়ে উঠবেই। সেই সম্ভাব্য বিপদ কী ভাবে এড়ানো সম্ভব, তা বুঝতেই নাসার এই অভিযান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nasa ASTEROIDS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE