মেয়ে সোনা জেতার পর স্বপ্নার মা।
ঘরময় অভাবের চিহ্ন। কঠোর জীবনসংগ্রামের ছাপ সর্বত্র। টিনের সেই ঘরের বাইরেই এখন যেন বসেছে মেলা। জলপাইগুড়ির পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়া গ্রামের বর্মন পরিবারের ছোট্ট বাড়ি হয়ে উঠেছে তীর্থক্ষেত্র।
হবে নাইবা কেন! এশিয়ান গেমসের হেপ্টাথলনে সোনা জেতা স্বপ্না যে এখান থেকেই খালি পায়ে দৌড় শুরু করেছিল। যার প্রতিফলন ঘটেছে জাকার্তায়। অভাবী ঘরের মেয়ের সব বাধা টপকে ছিটকে বেরনোর জেদ ছিনিয়ে এনেছে সোনা। টিভিতে যা দেখতে দেখতে ডুকরে কেঁদে উঠেছেন মা বাসনা বর্মণ। চোখের জল বাঁধ মানেনি। আকুল করা কান্না থাকতে দেয়নি ঘরে। বেরিয়ে এসে চলে গিয়েছেন উঠোনের একপাশে ঠাকুরঘরে। শুয়ে পড়েছেন সাষ্টাঙ্গে। চোখের জলে সেরেছেন পূজো।
স্বপ্না একাই তো নয়, লড়ছিলেন তো মাও। বাবা পঞ্চানন চালাতেন ভ্যান রিকশা। কিন্তু পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন স্বপ্নার জন্মের পরই। সংসার চালাতে চা বাগানে কাজ শুরু করেছিলেন বাসনা। একচালা ঘরে থাকতেন সবাই মিলে।
দেখুন স্বপ্নার মায়ের ভিডিয়ো
সমস্যা হল মেয়েকে নিয়ে। স্বপ্নার দুই পায়ে এক ডজন আঙুল। জুতো জোটে না। খালি পায়েই পথ চলা শুরু। ওভাবেই শুরু দৌড়। শুরু সাধনা। শুরু স্বপ্ন দেখাও। যা ডানা মেলে দিয়েছে এশিয়ান গেমসে। মেয়ের সোনা জেতা সেজন্যই আবেগতাড়িত করে তুলেছে মাকে।
আরও পড়ুন: চোট নিয়েই সোনা হিমার
আরও পড়ুন: ভারত-ইংল্যান্ড চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিনের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ ঘটনা
বাড়িতে এখন উত্সবের মেজাজ। একের পর এক, আসছেন অতিথি। মন্ত্রী থেকে শুরু করে আরও অনেকে। আসছে শুভেচ্ছা, আসছে একের পর প্রতিশ্রুতি। মালা, ফুল, মিষ্টি তো রয়েইছে। সবাইকে একটা কথাই বলছেন বাসনা, “মেয়ে ফার্স্ট হয়েছে।”
মেয়ের ছবি হাতে স্বপ্নার মা বাসনা বর্মণ। ছবি: পিটিআই।
চিরকাল পিছনে পড়ে থেকেছেন তো। ফার্স্ট হওয়ার কথা সেজন্যই বলতে চাইছেন বার বার। এতদিন চোখের জলেই ছিল অধিকার। স্বপ্নার মা এখন হাসতেও শিখছেন।
(অলিম্পিক্স, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস হোক কিংবা ফুটবল বিশ্বকাপ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ - বিশ্ব ক্রীড়ার মেগা ইভেন্টের সব খবর আমাদের খেলা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy