Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Champions League

উঠে এল এক ঝাঁক নতুন মুখ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা পাঁচে নেই রোনাল্ডো-মেসি

দেখে নেওয়া যাক এই টুর্নামেন্টে এ বারে কাদের পারফরমান্স কেমন।

এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নজর কাড়লেন কারা? ছবি: রয়টার্স

এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নজর কাড়লেন কারা? ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২০ ০৯:৩০
Share: Save:

অতিমারির প্রকোপ। মাঝপথে থমকে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা টুর্নামেন্টের ভাগ্যে কী হবে, সেই নিয়ে উৎকণ্ঠা ছিল ফুটবলপ্রেমীদের মনে। অবশেষে ৮ অগস্ট ফের বল গড়াল। শুরু হল বাকি থাকা ম্যাচ।

সারা বছর ধরে চলতে থাকা লিগ ও নকআউট পর্ব মিলিয়ে হওয়া টুর্নামেন্ট এখন যেন অসময়ের বিশ্বকাপ। দর্শকহীন মাঠ হলেও, উত্তেজনা কম নেই ফুটবলারদের মধ্যেও। না হলে প্রথম বার ফাইনালে ওঠার আনন্দে করোনা-নির্দেশিকা ভুলে জার্সি বদল করেন নেমার?

দেখে নেওয়া যাক এই টুর্নামেন্টে এ বারে কাদের পারফরমান্স কেমন। সেরাদের মধ্যে জায়গা করে নিলেন কারা। আর কোন বিখ্যাত খেলোয়াড়রা ব্যর্থ হলেন ভক্তদের আশাপূরণে।

এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এঁরাই কি সেরা পাঁচ? #championsleague #football #top5

A post shared by আনন্দবাজার পত্রিকা (@anandabazarsocial) on

রবার্ট লেওনডস্কি: সেরাদের কথা বললে সবার প্রথমে অবশ্যই আসবে বায়ার্ন মিউনিখের স্ট্রাইকারের নাম। রবার্ট লেওনডস্কি ইতিমধ্যেই ১৫ গোল করে টপকে গেছেন মেসির চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক মরসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। সামনে এখন শুধুই ১৭ গোল করা রোনাল্ডো। ফাইনালে পিএসজির বিরুদ্ধে পারবেন তিনি সেই রেকর্ড ভাঙতে?

আরও পড়ুন: ইউরোপা লিগ জিতল বন্ধু, আবেগে ভাসলেন মোহনবাগানের আই লিগজয়ী কোচ

নেমার: করোনার জন্য থমকে যাওয়া টুর্নামেন্ট যেন শাপে বর হল ব্রাজিলের ওয়ান্ডার কিড-এর। চোট সারিয়ে মাঠে ফিরে তিনি এখন আগুন ঝরাচ্ছেন। ছয় ম্যাচে তিনটি গোল, সঙ্গে চারটি গোলের পাস। ফ্রান্সের এমবাপেকে সঙ্গী করে তিনি বার বার বিপক্ষের ত্রাস হয়ে উঠছেন। ফাইনালে তাঁকে নিয়ে সতর্ক থাকতেই হবে বায়ার্ন ডিফেন্সকে।

আলফান্সো ডেভিস: প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই যেন বুঝিয়ে দিলেন তিনি বিশ্বফুটবলে নেহাত ‘বাচ্চা ছেলে’ নন। বায়ার্নের লেফট ব্যাক থেকে তাঁর দৌড় মাঝে মধ্যেই বিপক্ষের ঘুম উড়িয়ে দেয়। দলের রক্ষণে থেকে আক্রমণ তাঁর যেন সমান বিচরণ। ১৯ বছরের এই উঠতি তারকা এই মরসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলের পাস বাড়িয়েছেন চারটি।

পিটার গুলাসি: দলকে ফাইনালে তুলতে না পারলেও লিপজিগের এই গোলকিপার মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০ ম্যাচে করেছেন ৩৪টি সেভ। সেমিফাইনালে নেমারদের রুখে দিতে পারলে ফাইনালে দেখা হতেই পারত দুই জার্মান ক্লাবের।

স্যাস নাব্রি: সেরাদের তালিকায় রাখতেই হবে বায়ার্নের এই উইঙ্গারকে। ৯ ম্যাচে ৯ গোল রয়েছে তাঁর। শেষ ষোলোয় চেলসি হোক বা কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনা, তিনি বল জড়িয়েছেন বহু বড় ক্লাবের জালে। সেমিফাইনালে লিঁয়র বিরুদ্ধেও রয়েছে তাঁর দু’টি গোল। ফাইনালেও গোল পেলে তা হবে এক দারুণ নজির।

ডেভিসের মতো নতুন নাম যেমন উঠে এসেছে, তেমনই এ বারের চ্যাম্পিয়নস লিগে হতাশ করেছে অনেক বড় নাম। নিজেদের নামের প্রতি সুবিচারে এ বারের লিগে তাঁরা ব্যর্থ। তাঁদের দিকে ভক্তরা ম্যাজিকের অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকলেও, নিজেদের সেই ভাবে মেলে ধরতে পারলেন না তাঁরা।

আরও পড়ুন: মেসি, রোনাল্ডোর সাম্রাজ্যে ভাগ বসাতেন লেওনডস্কি? কে পেতে পারতেন এ বারের ব্যালন ডি’অর

এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই তারকারা কি হতাশ করেছে আপনাকে? #championsleague #football #flop5

A post shared by আনন্দবাজার পত্রিকা (@anandabazarsocial) on

এডেন অ্যাজার: রোনাল্ডোর রেখে যাওয়া সাত নম্বর জার্সি গায়ে তুলে নিলেও, দলকে সেই ভরসা কিন্তু আজও দিতে পারছেন না রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ছয় ম্যাচে একটিও গোল পাননি তিনি। দলকে জেতাতেও পারেননি বড় ম্যাচে।

জেরার্ড পিকে: বার্সার অন্যতম অভিজ্ঞ প্লেয়ার। তাঁর কাঁধেই থাকে বার্সেলোনার রক্ষণভাগের দায়িত্ব। অথচ তাঁর পাশ দিয়েই একের পর এক গোল দিয়ে গেল জার্মান ক্লাব। দরকারে উঠে গিয়ে আক্রমণ ভাগকে যে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য তিনি করেন, তাও দেখা গেল না এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।

সাদিও মানে: এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মাত্র দুটো গোল এবং দুটো গোলের ঠিকানা লেখা পাস। ইংলিশ প্রিমিয়ার জয়ে বড় অবদান রাখলেও এই লিগে কিন্তু তিনি সেই ভাবে মেলে ধরতে পারেননি। শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয় গত বারের বিজয়ী দল লিভারপুল।

লিওনেল মেসি: এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ব্যর্থদের তালিকায় থাকবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারও। টুর্নামেন্টে আটটি ম্যাচ খেলে তিনটি গোল, একে বারেই মেসিসুলভ পরিসংখ্যান নয়। মাঠে দাঁড়িয়ে দলের আট গোলের লজ্জার হারও দেখতে হয়েছে তাঁকে। নাপোলির বিরুদ্ধে একক প্রচেস্টায় গোল করে তাক লাগিয়ে দিলেও পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে তিনি ছিলেন খানিক নিষ্প্রভই।

আঁতোয়া গ্রিজম্যান: কোচের সঙ্গে মতবিরোধ তাঁকে লা লিগার বেশ কিছু ম্যাচ থেকে বাদ রাখলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পেয়েছিলেন নয়টি ম্যাচ। কিন্তু গোলের সংখ্যা মাত্র দুই। ফরাসি স্ট্রাইকার তাঁর গোলের বুট দু’টি যেন পুরনো ক্লাবেই রেখে এসেছেন। মেসি, সুয়ারেজের সঙ্গে গ্রিজম্যানকে জুড়ে বিপক্ষের রক্ষণ ভাগে যে ত্রাস তৈরির কথা ভেবেছিলেন বার্সা কর্তারা, তা পূরণ করতে পারেননি গ্রিজম্যান।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দিয়ে ইতি এ বারের ফুটবল মরসুমের। আবার এক নতুন মরসুমের অপেক্ষা। নিউ নরম্যালের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই শুরু হবে তা। অতিমারির প্রতিকূলতা কাটিয়ে ফের বাজবে রেফারির বাঁশি। কেউ ব্যর্থতা ভুলে নতুন ভাবে শুরুর অপেক্ষায়, কেউ বা এ বারের সাফল্যের রেশ ধরে রাখার প্রচেষ্টায় মনোনিবেশ করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE