Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Football

করোনা তাণ্ডবে বিয়ে পিছিয়ে যেতে বসেছে স্পেনীয় তারকার

করোনা হানায় বিধ্বস্ত স্পেন। আক্রান্তের সংখ্যা সে দেশে বেড়েই চলেছে। বুলফাইটিংয়ের দেশে মৃত্যু মিছিল।

নেস্টর ও তাঁর বান্ধবী। —নিজস্ব চিত্র।

নেস্টর ও তাঁর বান্ধবী। —নিজস্ব চিত্র।

কৃশানু মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ১৫:২৬
Share: Save:

আই লিগ খেলেছেন। খেলেছেন আইএসএল-ও। খেলা তৈরি করার জন্য কোচ তাকিয়ে থাকতেন এই স্পেনীয় গেম মেকারের পায়ের দিকেই।

এ হেন নেস্টর গর্ডিলো এখন বুঝে উঠতে পারছেন না বিয়েটা কবে করবেন। বান্ধবী আজাহারাকে এই জুনেই বিয়ে করবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন মাস ছয়েক আগেই। সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু বহু দিন আগে ঠিক করা সেই বিয়েই হয়তো পিছিয়ে যেতে বসেছে। আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই নেস্টরের।

করোনা হানায় বিধ্বস্ত স্পেন। আক্রান্তের সংখ্যা সে দেশে বেড়েই চলেছে। বুলফাইটিংয়ের দেশে মৃত্যু মিছিল। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব নির্ধারিত বিয়ের পরিকল্পনা ধাক্কা খেয়েছে নেস্টর ও তাঁর বান্ধবীর। স্পেনের ক্যানারি আইল্যান্ডের সান্তা মারিয়া দে গিয়াতে থাকেন নেস্টর। আনন্দবাজার ডিজিটালকে এই সৃজনশীল ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘জুন মাসে বিয়ে করব, সেটা অনেক আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু করোনা সংক্রমণে স্পেনের পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। এ রকম পরিস্থিতির জন্য কেউই তৈরি ছিল না। কত দিনে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে তা আমরা কেউই জানি না। ফলে এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।’’

আরও পড়ুন: বন্ধ দরজার পিছনেই চালু হোক ক্রিকেট, চাইছেন প্রাক্তন অজি তারকা

নেস্টর যে গ্রামে থাকেন, সেখানে করোনার দৌরাত্ম্য অপেক্ষাকৃত কম। সরকারের নির্দেশ মেনে সবাই ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। নেস্টর বলছিলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ঘরেই রয়েছি। টেলিভিশন দেখছি, রান্না করছি, নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করছি। আরও মাস খানেক হয়তো আমাদের ঘরেই থাকতে হবে।’’

নেস্টরের সঙ্গে আজাহারা।

নেস্টরের বোন ও কাকিমা নার্স। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১০-১২ ঘণ্টা তাঁরা হাসপাতালে করোনা-আক্রান্তের সেবা করে চলেছেন। তাঁদের কাজকে কুর্নিশ করে নেস্টর বলছেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, নার্সরাই জাতীয় নায়ক। ওঁদের দিকেই সবাই তাকিয়ে। আমার বোন ও কাকিমার জন্য গর্ব হচ্ছে। তবে ওঁদেরও সতর্ক থাকতে হবে। ওঁরা তো রোগীদের নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছে। তাই সতর্ক হতেই হবে।’’

ভারতীয় ফুটবলে আবির্ভাবেই চমকে দিয়েছিলেন নেস্টর। চেন্নাই সিটি-র হয়ে ‘ম্যাজিক’ দেখিয়েছিলেন আই লিগে। বল পায়ে পড়লেই তিনি ফুল ফোটাতেন। দ্রুতই তিনি নজর কেড়ে নিয়েছিলেন সবার। নেস্টরকে দলে নেওয়ার জন্য টানাটানি শুরু করে দিয়েছিল আই লিগ ও আইএসএল-এর একাধিক ক্লাব।

শেষ পর্যন্ত স্পেনীয় ফুটবলার আইএসএল-এ খেলার প্রস্তাব গ্রহণ করেন। তাঁর সই নিয়েও বিস্তর জলঘোলাও হয়েছিল। হায়দরাবাদ এফসি-র হয়ে মরসুমের প্রথম থেকে নামতেও পারেননি নেস্টর। আরও এক বছর চুক্তি রয়েছে হায়দরাবাদের সঙ্গে। পিছনে ফিরে তাকিয়ে নেস্টর বলছেন, ‘‘আমি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছিলাম। আমার পরিবার পাশে ছিল। আমাকে সব সময়ে উৎসাহ জুগিয়ে গিয়েছে। আমি সেই সব দিন ভুলে যেতে চাই। আগামী মরসুমে আরও ভাল ভাবে ফিরতে চাই।’’

আই লিগ ও আইএসএল খেলেছেন। তাই খুব সহজেই দুটো টুর্নামেন্টের মধ্যে পার্থক্য করতে পারছেন। তিনি বলছিলেন, ‘‘দুটো লিগ দুই ধরনের। তবে আইএসএল-এর স্টেডিয়ামগুলো আই লিগের থেকে ভাল। তা ছাড়া আইএসএল-এ খেলা ভারতীয় ফুটবলারদের মান আই লিগের থেকে ভাল বলেই আমার মনে হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ‘ধোনির ডাক ফেরানোর আফশোস আজও তাড়া করে’

নেস্টর জানেন না, ঘরবন্দি অবস্থা কাটিয়ে আদৌ কবে ফুটবলে পা দিতে পারবেন। অপেক্ষায় তিনি। করোনা-তাণ্ডবে ফুটবলের মতো বিয়ে নিয়েও আপাতত অপেক্ষায় স্পেনীয়-তারকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE