লক্ষ্য সেনের সোনা জয় ছবি পিটিআই
এ এক স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন!
কমনওয়েলথ গেমস ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে প্রথম গেমে হেরে গিয়েও সোনা জিতলেন লক্ষ্য সেন। পরের দু’টি গেমে দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিপক্ষ মালয়েশিয়ার জে ইয়ংকে হারিয়ে দিলেন। লক্ষ্য জিতলেন ১৯-২১, ২১-৯, ২১-১৬ গেমে। কমনওয়েলথ গেমসে ২০টি সোনা হয়ে গেল ভারতের। বার্মিংহামের এনইসি অ্যারেনায় ফাইনালে বিশ্বমানের ব্যাডমিন্টন দেখতে পেলেন দর্শকরা।
এর আগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং অল ইংল্যান্ডে পদক জিতেছেন লক্ষ্য। এ বার কমনওয়েলথেও পদক পেয়ে গেলেন। প্রথম প্রয়াসেই সোনা! দলগত ইভেন্টে খুব একটা ভাল না খেললেও, সিঙ্গলসে শুরু থেকেই ভাল খেলছিলেন। ফাইনালেও একই রকম ছন্দে দেখা গেল উত্তরাখণ্ডের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়কে। সিঙ্গলসে প্রথম তিনটি ম্যাচে সরাসরি গেমে জেতেন। সেমিফাইনালের পর ফাইনালও জিতলেন এক গেম খুইয়ে।
প্রথম গেমে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। কোনও খেলোয়াড়ই একে অপরকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছিলেন না। এক মুহূর্তে ইয়ং এগিয়ে যাচ্ছেন, তো পরের মুহূর্তে লক্ষ্য। ভারতের খেলোয়াড়ের কৌশল নিয়ে তখন সন্দিহান অনেকেই। ইয়ং নেট প্লে-তে শক্তিশালী। তবু তাঁকে নেটেই খেলাচ্ছিলেন লক্ষ্য। যতক্ষণে কৌশল বদলালেন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তবু ম্যাচের শেষ পর্যন্ত লড়াই করেন তিনি। ইয়ংয়ের স্ম্যাশের জবাব দিতে গিয়েও বিপদে পড়েন লক্ষ্য। শক্তিশালী স্ম্যাশের কোনও উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
দ্বিতীয় গেমে খেলায় অনেক বদল আনেন। লক্ষ্যের শটের তীব্রতা একই রকম থাকলেও মালয়েশিয়ার খেলোয়াড়কে ক্লান্ত লাগছিল। প্রথম গেমে নিজের শক্তি নিংড়ে দিয়ে দেওয়ার কারণেই সম্ভবত দ্বিতীয় গেমে তাঁকে নড়বড়ে লাগছিল। তাঁর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলেন লক্ষ্য। স্ম্যাশ এবং লম্বা র্যালিতে নাজেহাল করে দিলেন ইয়ংকে। তৃতীয় গেমেও একই জিনিস দেখা গেল। এ বার লক্ষ্যের শটের কোনও জবাব খুঁজে পেলেন না ইয়ং। মাঝেমাঝে ফিরে আসার একটা চেষ্টা করছিলেন। তা সফল হয়নি।
বছর খানেক আগেও লক্ষ্য ভারতের ব্যাডমিন্টন সার্কিটে পরিচিত নাম ছিলেন না। উঠতি খেলোয়াড় হয়েও এক সময় ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। তবে কমনওয়েলথ ব্যাডমিন্টন ফাইনালে সোনা জেতার পর ২০২২ সাল সম্ভবত তাঁর কাছে স্বপ্নের বছর হতে চলেছে।
ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সাফল্য ছিলই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে লক্ষ্যের প্রথম সাফল্য ২০১৬-য়। এশিয়ান জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পান। ২০১৮ সালে এশিয়ান জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেই সোনা জিতে নেন। এ ছাড়া বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পান। আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরেসে যুব অলিম্পিক্সে জোড়া পদক। সিঙ্গলসে রুপো পাওয়ার পাশাপাশি দলগত ইভেন্টে সোনা জিতে নেন তিনি। পরের বছর বিডব্লিউএফ ওয়ার্ল্ড ট্যুরের অন্তর্গত ডাচ ওপেন এবং সারলরলাক্স ওপেন জিতে নেন।
২০২০-তে এশিয়ান টিম চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পান তিনি। পরের বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও ব্রোঞ্জ জেতেন। এ বছর কিছু দিন আগেই ইন্ডিয়া ওপেন জিতেছেন। তার পরে অল ইংল্যান্ডে রানার্স হয়ে হইচই ফেলে দেন। সে সময় তাঁকে নিয়ে গোটা দেশ উদ্বেল ছিল। সেই সমর্থন নিঃসন্দেহে আরও বাড়বে কমনওয়েলথে সোনা জেতার পর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy