Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Ashes 2023

বুধবার থেকে লর্ডসে আরও আগ্রাসী স্টোকসেরা, অ্যাশেজের রাশ আলগা করতে নারাজ কামিন্সেরা

এজবাস্টনে হারলেও আগ্রাসী ক্রিকেটের ভাবনা থেকে সরছে না ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টের দলে কোনও স্পিনারকে রাখেননি স্টোকসেরা। অস্ট্রেলিয়াও পরিবর্তন করতে পারে প্রথম একাদশে।

picture of Pat Cummins and Ben Stokes

(বাঁদিকে) অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এবং ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। ছবি: আইসিসি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ১৮:৩৬
Share: Save:

অ্যাশেজ সিরিজ়ের প্রথম টেস্টে কাজে আসেনি ইংল্যান্ডের বাজ়বল ক্রিকেট। প্যাট কামিন্সের নাছোড় লড়াইয়ে ২ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলেও লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে আগ্রাসী ক্রিকেটই খেলবেন বলে জানিয়েছেন বেন স্টোকসেরা। সিরিজ়ে এগিয়ে থাকলেও অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে নারাজ অস্ট্রেলিয়া শিবির।

২৮ জুন, বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টে আঙুলের চোটের জন্য খেলতে পারবেন না মইন আলি। তাঁর পরিবর্ত হিসাবে ইংল্যান্ড দলে নিয়েছে জোরে বোলার জশ টাঙ্গকে। যদিও লর্ডসের উইকেটে তাঁর সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ইংল্যান্ড শিবিরেই। কিছুটা বাধ্য হয়েই তাঁকে দলে নিতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এক জনের অভাব অনুভব করছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। তিনি মার্ক উড। চোটের জন্য তাঁকেও পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। আইপিএলের পর থেকে তেমন খেলার মধ্যে নেই লখনউ সুপার জায়ান্টসের ক্রিকেটার।

দ্বিতীয় টেস্টের দলে কোনও বিশেষজ্ঞ স্পিনারকে রাখেনি ইংল্যান্ড। মনে করা হচ্ছে, লম্বা সময় ধরে বল করতে পারার জন্য টাঙ্গকে দলে নেওয়া হয়েছে। স্টোকস বলেছেন, ‘‘আমরা উডকে দলে চেয়েছিলাম। কিন্তু চোটের জন্য ও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। আশা করছি তৃতীয় টেস্টে আমরা উডকে পাব।’’ মইনের পরিবর্ত হিসাবে রেহান আহমেদকে দলের সঙ্গে যোগ দিতে বলা হয়েছিল গত শনিবার। তা হলে তাঁকে কেন দ্বিতীয় টেস্টের দলে রাখা হল না। স্টোকসের যুক্তি, ‘‘লর্ডসের ২২ গজ মন্থর গতির বোলারদের কখনও সাহায্য করে না সে ভাবে। সে জন্যই রাখা হয়নি।’’ অর্থাৎ অ্যাশেজে সমতা ফেরানোর জন্য জোরে বোলারদের উপর-ই নির্ভর করছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আরও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে চাইছেন তাঁরা। প্রয়োজন হলে জো রুটকে দিয়ে স্পিন করাবেন স্টোকসরা।

ইংল্যান্ডের বাজ়বল দর্শনের বিরুদ্ধে আক্রমণ-রক্ষণের ভারসাম্য রেখেই চলতে চান কামিন্সরা। রণনীতিতে পরিবর্তন করার পক্ষে নন সফরকারীরা। ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণে পরিবর্তন নিয়ে ওয়াকিবহাল অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। তাও তাঁদের দ্বিতীয় টেস্টের পরিকল্পনাতে রয়েছেন নাথান লায়ন। অজি অফ স্পিনার এক বিরল মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। লর্ডসে তিনি দেশের হয়ে টানা ১০০টি টেস্ট ম্যাচ খেলার নজির গড়বেন। অর্থাৎ, অস্ট্রেলিয়ার খেলা শেষ ১০০টি টেস্টের প্রথম একাদশে থাকবেন তিনি। এ নিয়ে কামিন্স বলেছেন, ‘‘লায়নের অধিনায়ক হওয়া খুব সহজ। দারুণ সুযোগও। ওকে দিয়ে উইকেটের এক প্রান্ত থেকে সারা দিন নিশ্চিন্তে বল করানো যায়। যে কোনও পরিবেশে বল করতে পারে। চার জন বোলার নিয়ে খেললেও ওকে স্বচ্ছন্দে দলে রাখা যায়। লায়ন খুবই নির্ভরযোগ্য। আরও উন্নতি করছে।’’ অস্ট্রেলিয়া প্রথম একাদশ বেছে নেবে বুধবার লর্ডসের ২২ গজ দেখার পর। দ্বিতীয় টেস্টে স্কট বোল্যান্ডের পরিবর্তে খেলতে পারেন মিচেল স্টার্ক। প্রথম টেস্টে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় থেকেও জয় ছিনিয়ে নেওয়া অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য লর্ডসে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া। অ্যাশেজের লড়াইয়ে রাশ আলগা করতে নারাজ কামিন্সরা।

কারণ অ্যাশেজ সিরিজ় ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার কাছে নিছক টেস্টের লড়াই নয়। জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদ পত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্‌’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুণরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।

সে সময় কয়েকজন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE