Advertisement
E-Paper

মাঠ দেখে না, বোলার দেখে না, ভয়ও পায় না! ১৪-র বৈভব সত‍্যিই ‘সূর্যবংশী’

সোমবার আইপিএলে শতরান করে হইচই ফেলে দিয়েছে বৈভব সূর্যবংশী। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তার শতরান দেখে কুর্নিশ করছে ক্রিকেটবিশ্ব। সেই বৈভব জানাল নিজের অনুভূতির কথা।

cricket

শতরানের পর বৈভব সূর্যবংশী। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৫০
Share
Save

অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘সূর্যবংশী’ সিনেমায় বীর সূর্যবংশী ছিলেন জঙ্গিদমন শাখার সাহসী, অকুতোভয় এক অফিসার। তাঁর একটাই কাজ ছিল, শত্রুপক্ষকে দেখলেই মেরে দাও, গুঁড়িয়ে দাও।

আইপিএলের বৈভব সূর্যবংশীও কম যায় না। সে পুলিশ অফিসার নয়, ক্রিকেটার। তার সামনে শত্রুপক্ষ থাকে না, বল থাকে। বৈভব মাঠ দেখে না, বোলার দেখে না, ভয়ও পায় না। বল পেলেই তার কাজ হল, ব্যাট চালাও, উড়িয়ে দাও।

ওয়াশিংটন সুন্দরের বলটা এক্সট্রা কভারের উপরের দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠানোর পর বাঁ হাত দিয়ে জার্সির পিঠে নিজের নামটা দেখাতে লাগল সে। ১১তম ওভারে রশিদ খানের বলটা মাঠের বাইরে পাঠিয়েই দে ছুট। হেলমেট খুলে দৌড় শুরু ডাগআউটের দিকে। শান্ত, ঠান্ডা মাথার বলে পরিচিত রাহুল দ্রাবিড়ও নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। হুইলচেয়ারে বসেছিলেন। বৈভবের শতরান দাঁড় করিয়ে দিল তাঁকেও। সেই সঙ্গে দাঁড় করাল সওয়াই মানসিংহ স্টেডিয়ামের ৩০ হাজার জনতাকে, যাঁরা হয়তো রাজস্থানের আর একটা হার দেখবেন ভেবেই খেলা দেখতে এসেছিলেন!

কোথাও কি বৈভবের উচ্ছ্বাস প্রকাশের ধরনে সুনীল গাওস্কর, বীরেন্দ্র সহবাগের প্রতি বার্তা ছিল? উত্তর আপাতত অজানাই। তবে আইপিএল পেয়ে গেল ১৪ বছরের এক প্রতিভাকে। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে তার আগ্রাসী ইনিংস নজর কেড়ে নিয়েছে গোটা ক্রিকেটবিশ্বের। মাঠে তাকে দেখে সাহসী, অকুতোভয় যোদ্ধার মতোই লাগছিল। ম্যাচের পর কথা বলতে এসে যেন পাশের বাড়ির ছেলে।

বৈভবের লড়াইটা এত দিন শুধু মাঠে নয়, ছিল মাঠের বাইরেও। মহানিলামের দিন এক কোটি টাকা পাওয়ার পর থেকেই যে সমালোচকেরা দাঁত-নখ বাগিয়ে তেড়ে এসেছিলেন, তাঁদের চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্য কিছু একটা দরকার ছিল। সোমবার সম্ভবত সেই অস্ত্রটা পেয়ে গেল বৈভব। বুঝিয়ে দিল, আইপিএলে দু’-এক ম্যাচের চমক নয়, সে এসেছে রাজত্ব করতেই।

ঠিক ন’দিন আগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বৈভব। ছয় মেরে শুরু হয়েছিল আইপিএল-যাত্রা। সে দিন ২০ বলে ৩৪ রানের ইনিংসে অনেকেই আগামীতে তার তারকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখেছিলেন। তা হঠাৎ করেই চুপসে যায় বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ব্যর্থ হওয়ার পর। গাওস্কর, সহবাগেরা কটাক্ষ করে বলে দেন, কোটিপতি হয়ে মাথা ঘুরে গিয়েছে। সেটা যে নিছকই কথার কথা, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে বৈভব।

এত নজির, এত সম্মানের পরেও ম্যাচের পর কথা বলতে এসে শান্ত বৈভব। বলল, “খুব ভাল লাগছে। আইপিএলে তৃতীয় ইনিংস খেলতে নেমে প্রথম শতরান। গত তিন-চার মাসে যে কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম তারই ফল এখন পাচ্ছি। আমি মাঠ বা বোলার দেখি না। স্রেফ বল দেখে খেলি।”

রাজস্থানের হয়ে তরুণ ক্রিকেটার হিসাবে এক সময় বিভিন্ন নজির রয়েছে যশস্বী জয়সওয়ালেরও। সেই যশস্বী এ দিন বৈভবকে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। উল্টো দিক থেকে তারিয়ে তারিয়ে দেখেছেন বল মাঠের বাইরে যাওয়ার দৃশ্য। অর্ধশতরান এবং শতরানের পর সতীর্থকে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন।

সেই যশস্বীকে নিয়ে বৈভব বলেছেন, “ওর সঙ্গে ব্যাট করলে একটা আলাদাই আত্মবিশ্বাস চলে আসে। সব সময় ইতিবাচক কথাবার্তা বলে। কখন কী করতে হবে, সেটা নিয়ে আমাকে পরামর্শ দিতেই থাকে। তাতে আমার ব্যাট করাটা আরও সহজ হয়ে যায়।”

সঞ্চালক মুরলী কার্তিক এর পরেই বৈভবকে অনুরোধ করেন নিজেকে চিমটি কেটে দেখতে। কারণ ১৪ বছরের এক জন ক্রিকেটার বড়দের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে শতরান করেছে। মঙ্গলবার সকালে উঠে তাঁর কেমন লাগবে? বৈভবের উত্তর, “আইপিএলে খেলা এবং শতরান করাটাই স্বপ্ন ছিল। এত দিন ধরে যে পরিশ্রম করছিলাম সেটাই কাজে লেগেছে। কোনও ভয় নেই আমার মধ্যে।”

Vaibhav Suryavanshi Rajasthan Royals

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}