Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Asia Cup 2023

হচ্ছে না ভারত-পাকিস্তান, বাবরদের হারিয়ে রবিবার এশিয়া কাপের ফাইনালে রোহিতদের সামনে শ্রীলঙ্কা

এশিয়া কাপের ফাইনালে হচ্ছে না ভারত-পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার কার্যত সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা। রবিবার কলম্বোতে ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নামবেন দাসুন শনাকারা।

Babar Azam

হতাশ বাবর আজ়ম। —ফাইল চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:০৫
Share: Save:

এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার কার্যত সেমিফাইনাল খেলা ছিল পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে। হিসাব পরিষ্কার ছিল। এই খেলায় যে জিতবে তারা রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলবে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টির জন্য খেলা কমে ৪২ ওভারে দাঁড়ায়। প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান করে পাকিস্তান। ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে ম্যাচ জিততে শ্রীলঙ্কারও দরকার ছিল ২৫২ রান। টান টান ম্যাচে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে শ্রীলঙ্কা। রবিবার কলম্বোর এই মাঠেই রোহিত শর্মাদের বিরুদ্ধে খেলতে নামবেন দাসুন শনাকারা।

খেলা শুরুর আগে বেশি কিছু ক্ষণ বৃষ্টি হওয়ায় টস হতে দেরি। প্রথমে খেলা কমে ৪৫ ওভার করা হয়। পরে আরও এক বার বৃষ্টি হওয়ায় ওভার কমে হয় ৪২। ভারতের বিরুদ্ধে হারের পরে দলে ছ’টি বদল করেছিল পাকিস্তান। তার মধ্যে চারটি বদল বাধ্য হয়ে করতে হয়েছিল। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাবর আজ়ম। পাকিস্তানের ওপেনার ফখর জমান এই ম্যাচেও রান পাননি। ৪ রান করে প্রমোদ মদুশনের বলে আউট হন তিনি। ইমাম উল হকের বদলে এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া আবদুল্লা শফিক ভাল খেলছিলেন। তাঁকে সঙ্গে দেন বাবর। কয়েকটি ভাল শট খেললেও বড় রান করতে পারেননি পাক অধিনায়ক। ২৯ রান করে দুনিথ ওয়েলালাগের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে স্টাম্প আউট হন তিনি।

শফিক ভাল খেলছিলেন। এক দিনের ক্রিকেটে নিজের প্রথম অর্ধশতরান করেন তিনি। কিন্তু তার পরেই মাথিশা পাথিরানার বলে আউট হন। মহম্মদ হ্যারিস ও মহম্মদ নওয়াজও রান পাননি। ১৩০ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের। সেখান থেকে দলের হাল সামলান রিজওয়ান ও ইফতিখার। জুটি গড়ার কাজ শুরু করেন তাঁরা। প্রথম দিকে ঝুঁকি নিচ্ছিলেন না। এক বার হাত জমে যাওয়ার পরে বড় শট খেলতে শুরু করেন। দায়িত্ব নিয়ে খেলেন রিজওয়ান। অর্ধশতরান করেন তিনি। পাক ব্যাটারদের পরিকল্পনা ছিল, প্রতি ওভারে একটি বা দু’টি বড় শট খেলার। বাকি বলগুলিতে দৌড়ে রান নিচ্ছিলেন তাঁরা। ফলে প্রতি ওভারেই ১০-১২ করে রান উঠছিল। শেষ দিকে ফিল্ডিংয়ে কিছু ভুল করে শ্রীলঙ্কা। তার ফায়দা তোলেন দুই ব্যাটার। ৪৭ রান করে আউট হন ইফতিখার। কিন্তু তত ক্ষণে লড়াই করার মতো রান হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের। শেষ পর্যন্ত ৪২ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান করে পাকিস্তান। ৮৬ রান করে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান।

দেখে মনে হচ্ছিল এই পিচে পাক বোলারদের সামলাতে সমস্যায় পড়বে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ভিত গড়ে দেন কুশল পেরেরা। এই ম্যাচে সুযোগ পেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন তিনি। প্রথম থেকেই চার মারার দিকে নজর দেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটারেরা। ভাল শুরু করেও শাদাব খানের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ১৭ রানে ফিরতে হয় পেরেরাকে। তৃতীয় উইকেটে কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন পাথুম নিশঙ্ক। ভাল খেলছিলেন দু’জনে। ঝুঁকি না নিয়ে উইকেট ধরে খেলছিলেন। পাকিস্তানকে আবার খেলায় ফেরান শাদাব। ২৯ রানের মাথায় নিজের বলে নিজেই নিশঙ্কের ক্যাচ ধরেন তিনি।

দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরলেও ঘাবড়ায়নি শ্রীলঙ্কা। বরং ঘরের মাঠে আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করে তারা। পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে হ্যারিস রউফ ও নাসিম শাহ না থাকায় কিছুটা সুবিধা হয় ব্যাটারদের। জামান খান, মহম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রদের গতি খুব বেশি না থাকায় শট খেলতে সমস্যা হচ্ছিল না। মেন্ডিস নিজের ধারাবাহিকতা আরও এক বার দেখান। তিনি বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। সঙ্গ দেন সাদিরা সমরবিক্রম।

শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটার জানতেন, উইকেট না পড়লে রক্ষণাত্মক হয়ে পড়বে পাকিস্তান। সেটাই করলেন তাঁরা। রান যত বাড়ল তত পাকিস্তান ঘাবড়ে গেল। সব রকম চেষ্টা করেন বাবর। কিন্তু উইকেট ফেলতে পারছিলেন না। শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটার তৃতীয় উইকেটে শতরানের জুটি বাঁধেন। খেলা ধীরে ধীরে পাকিস্তানের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই ইফতিখারকে বল দিয়ে ফাটকা খেলেন বাবর। সেটি কাজে লাগে। ৪৮ রানের মাথায় সমরবিক্রমকে আউট করেন তিনি।

শ্রীলঙ্কাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মেন্ডিস। শাহিন শাহ আফ্রিদির বল মাথায় লাগার পরেও ভয় পাননি তিনি। সাবলীল ব্যাট করছিলেন। বাবর জানতেন, মেন্ডিস শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়বেন। জয়ের জন্য রান যত কমছিল তত আত্মবিশ্বাস বাড়ছিল শ্রীলঙ্কার। প্রতিটি রানের পরে চিৎকার করছিলেন প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের কয়েক হাজার সমর্থক। চরিথ আসালঙ্ক নিজের কাজ করছিলেন। মেন্ডিসকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন। ৯১ রানের মাথায় ইফতিখারের বলে তাড়াতাড়ি শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মেন্ডিস। ভাল ক্যাচ ধরেন হ্যারিস।

মেন্ডিসের পরে ইফতিখারের বলে আউট হয়ে যান দাসুন শনাকাও। অধিনায়ককে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। প্রতিটি ডট বলের সঙ্গে চাপ বাড়ছিল। পাকিস্তানের প্রধান বোলারেরা যেখানে নজর কাড়তে পারলেন না সেখানে ভাল বল করলেন ইফতিখার। পাকিস্তানকে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে রাখেন তিনি। বিকল্প কমছিল বাবরের হাতে। ভাল খেলছিলেন আসালঙ্ক। শেষ ১৮ বলে জিততে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ২০ রান। শেষের আগের ওভারে বল করতে যান আফ্রিদি। ধনঞ্জয় ডি’সিলভাকে আউট করেন তিনি। পরের বলেই ফেরান ওয়েলালাগেকে। শেষ ওভারে জিততে দরকার ছিল ৮ রান। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। চাপের মধ্যে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন আসালঙ্ক। হতাশ হয়ে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিতে হল পাকিস্তানকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asia Cup 2023 Pakistan Cricket Sri Lanka Cricket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE