Advertisement
E-Paper

রাজনীতির ময়দান সামলে খেলার মাঠেও সোনা জয় প্রাক্তন বিধায়ক চুনীবালার

পঞ্চান্ন ছোঁয়া চুনীবালা সর্বভারতীয় ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) গোষ্ঠীর সভাপতি। দলের কাজে ছুটে বেড়াতে হয় বাংলা, ঝাড়খণ্ড, বিহারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৮
চ্যাম্পিয়ন: চুনীবালা হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র

চ্যাম্পিয়ন: চুনীবালা হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র

এক সময়ের ডাকাবুকো বিধায়ক। বিনপুর থেকে জিতেছেন দু’বার, ২০০০ আর ২০০৬ সালে। সেই চুনীবালা হাঁসদা এখন সোনাজয়ী অ্যাথলিট।

পঞ্চান্ন ছোঁয়া চুনীবালা সর্বভারতীয় ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) গোষ্ঠীর সভাপতি। দলের কাজে ছুটে বেড়াতে হয় বাংলা, ঝাড়খণ্ড, বিহারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তার মধ্যেই নিয়ম করে প্রতিদিন দৌড়ন, লাফান, জ্যাভলিন ছোড়েন। ছোটবেলায় অ্যাথলিট হওয়ার ইচ্ছে ছিল। সেই ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে প্রবীণদের টুর্নামেন্টে।

কী রকম?

এক বছর আগেই বাংলাদেশে এশীয় স্তরের পদক জিতে এসেছেন। দিল্লিতে জাতীয় স্তরে তিনটি সোনা জিতেছেন হাইজাম্প, লং জাম্প এবং জ্যাভলিন থ্রো-তে। কয়েক দিন আগে ইছাপুরে রাজ্য মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্সে অনূর্ধ্ব ৫৫ বিভাগে নেমে তিনটি সোনা (শটপাট, লং জাম্প ও ট্রিপল জাম্প) জিতে ফের চমকে দিয়েছেন। জেতার পর সাঁওতালি ভাষায় রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে মাতিয়ে দিয়েছেন প্রতিযোগিতা।

আরও পড়ুন: ম্যাকোর পরে রঞ্জিতে কোচবিহারের বাবুও

বিনপুর থেকে ফোনে বললেন, ‘‘আমার ঘরে এত পদক আছে যে, গুনে শেষ করতে পারবেন না। কিন্তু ইটালিতে মাস্টার্স অলিম্পিক্সে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হওয়াটা এখনও যন্ত্রণা দেয়। একটা আন্তর্জাতিক পদক পাওয়াই এখন লক্ষ্য আমার।’’ চুনীবালার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছিল, কোনও মিলখা সিংহ, পি টি ঊষা, জয়দীপ কর্মকার বা দীপা কর্মকার কথা বলছেন। অলিম্পিক্সে অল্পের জন্য চতুর্থ হয়েছিলেন ওই চার জনই। আর ইটালিতে মাস্টার্স অলিম্পিক্সের পোলভল্ট ইভেন্টে ২৭টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অল্পের জন্য ব্রোঞ্জ জিততে পারেননি চুনীবালাও।

সপ্তাহে দু’দিন নিয়ম করে ঝাড়খণ্ড স্টেডিয়ামে যান অনুশীলনে। ‘‘প্রতিদিন সকালে অন্তত দশ কিলোমিটার দৌড়ই। রাস্তার পাশে, বনের ভিতর দিয়ে। দু’দিন স্টেডিয়ামে যেতে হয় জ্যাভলিন থ্রো আর হাই জাম্প, লং জাম্প অনুশীলন করতে। ওগুলো তো রাস্তায় করা যায় না’’— চুনীবালার গলায় অদ্ভুত তৃপ্তি। গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘‘জানেন, হাইজাম্পে রেকর্ড আছে আমার। পাঁচ ফুট দু’ইঞ্চি লাফিয়েছিলাম।’’

আরও পড়ুন: সুদীপদের শিক্ষক এ বার সৌরভ

স্বামী নরেন হাঁসদার নামেই তাঁর দল। স্বামীর বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই জিতেছেন দু’বার। ২০১১-তে হেরে যান সিপিএমের কাছে। বিধায়ক থাকার সময়েই গিয়েছিলেন ইটালিতে। ২০০৭-এ। সে বার পদক আসেনি। এখন আবার পদকের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ‘‘তখন যে বিভাগে নেমেছিলাম, এখন নামতে হবে অন্য বিভাগে। কিন্তু যে ভাবে অনুশীলন করছি, আশা রাখছি পদক পাব।’’

বিধায়ক হওয়ার পরেও লক্ষ্মীরতন শুক্ল ক্লাব ক্রিকেটে খেলেছেন। বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাসও খেলেছেন মহমেডানে। ভাইচুং ভুটিয়া, রহিম নবিরা ভোটে দাঁড়ানোর পরেও মাঠে নেমেছেন। কিন্তু পঞ্চাশ পেরিয়ে বাংলার কোনও বিধায়ক আন্তর্জাতিক স্তরে তো বটেই, জাতীয় স্তরেও খেলেননি। চুনীবালা সে দিক থেকে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম।

ফের বিধায়ক পদ, না আন্তর্জাতিক পদক— কোনটা অগ্রাধিকার এখন? চুনীবালা চমকে দিয়ে জবাব দেন, ‘‘বিধায়ক তো করবে জনগণ। ওখানে আমার কোনও হাত নেই। কিন্তু পদক জয় নির্ভর করবে আমার চেষ্টা ও পরিশ্রমের উপর।’’

Chunibala Hansda চুনীবালা হাঁসদা Athletics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy