নেপালের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য সে দেশে আটকে পড়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। নেপালের সঙ্গে দু’টি প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়েছে বাংলাদেশ। কাঠমান্ডু থেকে ফেরার বিমান বাতিল হয়ে যাওয়ায় হোটেলেই বন্দি বাংলাদেশের ফুটবলারেরা। তবে বুধবার বিমানবন্দর খুলে দেওয়ায় দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আসন্ন এশিয়ান কাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বের প্রস্তুতি সারার জন্য গত ৩ সেপ্টেম্বর নেপালে খেলতে যায় বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। দ্বিতীয় ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে কাঠমান্ডুতে শুরু হয় তরুণদের আন্দোলন। ক্রমশ তা বাড়তে থাকে। ২৫ জনের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। গত দুই দিন ধরে কাঠমান্ডুর হোটেলে বন্দি হয়েই রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবলাররা।
কাঠমান্ডুর ক্রাউন ইম্পেরিয়াল হোটেলে রয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভকারীরা সেই হোটেলের গেট ভাঙচুর করেন, ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ এই খবর জানিয়েছে। জাতীয় দলের স্ট্রাইকার সুমন রেজা ওই সংবাদপত্রকে বলেছেন, ‘‘দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীরা টিম হোটেলের গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করে। কয়েক জন ভিতরে ঢোকারও চেষ্টা করে। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের বোঝালে তারা চলে যায়। এসব দেখে খুব ভয় করছিল।’’
আরও পড়ুন:
রাইট উইঙ্গার শাহরিয়ার ইমন বলেছেন, ‘‘আমরা ভাল আছি। তবে উৎকন্ঠায় আছি। বাইরের পরিস্থিতি ভাল নয়। এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে দেশে ফিরতে পারলেই হয়।’’ ডিফেন্ডার তাজ উদ্দিনও একই কথা বলেছেন ‘প্রথম আলো’-কে। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে এখানে থাকাটাই চিন্তার বিষয়।’’
অভিজ্ঞ ফুটবলার ইসা ফয়সাল জানিয়েছেন, তাঁদের হোটেলের পাশেই এক সাংসদের বাসভবন। ভাঙচুর হয়েছে সেখানেও। সেই ঘটনার বর্ণনা করে তিনি ‘প্রথম আলো’-কে বলেছেন, ‘‘সারা দিন আমাদের হোটেলের পাশে বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগ করেছে আন্দোলনকারীরা। পরে শুনলাম হোটেলের পাশে এক সাংসদ থাকেন। সেই কারণেই নাকি এখানকার পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত।’’
এবারই জাতীয় দলে প্রথম সুযোগ পেয়েছেন আবদুল্লাহ ওমর। কিন্তু খেলতে এসে যা দেখলেন, সেটা তাঁর কল্পনারও অতীত। তিনি বলেছেন ‘‘কল্পনায়ও ছিল না খেলতে এসে এমন কিছু দেখতে হবে।’’
তবে বুধবার বিকেলে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের ফুটবলারদের দেশে ফিরতে আর কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এখন বিশেষ বিমানের অপেক্ষায় বাংলাদেশ দল। নেপাল থেকে ‘প্রথম আলো’-কে দলের ম্যানেজার আমের খান জানিয়েছেন, ‘‘ঢাকা থেকে বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমান পাঠিয়ে আমাদের ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’