ভলিবল লিগ আয়োজন করতে নেপালে গিয়ে আটকে পড়েছেন উপাসনা গিল নামে এক ভারতীয়। উদ্ধারের আর্জি জানিয়ে সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেছেন তিনি। সাহায্য চেয়েছেন ভারতীয় দূতাবাসের। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েক জন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উপাসনা যে হোটেলে ছিলেন, মঙ্গলবার সেখানে হামলা চালান প্রতিবাদীরা। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচিয়ে কোনও রকমে হোটেল থেকে পালিয়ে এসেছেন। ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘আমি উপাসনা গিল। ভারতীয় দূতাবাসের কাছে আমরা সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছি। অন্য কেউ যদি আমাদের সাহায্য করতে পারেন, তাঁদেরও অনুরোধ করছি। এখন নেপালের পোখারায় আটকে রয়েছি।’’ ভিডিয়ো করার সময় কেঁদেও ফেলেছেন উপাসনা। তাঁর ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেছেন ব্যবসায়ী প্রফুল গর্গ।
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ভলিবল লিগ আয়োজন করতে নেপালে এসেছিলাম। যে হোটেলে ছিলাম, সেটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাগ এবং অন্য সব কিছু হোটেলের ঘরে রেখেই বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। হামলার সময় স্পা নিচ্ছিলাম। কিছু লোক লাঠি নিয়ে আমাকে তাড়া করেন। তখন পালিয়ে আসা ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ ছিল না।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদেরও ছাড় দিচ্ছেন না বিদ্রোহীরা। কারও কথা শুনছেন না। যাঁরা কোনও কাজে এসেছেন, তাঁদেরও ছাড়া হচ্ছে না। আপাতত একটা হোটেলে আছি। জানি না এখানে কত ক্ষণ নিরাপদে থাকতে পারব। তাই ভারতীয় দূতাবাসের কাছে সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছি। আমার সঙ্গে আরও কয়েক জন আছেন। দয়া করে এই ভিডিয়োটা শেয়ার করুন। যাতে দূতাবাসের আধিকারিকেরা আমাদের বিষয়টি জানতে পারেন। আমরা সকলে খুব বিপদের মধ্যে রয়েছি।’’
গত সপ্তাহে সমাজমাধ্যমের উপর নেপাল সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর প্রতিবাদে গত সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ওই দেশের ছাত্র-যুবরা। ওই বিক্ষোভে ১৯ জন বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু হয়। শেষে ছাত্র-যুবদের আন্দোলনের মুখে সোমবার রাতেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় নেপাল সরকার। কিন্তু এর পরেও বিদ্রোহ থামেনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের দাবিতে বিদ্রোহ আরও জোরালো হয়। একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এই বিদ্রোহের মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ওলি। কিন্তু বিক্ষোভ থামেনি। ওলির ইস্তফার পরেই সেনাবাহিনী একে একে দখল নেয় নেপালের জাতীয় সচিবালয় থেকে বিমানবন্দরের। রাস্তায় রাস্তায় টহলদারি শুরু করে তারা। বুধবার সকাল থেকে নেপালে বড় ধরনের কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও চলছে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ।