অভ্যর্থনা: চিকিৎসক দিবসে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে এসএসকেএমের অডিটোরিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এই হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টারেরও উদ্বোধন করেন তিনি। ছবি: সুমন বল্লভ
দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস বা এমস-এর আদলে রাজ্যেও সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে পরিষেবার ব্যবস্থা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালগুলিতে পরিকাঠামোর সুযোগ থাকলে উন্নয়নের খরচ তুলতে এই ধরনের সমান্তরাল ব্যবস্থা চালু করা উচিত।
সোমবার, চিকিৎসক দিবসে এসএসকেএম হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের সম্মানিত করে রাজ্য সরকার। সেখানে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আইটিইউ-সহ প্রায় ২৫০ শয্যার ট্রমা কেয়ার লেভেল ওয়ানেরও উদ্বোধন হল। সেই মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এমস-এ দেখবেন, বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়। আবার ওদের প্রাইভেট-নার্সিংহোম সিস্টেমও আছে। আমাদের এখানেও সরকারি হাসপাতালে যেখানে সুযোগ আছে, সেখানে প্রাইভেট-নার্সিংহোম টাইপ করলে...। যাঁরা নার্সিংহোমে গিয়ে খরচ দেন, তার থেকে অনেক কম খরচে...। সরকারি চিকিৎসকেরাই পরিষেবা দিলেন। কিন্তু রোগীরা পে করলেন, খরচ মেটালেন। উডবার্নে এই ধরনের কয়েকটা শয্যার বন্দোবস্ত হয়েছে। এসএসকেএমে এ-রকম আরও ১৫০ শয্যার ঘর হচ্ছে। আমি মনে করি, মেডিক্যাল কলেজ,
জেলা হাসপাতালের যেখানে জায়গা রয়েছে, সেখানে অথবা হাসপাতালগুলির লাগোয়া জায়গায় এটা করা উচিত।’’ এই ব্যবস্থায় যে-আয় হবে, তার ৭৫% হাসপাতালের উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বাকি ২৫% টাকা ‘ইনসেন্টিভ’ হিসেবে পাবেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা।
বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তাঁদের বক্তব্য, বিনামূল্যে চিকিৎসা চালু হওয়ার পরে অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালের খরচ জোগাতে সমস্যা হচ্ছে। তাই আয়ের পথ খুলে গেলে সুরাহাই হবে। তবে চিকিৎসক সমাজেরই একাংশের বক্তব্য,
সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সেবা মেলে বলে ধারণা তৈরি হয়েছে। সে-ক্ষেত্রে হাসপাতালেরই একটি বাড়িতে এই ধরনের আলাদা ব্যবস্থা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীতে ৯২৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে সরকারের। বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিতে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি। তা যাক!
মানুষ ভাল থাকুক।’’
এ দিন সাত জন চিকিৎসককে ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট’ এবং ৩০ জন চিকিৎসককে বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান প্রদান করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে রয়েছেন গৌতম মুখোপাধ্যায়, মামেন চান্ডি, তাপস রায়চৌধুরী, হৃষীকেশ কুমার, অরিন্দম কর-সহ ১১ জন চিকিৎসক। সম্মানিত সরকারি চিকিৎসকদের মধ্যে আছেন অরুণাভ সেনগুপ্ত, অলোকেন্দু ঘোষ, মাখনলাল সাহা, বিভূতি সাহা, প্লাবন মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ দাস, পরভিন বানু, সুচন্দ্রা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট’ প্রাপকেরা দু’লক্ষ, বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান প্রাপকেরা এক লক্ষ টাকা পাবেন। আগামী বছর থেকে সম্মানিত করা হবে নার্স, জুনিয়র ডাক্তারদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy