Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Rash mela

১০০ কোটি ছুঁইছুঁই এ বারের রাসমেলার বিক্রি!

এ বারে কোচবিহারের রাসমেলা ২০৬ বছরে পা দিয়েছে। প্রত্যেক বছরই মেলায় ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা হলেও বাড়ে।

মেলায় কেনাকাটা চলছে।—নিজস্ব চিত্র।

মেলায় কেনাকাটা চলছে।—নিজস্ব চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:৪০
Share: Save:

সকাল থেকেই থিকথিকে ভিড়। বেলা বাড়তেই যেন পা রাখার জায়গা নেই। তার প্রভাব দেখা গেল হিসেবেই। রবিবার কোচবিহার রাসমেলার শেষদিনে রেকর্ড বিক্রি হল। একদিনেই বিক্রি ছাড়ালো প্রায় ১০ কোটি টাকা। ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে এ বারে রাসমেলার বিক্রি ১০০ কোটি ছুঁইছুঁই। যা সর্বকালের রেকর্ড। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক বলেন, “১০০ কোটি টাকার মতো ব্যবসা হয়েছে। আমরা খুব খুশি।”

এ বারে কোচবিহারের রাসমেলা ২০৬ বছরে পা দিয়েছে। প্রত্যেক বছরই মেলায় ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা হলেও বাড়ে। গত বছরই যেমন পঞ্চাশ কোটি টাকার কাছাকাছি বিক্রি হয়েছিল। এ বারে প্রায় দ্বিগুণ! কিন্তু কীভাবে এক বছরে ব্যবসা দ্বিগুণ হয়ে গেল? ব্যবসায়ীদের কাছেই জানা গিয়েছে, ২২ নভেম্বর মেলা শুরু হয়। প্রথমদিনেই প্রায় আশি শতাংশ দোকানি তাঁদের পসরা নিয়ে হাজির হন। সেটাও সাহায্য করেছে।

মেলার পক্ষে পরিবেশও ছিল অনুকূল। শীত পড়ে গিয়েছে। প্রথমদিন থেকেই তাই ভিড় হতে শুরু করে মেলা। জামাকাপড়ের দোকান থেকে খাবার, হাতে তৈরি নানা জিনিস, ঘর সাজানোর সামগ্রী-সহ নানা জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছে দেদারে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এ বারে রাসমেলা প্রথমদিন থেকেই জমে উঠেছে। প্রচুর মানুষও ভিড় করে। তাই বিক্রি অনেক হয়েছে। মানুষ আনন্দ উপভোগ করতেও পেরেছেন।”

আরও পড়ুন: এনডিএ-তে ফাটল, জোট এবং মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন উপেন্দ্র কুশওয়া​

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রির টাকার হিসাব জানতে সিবিআই জেরা সুব্রত বক্সীকে​

এ বারে আড়াই হাজার স্টল বসেছিল মেলায়। এ ছাড়াও সার্কাস, নাগরদোলা, ড্রাগন ট্রেন, মিউজিক্যাল ড্যান্স-সহ বিনোদনের নানা জিনিস এসেছিল মেলায়। জামাকাপড়, খাবারের সঙ্গে আসবাবপত্র, কাঁসা-পিতলের বাসনপত্র, বিভিন্ন মূর্তি, কাপ-প্লেটের দোকান, হাতে তৈরি নানা জিনিসের দোকান বসেছিল। হাতে তৈরি ছোট ছোট রাসচক্র বিক্রি হয়েছে মেলায়। পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “মেলা খুব ভাল হয়েছে। ব্যবসাবাণিজ্য ভাল হয়েছে।”

বাংলাদেশ থেকেও মেলামাইন, শাড়ির পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল দোকানিরা। জামাকাপাড় ও খাবারের দোকানে বিক্রি সব থেকে বেশি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই দু’টি মিলিয়ে তিরিশ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৫-৭ কোটি টাকা বিক্রি হয়েছে বলে ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর। কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “এ বারে সর্বকালীন রেকর্ড বিক্রি হয়েছে। মেলা নিয়ে এ বার উদ্মাদনা ছিল দেখার মতো।”

কোচবিহারের রাসমেলা নিয়ে উন্মাদনা বরাবর। জেলা তো বটেই, বাইরের থেকে বহু মানুষও মেলা দেখতে এই সময় কোচবিহারে হাজির হন। কোচবিহারের বাসিন্দা চিত্রশিল্পী শ্রী হরি দত্ত বলেন, “মেলা আমাদের কাছে একটা অন্যরকম মুহূর্ত নিয়ে আসে। যার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। তাই শেষের দিন একটু মন খারাপ।” কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “মেলা ঘিরে উন্মাদনা ছিল শুরু থেকে, যা শেষদিন পর্যন্ত দেখেছি। আর নানা ধরনের দোকান বসেছিল মেলায়। তাই সবার নজর কেড়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Profits Rash Mela
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE