ছবি: রয়টার্স।
সন্ধ্যার মহানগর যেন মধ্যরাতের কলকাতা! সুনসান রাজপথ, নিস্তব্ধ জনপদ। সৌজন্য করোনা সতর্কতায় লকডাউন! শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জনপদেই সোমবার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে অনেক জায়গায় বিকেল ৫টার পরেও দোকান-বাজার খোলা ছিল। পুলিশ-প্রশাসন গিয়ে সেগুলি বন্ধ করেছে। সরকারি নির্দেশিকা যাতে নাগরিকেরা মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে কড়া হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন।
কলকাতায় সকাল থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও দোকানবাজার খোলা ছিল। ৫টার পরে পুলিশ পথে নেমে অত্যাবশ্যক পণ্য ছাড়া বাকি সব দোকান বন্ধ করে দেয়। গাড়ি ধরে গন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।
বিকেল ৫টায় লকডাউন নির্দেশ বলবৎ হওয়ার পরেও ক্যানিংয়ে খোলা ছিল জামাকাপড়, বই, সেলুন, চায়ের দোকান। পুলিশ সেগুলো বন্ধ করে দেয়। বিকেলে ডায়মন্ড হারবারে টহল দেয় পুলিশ-প্রশাসন। উত্তর ২৪ পরগনার অনেক জায়গায় পুলিশ গিয়ে দোকানপাট বন্ধ করেছে। সন্ধ্যায় বনগাঁর রাস্তা বাইকবাহিনী-মুক্ত করতে ধরপাকড় শুরু হয়। উদয়নারায়ণপুরে বিডিও অফিসের সামনে কয়েক জনকে তাস খেলতে দেখে বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। হুগলিতে বিকেল ৫টার পরে উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, ডানকুনি-সহ বিভিন্ন জায়গায় ‘মজা’ দেখতে এক শ্রেণির মানুষ রাস্তায় বেরোলে পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়।
আরও পড়ুন: তালাবন্দি কলকাতায় যান উধাও, ঠাঁই নেই সরকারি বাসেও
পশ্চিম বর্ধমানে ২৭ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বিকেল ৫টা বাজতে না-বাজতেই সব এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। পুলিশ গাড়িতে টহল দেয় ও মাইকে নিষেধাজ্ঞা প্রচার করে। আসানসোল-দুর্গাপুরে বিভিন্ন বেসরকারি কারখানা উৎপাদন বন্ধ করলেও ইস্কো-সহ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় কাজ হয়েছে। ইসিএল প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্য হিসেবে কয়লা উত্তোলন চালু রাখার অনুমতি চেয়েছে।
পুরুলিয়া জেলায় শুধু পুরুলিয়া শহরেই লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এ দিন দুপুরে জেলা প্রশাসন ঝালদা শহরেও লকডাউন ঘোষণা করে। সব এলাকাই বিকেল ৫টার পরে সুনসান হয়ে যায়। কাটোয়ায় কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। পুলিশ সেগুলি বন্ধ করে দেয়।
বিকেল ৫টার পরেও জেলা সদর তমলুক-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের লকডাউনের এলাকাগুলিতে রাস্তায় লোক ছিল। তমলুকের বড়বাজারে আনাজ ও মুদির দোকানে ভিড় ছিল। রাস্তায় টোটো ও বাইক দেখা গিয়েছে। হলদিয়া, কাঁথি শহর, দিঘাতেও পথে নেমেছিল টোটো। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘লকডাউনের পরে ভিড়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।’’ মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে সন্ধ্যা ৭টায় থিকথিকে ভিড় ছিল। তা দেখে অভিযানে নামে পুলিশ।
বিকেল ৫টার পরে জেলা সদর কৃষ্ণনগর প্রায় জনশূন্য হয়ে যায়। বিকেল থেকেই টহল দিতে শুরু করে পুলিশের বিশেষ দল। তবে নবদ্বীপে, রানাঘাটে সন্ধ্যার পরে পাড়ার রকে বা চায়ের দোকানে মানুষকে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে পুরোদমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy