ফাইল চিত্র
জনশূন্য মায়াপুরের ইস্কন মন্দির। অথচ দোলের আগে এই মায়াপুরেই পা দেওয়া যাচ্ছিল না। এমন জনশূন্য ইস্কন ভীষণ অচেনা আই লি সানের। দোলে মায়াপুর ইস্কনে এসে আটকে পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ওই বাসিন্দা। জানান স্বামী, সংসার ছেড়ে কয়েক মাস আগে একাই এসেছিলেন ভারতে। কথা ছিল দোল মিটলেই ফিরে যাবেন। দোল মিটেছে কিন্তু তাঁর অস্ট্রেলিয়া যাওয়া হয়নি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে আপাতত তিনি মায়াপুরেই আছেন। মনখারাপ নিয়ে সারাদিন কীর্তন আর জপতপ নিয়েই আছেন। প্রার্থনা করছেন। তবে তিনি নিজেও জানেন না ঠিক কবে দেশে ফেরার অনুমতি মিলবে।
দোতলা নাটমন্দিরে প্রবেশের দরজায় রং করার ফাঁকে নিজেদের মধ্যে গল্প করতে করতে হেসে গড়িয়ে পড়ছিলেন অনুত্তমা আর রাগলেখা। যদিও ওদের হাসাহাসির কারণ বোঝা দুঃসাধ্য! এক জনের বাড়ি ইউক্রেন আর এক জনের সাইবেরিয়া। নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন রাশিয়ান ভাষায়। এ ছাড়া আর কোনও ভাষা তাঁদের জানা নেই। শেষ পর্যন্ত আর এক ইংরেজি জানা রাশিয়ান ইন্দুলেখা দোভাষীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জানালেন ওঁদের হাসির কারণ হল দোলের দিন গ্রিলের ব্যবহার করা রং যদি লোকের মুখে মাখিয়ে দেওয়া হত তা হলে কী হত— তাই ভেবেই হাসির হররা।
নবদ্বীপের দক্ষিণ সীমায় অবস্থিত কেশবজি গৌড়ীয় মঠের বিদেশিরা এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছেন। করোনাভাইরাসের ভয়ে অনেকেই ত্রস্ত। বাড়ি ফিরতে না-পারায় কারও আবার মন খারাপ।
ঝরঝরে ইংরেজি বলেন রাশিয়ার কিরোভের বাসিন্দা ইন্দুলেখা দাসী। তিনি জানালেন, তিনি এবং তাঁর যমজ বোন ভাবিনী দু’জনেই কার্তিক মাস থেকে আছেন। প্রথমে ছিলেন বৃন্দাবনে। দোলের আগে এসেছেন নবদ্বীপে। জানালেন বাড়িতে মা আছেন। তাঁর নিজস্ব ব্যবসা আছে। মায়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘মা দুই বোনের জন্য চিন্তা করছে। আমরা মাকে বলেছি তুমি সাবধানে থাকো। আমাদের কোনও অসুবিধা নেই।”
রাশিয়ায় তৃতীয় বৃহত্তম শহর নোভাসিবিরক্সের বাসিন্দা ইন্দ্রাবলী নিজেই আলোপ্যাথ চিকিৎসক। আপাতত তিনি নবদ্বীপে। যদিও করোনাভাইরাস নিয়ে এত উদ্বেগের কারণ দেখছেন না। তবে মেয়ের জন্য বাড়ির লোকের প্রবল উদ্বেগ। যদিও ইন্দ্রাবলী মনে করেন, “এখনও ভারত অনেক নিরাপদ। বাড়িতে জানিয়েছি আমি নিরাপদে আছি। তোমরা বরং সাবধানে থাকো।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy