জয়িতা রায়
নিজে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামী অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথায় কাবু। এই অবস্থায় লকডাউনের মধ্যেই রোজ ভাড়া গাড়িতে চেপে প্রায় ৩৮ কিলোমিটার পার হয়ে ময়নাগুড়ি থেকে মালবাজার ব্লকের পূর্ব ডামডিম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান নার্সিং স্টাফ জয়িতা রায়। মঙ্গলবার নার্স দিবস শুনে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের তো সব দিনই সমান। এখন করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করে যেতেই হবে।’’
ছ’বছর আগে সরকারি কাজে যোগ দিয়েছিলেন জয়িতা। তার তিন বছর পরে, ২০১৭ সালে ভুটান সীমান্তের জয়গাঁ থেকে ডামডিমের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে বদলি হয়ে আসেন। তার পর থেকে ঝড়জল বা দুর্যোগ মাথায় নিয়েই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন, জানালেন তাঁর দফতরের লোকজনই। করোনা পরিস্থিতিতে শুধু মাস্ক, দস্তানা নিয়েই ওই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে কাজ করতে হচ্ছে। পিপিই দেওয়া হয়নি বলেই দাবি কেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের। জয়িতাও একই ভাবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী সুনীল রায় অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথায় ভুগছেন। অস্ত্রোপচার করা জরুরি। কিন্তু লকডাউনের ফলে তা সম্ভব হচ্ছে না। আমাকেও এই অবস্থায় কাজে যেতে হচ্ছে। চারদিকের যা পরিস্থিতি, উপায় তো নেই।’’ রোজ এ জন্য তাঁর গাড়ি ভাড়া বাবদ সাড়ে আটশো টাকা খরচ হচ্ছে বলেও জানান জয়িতা।
চার জন আশা কর্মীকে নিয়ে কাজ করেন জয়িতা। অন্তঃসত্ত্বা এবং যক্ষ্মা রোগীদের দেখভাল করতে হয় তাঁদের। মালবাজার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রিয়াঙ্কু জানা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডাক্তার, নার্সিং স্টাফ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ না দেখে মানুষের জন্য কাজ করছেন। জয়িতা অন্তঃসত্ত্বা হয়েও যে ভাবে কাজ করছেন, অবশ্যই তা অনুকরণ যোগ্য।’’
আরও পড়ুন: মা-মেয়ে-সহ মৃত্যু ৪ পরিযায়ী শ্রমিকের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy