ভিড়: এখনও সেই পরিস্থিতিই চলছে। নিজস্ব চিত্র
বনগাঁ মহকুমায় এই প্রথম এক ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। বাড়ি গাইঘাটা ব্লকের ইছাপুর ১ পঞ্চায়েত এলাকায়। তিনি প্রাক্তন সেনাকর্মী। বর্তমানে কলকাতা বন্দরে কর্মরত।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি দিন কয়েক আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনিও বন্দরে কাজ করতেন। গাইঘাটার ব্যক্তি তাঁর সঙ্গেই যাতায়াত করতেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, অশোকনগরের ব্যক্তির করোনাপজিটিভ জানতে পেরে বন্দর কর্তৃপক্ষকে ২৩ এপ্রিল বিষয়টি জানিয়ে গাইঘাটার ব্যক্তিকে কোয়রান্টাইন করতে বলা হয়। কলকাতায় তিনি সে দিন থেকেই কোয়রান্টিনে ছিলেন। ২৩ এপ্রিল শেষ বাড়িতে থেকেছিলেন। পরিবারের লোকজন এবং তিনি যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, সকলকেই ২৩ এপ্রিল থেকে হোম কোয়রান্টাইনে রাখা হয়েছিল। আক্রান্ত ব্যক্তি এখন কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এ দিকে, এই খবর জানার পরেও মানুষজনের মধ্যে তেমমন হেলদোল দেখা যায়নি। রবিবার মহকুমা জুড়ে চলল লকডাউন ভেঙে অকারণ যাতায়াত। বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা, গোপালনগর থানা এলাকায় এ দিন সকাল থেকে মানুষের ভিড় চোখে পড়েছে। সাইকেল, ভ্যান, বাইক, টোটো, ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি দেদার চোখে পড়েছে। বাইকে তিনজন সওয়ারিও দেখা গিয়েছে। ভ্যানে পাশাপাশি চারজন বসেছেন। অনেকেরই মুখে মাস্ক পরা ছিল না। পুলিশি ধরপাকড় কার্যত চোখে পড়েনি।
বনগাঁর এক ব্যক্তি চায়ের দোকানে আড্ডা মারছিলেন। প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘‘আমাদের এখানে তো ধরা পড়েনি। তাই পথে বেরিয়েছি। এখনই বাড়ি ফিরে যাব।’’ এলাকার সচেতন মানুষের বক্তব্য, প্রয়োজনে মানুষ অবশ্যই পথে বের হবেন। বাজার হাটে যাবেন। কিন্তু অকারণ রাস্তায় বেরনো মানুষের সংখ্যার উপরে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ আনা যাচ্ছে না। পুলিশি নজরদারি আগের থেকে কমে গিয়েছে বলে অনেকেই জানাচ্ছেন। যদিও পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নিয়মিত নজরদারি ধরপাকড় চলছে। লকডাউন ভাঙলে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ দিন সকালে গাইঘাটা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এলাকায় করোনা ধরা পড়েও মানুষের তেমন একটা হুঁশ ফেরেনি। পথেঘাটে ভিড় রয়েছে। তবে পুলিশ-প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা রবিবার গাইঘাটা বিডিও অফিসে জরুরি বৈঠক করেন। মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব বৈঠকে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির করোনা আক্রান্তের রিপোর্ট পজ়িটিভ পাওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে (২৩ এপ্রিল) পরিবারের সকলকে হোম কোয়রান্টাইন করা হয়েছে। রবিবার ওই ব্যক্তির বাড়ির এলাকায় জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। সংলগ্ন ২৫৮টি পরিবারকে কোয়রান্টিন জোনে রাখা হয়েছে।’’ গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ধ্যানেশনারায়ণ গুহ বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্তের বাড়ি যে সংসদ এলাকায়, সেই এলাকা পুরো ঘিরে দেওয়া হয়েছে। গাইঘাটা বাজার ও শ্রীপুর বাজার অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’ মহকুমাশাসক জানান, সব রকম সর্তকতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে মানুষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy