Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus In West Bengal

মৃত্যুতে লাগাম দিতে বাড়িতে ফোন রাজ্যের

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থেকে উৎসবের মরসুমে সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলিতে দু’হাজারের বেশি শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

চিকিৎসা সংক্রান্ত সহযোগিতা পেতে বাড়িতে থাকা করোনা রোগীরাই এত দিন স্বাস্থ্য দফতরের টেলি-পরিষেবায় যোগাযোগ করতেন। সেই বন্দোবস্তের পাশাপাশি এ বার তাঁদের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ করবে স্বাস্থ্য ভবনও। বুধবার প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের বৈঠকে এই পদ্ধতিই চূড়ান্ত হয়েছে। সংক্রমণ যথাসম্ভব ঠেকানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুহার কমানো সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের ব্যবস্থাপনায় বদল আনা হল।

রাজ্য সরকার অনেক আগেই উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসার ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু ঠিক কখন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে, রোগীদের অনেকেই তা বুঝে উঠতে পারেন না বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অন্য রোগব্যাধি আছে, এমন রোগীদের শারীরিক অবস্থার আচমকা অবনতি হলে যখন তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছন, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। এটি মৃত্যুহার বেশি হওয়ার অন্যতম বড় কারণ বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাই স্থির হয়েছে, এক দিন অন্তর বাড়িতে থাকা রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে স্বাস্থ্য দফতর। ফোন এবং এসএমএসের মাধ্যমে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হবে প্রত্যেকের। রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য ভবন। উপসর্গযুক্ত যে-সব করোনা রোগী বাড়িতে চিকিৎসা করাচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা চালু থাকবে।

“পাঁচ সপ্তাহ ধরে রাজ্যে মৃত্যুহার হ্রাসের ইঙ্গিত মিলছে। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম সপ্তাহ ধরলে তখন মৃত্যুহার ছিল ১.৮৭%। পরের সপ্তাহ থেকে তা ধাপে ধাপে কমে হয়েছে ১.৪৮%। এটা বজায় রাখা প্রয়োজন। রোগীদের উপরে নজরদারির নতুন পদ্ধতি এবং স্থানীয় ডাক্তারদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৃত্যুহার আরও কমানো সম্ভব,” বলেন সরকারের এক শীর্ষ কর্তা। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, বাড়িতে থাকা রোগীদের অনেকেই স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শের উপরে নির্ভর করেন। সেই সব ডাক্তারের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ থাকলে চিকিৎসা আরও সুসংহত হবে। যাঁরা পাড়ার ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেবেন, তাঁদের কোভিড চিকিৎসার প্রশিক্ষণ আগামী শনিবার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। প্রশ্নোত্তরের ধাঁচে সব চিকিৎসা-তথ্য স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন: মর্গে দেহ, কর্মী-মৃত্যু, প্রতিবাদ বিজেপির

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থেকে উৎসবের মরসুমে সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলিতে দু’হাজারের বেশি শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। এ বার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেও ২০০টি শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন সিটি স্ক্যান পরিষেবাও মিলবে সেখানে। অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আইডি, মেডিক্যাল কলেজ এবং এমআর বাঙুরে লিকুইড অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: উৎসবের ফাঁকেই এ বার পথে বামেরা​

এত দিন আশাকর্মীরা জেলাগুলিতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে রোগবালাই সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেন। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আশাকর্মী ছাড়াও ১০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক কোটি সদস্যকে এই কাজে লাগানো হবে। মাস্ক পরা, হাত জীবাণুমুক্ত রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধিও প্রচার করবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE