Advertisement
০২ মে ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

ভেন্টিলেটরের বিকল্প যন্ত্র তৈরি, দাবি এনআইটি-র

প্রচলিত ‘ভেন্টিলেটর’-এর আপৎকালীন বিকল্প হতে পারে এই যন্ত্র, দাবি এনআইটি-র (দুর্গাপুর) ডিরেক্টর অনুপম বসুর। যন্ত্রটির নাম রাখা হয়েছে ‘প্রাণেশ’।

‘প্রাণেশ’, এই যন্ত্রটিই তৈরি করেছে এনআইটি। নিজস্ব চিত্র

‘প্রাণেশ’, এই যন্ত্রটিই তৈরি করেছে এনআইটি। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০০:০২
Share: Save:

করোনা-পরিস্থিতিতে প্রচলিত ‘ভেন্টিলেটর’ যন্ত্রের বিকল্প হিসেবে ‘সেমি অটোমেটিক অ্যাম্বু-ব্যাগ ভেন্টিলেশন সিস্টেম’ নামে একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)। প্রচলিত ‘ভেন্টিলেটর’-এর আপৎকালীন বিকল্প হতে পারে এই যন্ত্র, দাবি এনআইটি-র (দুর্গাপুর) ডিরেক্টর অনুপম বসুর। যন্ত্রটির নাম রাখা হয়েছে ‘প্রাণেশ’।

অনুপমবাবু জানান, চিকিৎসকদের নজরদারিতে সহজে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে। যন্ত্রের দু’কেজি ওজনের ‘প্রোটোটাইপ’টির পরীক্ষার কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ফল সন্তোষজনক বলে চিকিৎসকেরা তাঁদের জানিয়েছেন। যন্ত্রটি আইসিইউ-তে প্রতিটি শয্যার সঙ্গে বা অ্যাম্বুল্যান্সে লাগিয়ে রাখা যাবে।

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘চিকিৎসা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে সাধারণত ‘পেটেন্ট’ থাকলে, আমরা তা নির্ভরযোগ্য হিসেবে দেখি। তবে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে, নতুন যন্ত্রের প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি শিথিল করার ভাবনা-চিন্তা করতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা।’’

এনআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক নির্মলবরণ হুই, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক নীলাঞ্জন চট্টরাজ ও সিটি সেন্টারের নিউরো সার্জেন হার্দিক রাজ্যগুরু এই যন্ত্রটি তৈরি করেছেন।

অনুপমবাবুর দাবি, ইতিমধ্যে ডাক্তারেরা যন্ত্রটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখছেন। বিভিন্ন ধরনের রোগীর চিকিৎসায় দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারে যন্ত্রটির আসল উপযোগিতা প্রমাণিত হবে। তাঁর সংযোজন: ‘‘করোনা- পরিস্থিতিতে আপৎকালীন অবস্থায় এই যন্ত্র প্রচলিত ভেন্টিলেশনের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়ে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা মিললে ভাল হয়।’’ এনআইটি সূত্রে জানা যায়, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

কিন্তু ভেন্টিলেটরের আপৎকালীন বিকল্প হিসেবে কেন এটিকে ভাবা হচ্ছে?

শ্বাসকষ্টের সমস্যায় প্রচলিত ভেন্টিলেটরের ক্ষেত্রে ‘ভাল্‌ভ মাস্ক’ বা ‘অ্যাম্বু-ব্যাগ’ দিয়ে রোগীদের ‘পজ়িটিভ প্রেসার ভেন্টিলেশন’-এর ব্যবস্থা করা হয়। এই পদ্ধতিতে রোগীর মুখে ‘মাস্ক’ পরানো থাকে। ‘অ্যাম্বু-ব্যাগ’-এ চাপ দিয়ে মিনিটে ১২ থেকে ১৬ বার শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর কোনও দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ব্যাগে চাপ দিতে থাকেন, যাতে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাত্রা ঠিক থাকে।

কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রান্ত আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীর সংখ্যা বাড়লে, রোগী পিছু এক জন করে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী রাখা সম্ভব হবে না। তা ছাড়া, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের থেকে সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সে জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরও যতটা সম্ভব নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। ‘প্রাণেশ’-এর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীর কাজটি অর্থাৎ, প্রতি মিনিটে ‘অ্যাম্বু ব্যাগ’-এ কত বার চাপ পড়বে, কত জোরে চাপ দিতে হবে— সব নিয়ন্ত্রিত হবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে, জানান এনআইটি কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, এই যন্ত্রের দৌলতে সাধারণ মানুষ কম খরচে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 NIT
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE