প্রতীকী ছবি।
হাওড়া জেলা হাসপাতাল দিয়ে শুরু হয়েছিল। ক্রমেই সেই ঘটনাক্রম গঙ্গার এ পারেও ছড়িয়ে পড়েছে। রোগী যে করোনার শিকার হতে পারেন সেই আন্দাজ পেতে দেরি হচ্ছে। করোনা-পরীক্ষার জন্য নমুনা যখন পাঠানো হচ্ছে, তত ক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠাতে হচ্ছে কোয়রান্টিনে। কেউ কেউ আক্রান্তও হচ্ছেন। ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। এনআরএস, আরজিকর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, পার্ক সার্কাস, চিনার পার্ক সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতাল— তালিকা দীর্ঘ।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রোগী চিনতে দেরি হচ্ছে কেন? আর বিধি অনুযায়ী, একটি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের কয়েক জন বা বড় অংশ দু’সপ্তাহ কোয়রান্টিনে গেলে ভাইরাসের সঙ্গে লড়বে কে? এই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশিকায় জানিয়েছে, সরকারি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের থেকে করোনা রোগীকে আলাদা করতে কী ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান বিভূতি সাহার বক্তব্য, কোনও একটি কারণ দিয়ে এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, নোভেল করোনাভাইরাস নতুন রোগ। ফলে এই রোগের প্রকৃতি সম্পর্কে খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই। সামাজিক বিড়ম্বনা-সহ নানা কারণে রোগীর পরিজনদের মধ্যেও তথ্য গোপনের প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে বলে মত তাঁর। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের দ্রুত মুক্তিরই ইঙ্গিত মমতার
আরও পড়ুন: ‘মুখ ঢাকাই ক্রমশ হয়ে উঠুক শহুরে সংস্কৃতির অঙ্গ’
বেসরকারি হাসপাতালের বক্ষ রোগের চিকিৎসক রাজা ধরের বক্তব্য, রোগ ধরার ক্ষেত্রে সমস্যা নেই। কিন্তু রোগীরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেরি করে হাসপাতালে পৌঁছচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘লকডাউনে অনেক বয়স্ক লোক চেয়েও হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছতে পারছেন না। আবার হাসপাতালে গেলে যদি কোভিড ধরা পড়ে, সেই ভয়ে অনেকে আসছেন না। নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত রিপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়ার প্রশ্নেও জটিলতা রয়েছে।’’ বক্ষ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এখন যা অবস্থা, সামান্যতম সন্দেহ হলেই রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা উচিত। সেটা বোধহয় হচ্ছে না।’’
রাজ্যের করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য বিভূতিবাবুর কথায়, ‘‘এই রোগের ক্ষেত্রে কেউ বিশেষজ্ঞ নন। ইন্টার্ন, হাউসস্টাফ, পিজিটি, প্রফেসর সকলেই প্রথম রোগটাকে দেখছেন। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিভিন্ন স্তরে টিচিং, ট্রেনিং হচ্ছে। যাঁরা একটু এগোচ্ছেন, তাঁরা অন্যদের সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছেন।’’ যদিও এক সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘জ্বর, সর্দি, শুকনো কাশি এবং শ্বাসকষ্ট—নির্ধারিত এই চারটি লক্ষণ দেখে করোনা রোগী চিহ্নিত করা হচ্ছে। কিন্তু কোনও সময় একটি বা দু’টি উপসর্গ থাকতে পারে। সেটা মাথায় রাখা হচ্ছে না বলেই স্ক্রিনিংয়ে সমস্যা থেকে যাচ্ছে।’’
এই পরিস্থিতিতে আরজিকরের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক জ্যোতির্ময় পালের পরামর্শ, ‘‘জ্বর, সর্দি, কাশি হলে সরকারি হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিকে আসুন। মনে হতে পারে, এ তো প্রতি বছরই হয়। কিন্তু এ সময় ফিভার ক্লিনিকের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা বুদ্ধিমানের কাজ।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy