Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

সর্বনাশ হয়ে গেল, দুটো জেলা ধ্বংস, বললেন মমতা, বাড়ছে মৃত্যুর খবরও

কমপক্ষে ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে বলেও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্নে মমতা মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়। ছবি টুইটার থেকে সংগৃহীত।

নবান্নে মমতা মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়। ছবি টুইটার থেকে সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ২১:১১
Share: Save:

‘‘রাজ্যের সর্বনাশ হয়ে গেল’’, দুই ২৪ পরগনায় আমপানের তাণ্ডবলীলা নিয়ে বলতে বসে বার বার এই কথাটাই বেরিয়ে আসছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সুন্দরবনে আছড়ে পড়ার পর দক্ষিণে তাণ্ডব চালিয়ে যখন উত্তর ২৪ পরগনায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়, সেইসময় রাত ৯টা নাগাদ নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। শুরুতেই বলেন, ‘‘দুই ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে...বাড়িঘর, নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে, ক্ষেত ভেসে গিয়েছে।’’ তখনও পর্য়ন্ত ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে নবান্নে, জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করার পর আরও কয়েক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে।

সারাদিনই নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে ঝড়ের গতিপ্রকৃতিক খোঁজখবর রাখছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, বাসন্তী, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড় থেকে যা খবর এসেছে তা ভয়াবহ। খারাপ খবর উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও। তবে ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত সবিস্তার তথ্য পেতে ৩-৪ দিন লেগে যাবে বলে জানান তিনি।

একদিনের মধ্যেও ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছিলেন, তই ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা ঠেকানো গিয়েছিল বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার পর এলাকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সাহায্যে ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছি। ১৭৩৭ এ এমন ভয়ঙ্কর ঝড় হয়েছিল। ওয়ার রুমে বসে আছি আমি। নবান্নে আমার অফিস কাঁপছে। একটা কঠিন পরিস্থিতির যুদ্ধকালীন মোকাবিলা করলাম। মাঝরাত অবধি হয়ত ঝঞ্ঝা চলবে।’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নন্দীগ্রাম ও রামনগর-সহ একাধিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম, রামনগর প্রভৃতি এলাকায় বড় ক্ষতি। দঃ ও উত্তর ২৪ পরগণা প্রায় ধ্বংস ঝড়ের দাপটে। গাছ পড়ে মানুষ মারা গেছেন। মোট ক্ষতি এখনও গণনা করা যায়নি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা, হাবড়া সব জায়গাই বিপর্যস্ত।’’

নবান্নের এই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কী কী বললেন, দেখে নিন এক নজরে—

• দক্ষিণবঙ্গ প্রায় ৯৯ শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছে: মমতা

• একটা ডিজাস্টার হয়েছে, আমরা শকড: মমতা

• আমরা খুবই স্তম্ভিত, খুব খারাপ লাগছে: মমতা

• পাথরপ্রতিমা, নামাখানা, বাসন্তী কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড় সব গিয়েছে: মমতা

• আফটার শক তো থাকেই, ফলে এখনই সব মিটছে না, চলবে এটা মাঝরাত পর্যন্ত: মমতা

• কেন্দ্রের কাছে আবেদন থাকবে, পলিটিক্যালি দেখবেন না, মানবিক ভাবে দেখুন: মমতা

• পাঁচ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছি: মমতা

• বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, পুকুর, চাষের জমি সব শেষ: মমতা

• রামনগর, নন্দীগ্রামে ক্ষতি হয়েছে: মমতা

• ব্যারাকপুর, বসিরহাট, বারাসত, বনগাঁ মহকুমা পুরো গিয়েছে, পুরো সুন্দরবন, গঙ্গাসাগর— সব গিয়েছে। হাওড়ার অবস্থা খারাপ: মমতা

• ধ্বংসের হাত থেকে উন্নয়নের পথে আবার সবাইকে শামিল করে একসঙ্গে কাজ করব: মমতা

• দিঘাতে তেমন বেশি হিট করেনি, রাজারহাট, হাসনাবাদ, গোসাবা, সন্দেশখালি, বনগাঁ, বাগদা, হাবড়া— সব সব, চার দিকে সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে: মমতা

• উই ক্যান ওভারকাম দ্য ডিজাস্টার, উইথ ইয়োর ব্লেসিংস অ্যান্ড উইথ ইওর সাপোর্ট: মমতা

• দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে: মমতা

• আমাদের অফিসের অর্ধেক ভেঙে গিয়েছে: মমতা

• কয়েক হাজার টাকার ক্ষতি হয়ে গেল, লাখও ছাড়াতে পারে: মমতা

• কত যে বাড়ি, নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে, খেত থেকে সব সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে: মমতা

• সংখ্যাটা এখনই বলা যাবে না, ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি: মমতা

• বনগাঁ-হাবড়ায় এখনও তাণ্ডব চলছে: মমতা

• নদীমাতৃক রাজ্য আমাদের, সব জায়গা জলে একাকার: মমতা

• ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে যাঁরা রিলিফ ক্যাম্পে রয়েছেন, তাঁদের আগে দেখা কর্তব্য: মমতা

• গোটা ধ্বংসের চিত্র বুঝতে ১০-১২ দিন লেগে যাবে, এক দিনে কিচ্ছু হবে না: মমতা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE